বিল্লাল হোসেন: তাপদাহে পুড়ছে যশোর। তাপমাত্রার পারদ ৪০ ছাড়িয়ে তীব্র দাবদাহে রূপ নিয়েছে। বৃষ্টির দেখা নেই। তেমন সুসংবাদও নেই বৃষ্টিপাতের। উল্টো; জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তি বৃদ্ধি পেতে পারে। বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে এমনটিই বলা হয়েছে। আর এমন গরমে মোসুমি রোগের প্রার্দুভাব বেড়েছে।
বুধবার অধিদপ্তর যশোরে ৪২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করে। এদিন দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয় চুয়াডাঙ্গায় ৪২ দশমিক ৮ ডিগ্রি। চুয়াডাঙ্গায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রার পর দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল যশোর।
আবাহাওয়া অফিস সূত্র জানায়, যশোরের ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। তামপাত্রা ৪০ থেকে ৪১ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়ায় হলে তাকে তীব্র তাপপ্রাবহ বলে।
একটু বেলা বাড়তেই সূর্য যেন আগুন ঢালছে। তীব্র রশ্মিতে শরীর যেন পুড়ে যাচ্ছে। ঘরে ফ্যানের বাতাসও গরম অনুভূত হচ্ছে। তীব্র দাবদাহে অতিষ্ট মানুষ ছায়া জায়গায় আশ্রয় নিচ্ছেন। গরমের তীব্রতায় বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে সব বয়সী মানুষ। মৌসুমি রোগ থেকে রেহাই পেতে চিকিৎসকেরা সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।
যশোর শহরের ঘোপ নওয়াপাড়া রোডের বাসিন্দা মফিজুর রহমান জানান, ওষ্ঠাগত গরমে মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। প্রখর রোদ থেকে ঘরে ফিরেও গরমে ছটফট করছেন সবাই। ঘরে-বাইরে কোথাও স্বস্তি নেই। রাতের বেলাও থাকছে ভ্যাপসা গরম। এই গরম কোনভাবে সহ্য করার মতো না।
যশোর শহরের বেজপাড়ার চায়ের দোকানদার সাদেক আলী জানান, প্রচন্ড গরমে দোকানে বসে থাকা খুবই কষ্টকর। তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ার কারণে চা বিক্রি কমে গেছে।
যশোর সদর উপজেলার লাউখালী গ্রামের মিন্টু হোসেন জানান, বৃহস্পতিবার দুপুরে তিনি শহরের দড়াটানা থেকে গিয়েছিলেন রেল রোডে । আনুমানিক এক কিলোমিটারের এই পথ পাড়ি দিতেই তিনি হাপিয়ে ওঠেন। কড়া রোদে ‘পুড়ে’ যাচ্ছে গা। মাথার ওপরের নীল আকাশটা যেনো তাঁতানো কড়াইয়ের রূপ নিয়েছে। রোদের খরতাপে অসহনীয় অবস্থায় পড়ছেন তার মতো অনেকেই।
চান্দুটিয়া গ্রামের কৃষক শফিকুল ইসলাম জানান, সকালে সুর্য উঠার সাথে-সাথে তীব্র রোদ। বেলা বাড়ার সাথেই রোদ যেন আগুনের ফুলকি হয়ে ঝরছে। আগুনঝরা রোদের তেজে বাইরে বের হওয়া মুশকিল হয়ে পড়ছে। বুধবার দুপুরে তাপ সহ্য করতে না পেরে তিনি মাঠে যাননি।
যশোর জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. আব্দুস সামাদ জানান, প্রচন্ড গরমের কারণে হাসপাতালে শিশু ও বয়স্ক রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। তিনি জানান, বেশির ভাগ শিশু ঠান্ডা জ্বর ও কাশিতে আক্রান্ত হচ্ছেন।
তিনি অভিভাবকদের পরামর্শ দিয়ে বলেন, ‘ভাইরাল ফিভার’ বা মৌসুমি রোগ থেকে রক্ষা পেতে শিশুদের বেশি বেশি তরল খাবার খাওয়াবেন। রোদে ঘোরাঘুরি করতে দেয়া যাবেনা। খোলামেলা ঠান্ডা পরিবেশে শিশুদের রাখা ও বেশি বেশি পান করাতে হবে।
তিনি জানান, গরমের কারণে ডায়রিয়া রোগীও বেড়েছে। সচেতনতার বিকল্প কিছু নেই। তিনি আরও জানান, গরমে বাড়ছে অস্বস্তি। কড়া রোদ ও আবহাওয়ার কারণে বয়স্ক মানুষ নানা ধরণের অসুখ-বিসুখে বিপর্যস্ত করছে। সবচেয়ে বেশি মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে জ্বর, হিটস্ট্রোকে।