যশোরে ভুল অপারেশনের অভিযোগে নারী চিকিৎসকের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা

এখন সময়: মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল , ২০২৪, ০৪:৪১:২৮ এম

 

নিজস্ব প্রতিবেদক: ভুল অপারেশনের অভিযোগে যশোর ইউনিক হসপিটাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের স্ত্রী ও প্রসূতি রোগ বিশেষজ্ঞ ডাক্তার শাহানাজ পারভীনসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে। সোমবার সদরের বিজয়নগর গ্রামের জামান মোল্লার ছেলে মাহাবুর মোল্যার বাদী হয়ে এ মামলা করেছেন। সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ইমরান আহম্মেদ অভিযোগের তদন্ত করে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ককে প্রতিবেদন জমা দেয়ার আদেশ দিয়েছেন।

অপর আসামিরা হলো, ইউনিক হসপিটাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের  ফিল্ড অফিসার রেখা খাতুন এবং সদরের ডাকাতিয়া গ্রামের লাভলুর স্ত্রী শাহানাজ।

মামলার অভিযোগে জানা গেছে, ২০২৩ সালের ২৭ ডিসেম্বর মাহাবুব মোল্যার বোন সুফিয়া খাতুন পেটের ব্যাথায় অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে যশোর শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ডাক্তার ইলাম মন্ডলের কাছে যান। এ সময় ডা. ইলা মন্ডল তার বোনের আল্ট্রাসনোগ্রাম করিয়ে জানান, সুফিয়া খাতুনের জরায়ুতে টিউমার হয়েছে এবং অপারেশনের মাধ্যমে অপসারণ করতে হবে। এ কথা শুনে তারা তার বোনকে বাড়িতে নিয়ে যান। তখন তাদের পূর্ব পরিচিত শাহানাজ তাদেরকে ইউনিক হসপিটাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে সুফিয়া খাতুনকে নিয়ে অপারেশন করানোর পরামর্শ দেন। শাহানাজের পরামর্শে গত ২ জানুয়ারি তারা সুফিয়া খাতুনকে নিয়ে ইউনিক হসপিটাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে গেলে ফিল্ড অফিসার রেখা খাতুন ভালোভাবে অপারেশন করে দেওয়ার আশ্বাস দেন। এরপর তারা ওই হসপিটালের ডাক্তার শাহানাজ পারভীনের কাছে গেলে তিনিও তাদেরকে জানান, সুফিয়া খাতুনের জরায়ুকে টিউমার হয়েছে। অপারেশন করতে ৭০ হাজার টাকা লাগবে। পরদিন তারা অপারেশনের জন্য ফিল্ড অফিসার রেখা খাতুনকে ৭০ হাজার টাকা দেন। ওইদিন বিকেলে সুফিয়া খাতুনের অপারেশন করেন ডাক্তার শাহানাজ পারভীন। কিন্তু তিনি সুফিয়া খাতুনের জরায়ু কেটে ফেলেন। যা পরে সুফিয়া খাতুনের স্বজনদের কাছে স্বীকার করেন। সেই সাথে তিনি ব্যবস্থাপত্র দিয়ে রোগীকে ছাড়পত্র দেন। কিন্তু বাড়িতে যাওয়ার পরও সুফিয়া খাতুনের পেটের ব্যাথা না কমায় এবং অনাবরত প্রস্রাব হতে থাকলে ৩ দফা তারা সুফিয়া খাতুনকে নিয়ে ডা. শাহানাজ পারভীনের কাছে যান। প্রতিবারও ডা. শাহানাজ পারভীন তাদের আশ্বস্ত করেন যে, ওষুধ সেবন করলে সব ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু এক পর্যায়ে পেটের ব্যাথা আরও বৃৃদ্ধি  পেলে তারা যশোর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ডা. লে. কর্নেল হারুন অর রশিদের শরনাপন্ন হন। এ সময় আল্ট্রাসনোগ্রামসহ অন্যান্য শারীরিক পরীক্ষা করে ডাক্তার লে. কর্নেল হারুন রশিদ জানান, সুফিয়া খাতুনের শুধুমাত্র জরায়ু কেটে ফেলা হয়েছে। এছাড়া অপারেশনের সময় প্রস্রাবের নাড়িও কেটে ফেলা হয়েছে। তবে জরায়ুর ডান পাশে থাকা টিউমারটি এখনো রয়ে গেছে। যে কারণে প্রস্রাব বন্ধ হচ্ছে না। এ জন্য ফের অপারেশন করতে হবে। এরপর গত ৫ ফেব্রুয়ারি ফের ইউনিক হসপিটাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে গিয়ে ভুল অপারেশনের বিষয়ে জানতে চাইলে ডাক্তার শাহানাজ পারভীন তাদেরকে গালিগালাজ করেন এবং চেম্বার থেকে তাড়িয়ে দেন। বিষয়টি মীমাংসায় ব্যর্থ হয়ে তিনি আদালতে এ মামলা করেছেন।