যশোরে ‘হিটস্ট্রোকে’ ১০ হাজার মুরগির মৃত্যু!
আবদুল কাদের: যশোরে ক্রমশ বেড়ে চলা দাবদাহে গত কয়েক দিনে প্রায় ১০ হাজার মুরগি মারা গেছে। সোমবার এই জেলায় তাপমাত্রা ছিল ৩৮ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর গতকাল মঙ্গলবার ছিল ৩৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি। ফলে প্রতিদিন বেড়ে চলা গরমে খামারের মুরগি অসুস্থ হয়ে মারা যাচ্ছে। এতে মুরগি ও ডিম উৎপাদন কমে গেছে। এমন পরিস্থিতিতে উদ্বিগ্ন প্রান্তিক খামারিরা।
তবে তীব্র গরমের কারণে মুরগির মৃত্যুর প্রকৃত তথ্য-উপাত্ত নেই জেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের কাছে। গরমে এই কয়েকদিনে ঠিক কতো সংখ্যক মুরগির মৃত্যু হয়েছে জানাতে পারেনি সরকারি এই দপ্তরটি।
দপ্তর সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, যশোরে মুরগি খামার রয়েছে ১৫৩৪টি। এর মধ্যে ব্রয়লার ২৯২টি, লেয়ারের ৩৭টি ও সোনালী মুরগির খামার রয়েছে ২০৫টি। এসব খামারে বছরে ৪৮ কোটি ৫ লাখ পিস ডিম উৎপাদন হয়।
শহরের নাজির শংকরপুর এলাকার খামারি সানজিদা বেগম জানান, প্রচন্ড গরমে তারসহ আশপাশের খামারে মুরগি মারা যাচ্ছে। অসুস্থ থাকছে সব সময়। তার খামারে ৭’শ মুরগি ছিল। এখন আছে ২৫০টি। মাস খানেক আগেও হঠাৎ ৪’শটি মুরগি মারা যায়। গত কয়েকদিনে মারা গেছে ৫০টির মতো। তিনি বলেন, প্রচন্ড গরমে ‘হিটস্ট্রোকে’ মুরগি মারা যাচ্ছে।
শহরতলীর চাঁচড়া ভাতুড়িয়া গ্রামের আলাউদ্দিন জানান, তার খামারে ৩২’শ ব্রয়লার মুরগি ছিল। এর মধ্যে গত দুই দিনে ৩২টি মুরগি গরমের কারণে মারা গেছে। একই গ্রামের ফিরোজ হোসেন জানান, তারা খামারে সাড়ে ৪ হাজার ব্রয়লার মুরগির মধ্যে গরমের কারণে ২’শ মুরগি মারা গেছে।
সদর উপেজলার ফতেপুর গ্রামের পারভেজ হাসান জানান, তার খামারে ২’শ দেশি মুরগি রয়েছে। প্রচন্ড গরমে মুরগি মারা না গেলেও অসুস্থ হয়ে পড়ায় ডিম উৎপাদন হচ্ছে না। তিনি নিয়মিত স্যালাইন ও লেবুর রস খাওয়াচ্ছেন।
যশোর সরকারি হাঁস-মুরগি খামারের ব্যবস্থাপক বখতিয়ার হোসেন জানান, খামারটিতে সাড়ে ৩ হাজার মুরগি রয়েছে। তারা নিয়মিত পরিচর্যা করছেন। টিনশেডে পানি দিয়ে ঠান্ডা রাখছেন। এতে মুরগি মারা না গেলেও অসুস্থ হয়ে পড়ছে। সেই সাথে ডিমের উৎপাদন কমে গেছে।
সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা তপু কুমার জানান, তার অধীনে ২৪৯টি ব্রয়লার ও ২৫টি লেয়ার মুরগির খামার রয়েছে। গত দুই দিন ধরে যশোরে প্রচন্ড গরম পড়েছে। এতে মুরগি অসুস্থ হয়ে মাারা যাচ্ছে। হিটস্ট্রোক বেড়ে গেছে। খাওয়া কমে গেছে। তবে ঠিক কী পরিমাণ মুরগি মারা গেছে তার হিসাব নেই।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. রাশিদুল হক জানান, প্রচন্ড গরমে ব্রয়লার মুরগি অসুস্থ হয়ে মারা যাচ্ছে। প্রায় প্রতিটি প্রান্তিক ব্রয়লার খামারে মুরগি মারা গেলেও সঠিক পরিসংখ্যান আমাদের কাছে নেই। তবে মারা যাবার হার ১০ হাজারের মতো হতে পারে। আমরা খোঁজ খবর রাখছি। গরমে মুরগি বাঁচাতে করণীয় বলে দেয়া হচ্ছে।
