শেখ কাজিম উদ্দিন, বেনাপোল: দীর্ঘ ১০ বছর পর স্বজনদের কাছে ফিরলেন ভারতে পাচারের শিকার ৪ সন্তানের জননী শান্তনা বেগম (৩৫)। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ভারতের পেট্রাপোল ইমিগ্রেশন পুলিশ তাকে বেনাপোল ইমিগ্রেশন পুলিশের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করে।
শান্তনার বাড়ি গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার কাস্তিপুর গ্রামে। তার স্বামী সেকেন্দার আলী মুহুরি পেশায় শ্রমিক এবং তাদের চারটি সন্তান রয়েছে। এতোদিন পরিবারের সদস্যরা তার কোনো খোঁজ পাননি।
জানা যায়, শান্তনা বেগম ২০১৫ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি রাতে দালালের মাধ্যমে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করেন। সেখানে মুম্বাইয়ের নাগপুর এলাকায় অবস্থানকালে ২০১৫ সালের ২১ এপ্রিল আন্দামান পুলিশ তাকে আটক করে। আটক অবস্থায় মানসিক ভারসাম্য হারালে তাকে মুম্বাইয়ের নাগপুর মানসিক হাসপাতালে দীর্ঘদিন চিকিৎসা দেয়া হয়। পরে তাকে পশ্চিমবঙ্গের “ঈশ্বর সংকল্প” নামের একটি মানবিক আশ্রয়কেন্দ্রে রাখা হয়।
২০২৪ সালে পশ্চিমবঙ্গের বেসরকারি সংস্থার সমন্বয়ক তপন প্রধান এবং বাংলাদেশি সাংবাদিক শামসুল হুদার ধারাবাহিক প্রচেষ্টায় শান্তনার পরিচয় শনাক্ত হয় এবং ট্রাভেল পারমিটের মাধ্যমে তাকে দেশে ফেরানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়।
দীর্ঘ ১০ বছর পর স্বদেশের মাটিতে ফিরে শান্তনা আবেগাপ্লুত হয়ে জানান, “জীবনের ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে ভারতে গিয়েছিলাম, দীর্ঘ কষ্টের পর দেশে ফিরতে পারলাম-এটাই আমার সবচেয়ে বড় স্বস্তি।”
দীর্ঘদিন পর মাকে ফিরে পাওয়ার খবর শুনে পরিবারে স্বস্তি ও আনন্দের পরিবেশ বিরাজ করছে।
বেনাপোল পোর্ট থানার অফিসার ইনচার্জ (সাব-ইন্সপেক্টর) মানিক কুমার সাহা জানান, প্রয়োজনীয় আনুষ্ঠানিকতা শেষে শান্তনাকে যশোরের ‘জাস্টিস অ্যান্ড কেয়ার’ সেফ হোমে পাঠানো হবে। এরপর সেখান থেকে আইনগত প্রক্রিয়া শেষে তাকে পরিবারে ফিরিয়ে দেওয়া হবে।