ঝিনাইদহে অগ্রণী ব্যাংক থেকে এবার ৭ লাখ টাকা উত্তোলন প্রতারকচক্রের

এখন সময়: শনিবার, ২০ এপ্রিল , ২০২৪, ০৬:০১:৪২ পিএম

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: শৈলকুপার জনতা ব্যাংকের পর এবার ঝিনাইদহ শহরের হামদহ অগ্রণী ব্যাংকের শাখা থেকে জাল কাগজ তৈরী করে প্রতারক চক্র রেমিটেন্সের প্রায় ৭ লাখ টাকা উত্তোলন করে চম্পট দিয়েছে। এ নিয়ে রোববার ব্যাংক পাড়ায় তোলপাড় শুরু হয়। প্রতারক চক্রকে ধরতে মাঠে নেমেছে পুলিশ। জাল ভোটার আইডি তৈরীর দায়ে শহরের সমবায় মার্কেটের মোল্লা কম্পিউটার থেকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুইজনকে নিয়ে গেছে পুলিশ। জব্দ করা হয়েছে একটি কম্পিউটার। খবরের সত্যতা স্বীকার করেছেন অগ্রণী ব্যাংকের ডিজিএম মানস কুমার পাল। পুলিশ ও ব্যাংকের সিসিটিভি ফুটেজ সূত্রে জানা গেছে, রোববার সকালে একদল প্রতারক জাল ভোটার আইডি ও রেমিটেন্সের কাগজ নিয়ে অগ্রণী ব্যাংক হামদহ শাখায় প্রবেশ করে। তারা একে একে রেমিটেন্স অফিসারের কাছ থেকে কাগজপত্র সাক্ষর করিয়ে ক্যাশ থেকে ৬ লাখ ৮২ হাজার ৮৫৫ টাকা তুলে নেয়। ৭টি ভোটার আইডির বিপরীতে এই টাকা প্রদান করা হয়। ভোটার আইডি ও ব্যাংক ম্যানজার আরিফ উদ্দীনের সাক্ষর জাল করা হয়। জাল সাক্ষরে কিভাবে রেমিটেন্সের টাকা প্রদান করা হলো এ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। জাল ভোটার আইডির মালিকরা হলেন, ঝিনাইদহ পৌর এলাকার ছোট কামারকুন্ডু গ্রামের আব্দুল্লাহ ছেলে মিজান, একই গ্রামের সাহাবুদ্দীনের ছেলে আজাদ, আব্দুল মালেকের ছেলে আবুল, ষাটবাড়িয়ার মানিক মিয়ার ছেলে মহশীন, একই গ্রামের আব্দুল কাদেরের ছেলে আলমগীর, জয়নাল আবেদীনের ছেলে হাসান ও লেহাজ উদ্দীনের ছেলে আশরাফ উদ্দীন। খবর পেয়ে ঝিনাইদহ সদর থানার এসআই সিরাজুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং ঝিনাইদহ শহরের সমবায় মার্কেটের মোল্লা কম্পিউটারে অভিযান চালিয়ে দুইজন আটক ও একটি কম্পিউটার জব্দ করেন। ব্যাংক কর্মকর্তাদের অভিযোগ, মোল্লা কম্পিউটার থেকে এই জাল ভোটার আইডি তৈরী করা হয়। পবহাটী ভটিয়ারগাতি এলাকার জনৈক যুবক এই জাল ভোটার আইডি তৈরী করে থাকেন বলে অভিযোগ করেছেন ব্যাংক কর্মকর্তারা। এ বিষয়ে ঝিনাইদহ শহরের হামদহ অগ্রণীব্যাংক শাখার ম্যানেজার আরিফ উদ্দীন বলেন, আমি কিছুক্ষণের জন্য আঞ্চলিক অফিসে গেলে এই সুযোগে তারা জাল কাগজপত্র এমনকি আমার এবং ব্যাংকের রেমিটেন্স অফিসার আব্দুল মান্নানের স্বাক্ষর জাল করে টাকা তুলে নিয়ে চম্পট দেয়। তিনি বলেন এ বিষয়ে আমরা সিসিটিভির ফুটেজ পুলিশকে দিয়েছি। প্রাথমিক ভাবে ক্যাশ অফিসার সাইফুলকে দায়ী করে তার কাছ থেকে এই টাকা রিকোভারি করে ব্যাংকে জমা দেয়া হয়েছে। ক্যাশ অফিসার সাইফুল ইসলাম বাদী হয়ে সদর থানায় মামলা করবেন বলেও ম্যানেজার আরিফ উদ্দীন জানান।

 

ঝিনাইদহ সদর থানার এসআই সিরাজুল ইসলাম জানান, তদন্তের স্বার্থে এখন কিছুই বলা যাচ্ছে না। আমরা প্রতারক চক্রকে শনাক্ত করে গ্রেফতারের চেষ্টা করছি।

উল্লেখ্য দেশব্যাপী ব্যাংকগুলোতে জাল কাগজপত্র তৈরী করে টাকা উত্তোলনের ঘটনা বৃদ্ধি পেলেও ঝিনাইদহ অগ্রণীব্যাংক হামদহ শাখায় বাড়তি কোনো সতর্কতা ছিল না বলে গ্রাহকরা অভিযোগ করেছেন। এর আগে গত ৮ জুন জনতাব্যাংক শৈলকুপা শাখা থেকে প্রতারণা করে চার লক্ষাধিক টাকা নিয়ে উধাও হয় প্রতারক চক্র। এ ঘটনায় সুমী বেগম নামে এক মহিলা প্রতারককে আটক করে পুলিশ। আটককৃত সুমি বেগম খুলনার তেরখাদা উপজেলার নলিয়ারচর ইউনিয়নের বলরধনা গ্রামের কামাল হোসেনের স্ত্রী।