ম.ম.রবি ডাকুয়া, মোংলা: দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মোংলা-খুলনা মহাসড়ক এখন মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। বছরের পর বছর সংস্কারের অভাবে এই সড়কের অবস্থা ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। পিচ উঠে গিয়ে সৃষ্টি হয়েছে ছোট বড় অসংখ্য গর্ত। বিশেষ করে মোংলা বন্দর থেকে রামপাল পাওয়ার প্লান্ট পর্যন্ত সড়কে যান চলাচল চরমভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, প্রায় ৭০ কিলোমিটার দীর্ঘ এই মহাসড়কটি খুলনার সঙ্গে মোংলার একমাত্র সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা। অথচ বর্তমানে এই রাস্তায় চলাচল করা মানেই জীবনের ঝুঁকি নেওয়া। বিশেষ করে রাতে গর্তের কারণে ছোট যানবাহন যেমন সিএনজি, মোটরসাইকেল ও পিকআপ প্রায়ই দুর্ঘটনার কবলে পড়ছে। পণ্যবাহী ট্রাক উল্টে পড়ার ঘটনাও ঘটছে।
এ বিষয়ে স্থানীয় পথচারীররা আক্ষেপ করে বলেন, ‘মোংলা থেকে খুলনা যেতে এখন ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় লাগছে। শুধু কষ্ট না, দুর্ঘটনার ভয়ে রাস্তায় নামতেই ভয় লাগে। কেউ দেখছে না এই দুর্ভোগ।’
ট্রাকচালকসহ যানবাহন ড্রাইভাররা বলেন, ‘বন্দর থেকে পণ্য নিয়ে খুলনায় যেতে গেলে মনে হয় ট্রাকের চাকা ভেঙে যাবে। প্রতিদিন কোনো না কোনো গাড়ি গর্তে আটকে যায়। রাস্তার এই অবস্থায় ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম।’
উল্লেখ্য, এই সড়ক দিয়েই মোংলা বন্দরের আমদানি-রফতানি পণ্যবাহী শত শত ট্রাকসহ বন্দর দিয়ে আমদানিকৃত গাড়ি ঢাকায় যাতায়াত করে। কিন্তু বছরের পর বছর সংস্কার না করায় এখন প্রায়ই পণ্যবাহী গাড়ি আটকে গিয়ে দীর্ঘ যানজট তৈরি হয়। এতে ভোগান্তি বাড়ছে সাধারণ মানুষের। ব্যবসায়ীদের লোকসানও বাড়ছে।
বুড়িরডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান উদয় শংকর বিশ্বাস বলেন, ‘এই রাস্তা দিয়ে হাজারো মানুষ চলাচল করে। আমরা বহুবার বলেছি। তবুও কাজ শুরু হয়নি। দ্রুত সংস্কার না করলে অবস্থা ভয়াবহ হবে।’
মোংলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শারমিন আক্তার সুমি জানান, ‘বিষয়টি আমি সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে জানিয়েছি। দ্রুত সময়ের মধ্যেই সংস্কারের ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
মোংলা বন্দরের হারবার ও মেরিন বিভাগের কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘মোংলা থেকে দিগরাজ পর্যন্ত সড়ক আমাদের আওতাধীন। অতিবৃষ্টির কারণে রাস্তার অবস্থা খারাপ হয়েছে। আমরা কাজের জন্য অর্ডার দিয়েছি। অতি দ্রুত কাজ শুরু হবে।’
সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফুল ইসলাম জানান, ‘কাটাখালী থেকে দিগরাজ পর্যন্ত সড়ক আমাদের আওতায়। কিছু জায়গায় সমস্যা হয়েছে। তবে বৃষ্টির কারণে কাজ শুরু করা যাচ্ছে না। বৃষ্টি কমলেই সংস্কার শুরু করা হবে।’