Ad for sale 100 x 870 Position (1)
Position (1)

২০ বছর স্কুলে যাননি, এখন ভুয়া নিয়োগের  কাগজপত্র নিয়ে এমপিওভুক্তির চেষ্টা

এখন সময়: রবিবার, ১৪ ডিসেম্বর , ২০২৫, ০৭:১২:৪৬ এম

 

নিজস্ব প্রতিবেদক, মণিরামপুর : নিয়োগপত্র পাওয়ার ২০ বছর পর কর্মস্থলে যাওয়ার জন্য জোর চেষ্টা করছেন বদরুজ্জামান নামের এক কথিত শিক্ষক। কাগজপত্র তিনি মণিরামপুরের বিজয়রামপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক (সমাজ বিজ্ঞান) ২০০৪ সালের ২৪ ডিসেম্বর তার নিয়োগ দেখানো হলেও গত ২০ বছরে বিদ্যালয়ে কোনো উপস্থিতি নেই। এমনকি বদরুজ্জামানকে যে প্রধান শিক্ষক নিয়োগপত্র দিয়েছেন, তিনিও বিষয়টি জানেন না। এমনকি সেই সময়ের সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন সাবেক সাংসদ মরহুম মুফতি ওয়াক্কাস। যার স্বাক্ষরও নাকি সঠিক নয়। তারপরও বদরুজ্জামানের বেতন বিলের জন্য বর্তমান মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বজলুর রশিদ সুপারিশপত্র পাঠিয়েছেন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসলে উপজেলাব্যাপী তোড়পাড়ের সৃষ্টি হয়েছে। একজন সংসদ সদস্য এবং একজন অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের স্বাক্ষর জাল করে ভূয়া নিয়োগ দেখানোর বিষয়টি বিদ্যালয়ে বর্তমান প্রধান শিক্ষক তাপস কুমার পাইনকে নিয়ে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। কথিত এ শিক্ষককে বিদ্যালয়ে ওঠানো নিয়ে বিদ্যালয় এলাকায় জনসাধারণের মাঝে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। এমনকি ক্ষুদ্ধ জনতা বতর্মান প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ে দু’দফা অবরুদ্ধ করেছে।

স্থানীয়দের দাবি, বদরুজ্জামানকে নিয়োগ দেখাতে সাবেক প্রধান শিক্ষক ইনছার আলী ও সাবেক দুজন সভাপতির স্বাক্ষর জাল করা হয়েছে।  এ দু’সভাপতির মধ্যে একজন রয়েছেন, সাবেক সংসদ সদস্য মরহুম মুফতি মোহাম্মদ ওয়াক্কাস। অপরজন হলেন , বিজয়রামপুর গ্রামের বাসিন্দা ব্যবসায়ী ঝন্টু পাটোয়ারী।

কাগজপত্র দেখা যায়, মণিরামপুর উপজেলার গোপিকান্তপুর গ্রামের মৃত কেরামত আলীর ছেলে বদরুজ্জামান বাবুকে ২০০৪ সালের ২৪ ডিসেম্বর বিজয়রামপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণির ‘খ’ শাখার সহকারী শিক্ষক নিয়োগ দেখান হয়। ২০০৫ সালে ১ জানুয়ারি যোগদান দেখান হয়েছে কাগজপত্রে। অভিযোগ রয়েছে, বাস্তবে তার ভিন্নতা এবং ওই বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ইনছার আলীর স্বাক্ষরে তাকে নিয়োগ দেখান হয়। তৎকালিন বিদ্যালয়ের সভাপতি ছিলেন সাবেক এমপি মুফতি ওয়াক্কাস। তবে, এ নিয়োগ নিয়ে এলাকায় কেন উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে, সে বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে জানা গেল বর্তমান প্রধান শিক্ষক তাপস কুমার পাইন নিয়োগের যাবতীয় কাগজপত্র জাল-জালিয়াতি করেছেন।

জানা গেছে, কথিত শিক্ষক বদরুজ্জামান কখনই স্কুলে আসেন নি। অথচ ২০২৪ সালে ১০ জুলাই এক রেজুলেশনের মাধ্যমে তাকে অষ্টম শ্রেণির ‘খ’ শাখা থেকে মূল পাঠদানে পদায়ন করা হয়। একই রেজুলেশনের তার এমপিও ভূক্তির সুপারিশ করা হয়। অথচ তৎকালীন সভাপতি ঝন্টু পাটোয়ারী এ সম্পর্কে কিছুই জানেন না।

ঝন্টু পাটোয়ারী বলেন, সভাপতির দায়িত্বে থাকাকালীন বদরুজ্জামান নামে কোনো শিক্ষক স্কুলে ছিল না। তার রেজুলেশনে আমার স্বাক্ষর কিভাবে এলো এটা আমার জানার বাইরে।

নিয়োগ দাতা সাবেক প্রধান শিক্ষক ইনছার আলী বলেন, ৩৭ বছর শিক্ষকতার কর্মজীবনে বদরুজ্জামান বা বাবু নামে কাউকে বিজয়রামপুর স্কুলে নিয়োগ দেয়া হয়নি। এমনকি আমার করা স্বাক্ষর নিয়ে যে প্রশ্ন উঠেছে, সেটা আমি জানি না। তবে, যতটুকু শুনেছি, বর্তমান বিদ্যালয় প্রধান তাপস কুমার পাইন ও কতিপয় ব্যক্তিরা জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে একজন শিক্ষককে বিদ্যালয়ে উঠানোর চেষ্টা করছে।

অভিযোগ উঠেছে, বিদ্যালয়ের বর্তমান প্রধান শিক্ষক তাপস কুমার পাইন ১৬ লাখ টাকার বিনিময়ে জালিয়াতির মাধ্যমে বদরুজ্জামানকে শিক্ষক বানাতে চেষ্টা চালাচ্ছেন। এবং প্রধান শিক্ষক তাপস কুমার পাইন জাল জালিয়াতির মাধ্যমে উপজেলার মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস মাধ্যমে এমপিভূক্ত করার যাবতীয় কাগজপত্র সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালে পাঠিয়েছেন।

মণিরামপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বজলুর রশিদ জানান, বদরুজ্জামানের এমপিওভূক্তির কাগজপত্র অফিস মাধ্যমে মন্ত্রণালয়ে পাঠান হয়েছে।

এসব বিষয়ে কথা বলতে নারাজ প্রধান শিক্ষক তাপস কুমার পাইন। তিনি পরিস্থিতিকে স্বাভাবিক করতে একটি রাজনৈতিক দলের কতিপয় নেতার ছত্রছায়ায় রয়েছেন। একই সাথে ছুটি দেখিয়ে বিদ্যালয়ে যান না তিনি।

 

Ad for sale 100 x 870 Position (2)
Position (2)
Ad for sale 225 x 270 Position (3)
Position (3)
Ad for sale 225 x 270 Position (4)
Position (4)