যশোরে পাঁচ বছরে আয় বেড়েছে ইউপি চেয়ারম্যানদের

এখন সময়: শুক্রবার, ২৯ মার্চ , ২০২৪, ০২:২১:১৮ এম

# জনপ্রতিনিধিদের আর্থিক সম্পদ বিবরণী প্রকাশ
নিজস্ব প্রতিবেদক : যশোরে ৫টি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানে আর্থিক সম্পদ বিবরণী প্রকাশ করা হয়েছে। বিগত পাঁচ বছরের তুলনামূলক চিত্রে উঠে এসেছে বার্ষিক আয় ও সম্পদের পার্থক্য। মঙ্গলবার শহরের একটি হোটেলে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা রাইটস যশোর আয়োজিত ‘স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের আর্থিক সম্পদ বিবরণী প্রকাশ জোরদারকরণ’ প্রকল্পের আওতায় চেয়ারম্যানদের সম্পদ বিবরণী প্রকাশ করা হয়।
এশিয়া ফাইন্ডেশনের সহযোগিতায় যশোর জেলার ১০ ইউনিয়নে ‘স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের আর্থিক সম্পদ বিবরণী প্রকাশ জোরদারকরণ’ প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে রাইটস যশোর। এই প্রকল্পের আওতায় প্রকাশিত ৫ ইউপি চেয়ারম্যানের সম্পদ বিবরণীতে দেখা গেছে, ৫ বছর আগে মণিরামপুরের ভোজগাতি ইউপি চেয়ারম্যান আবদুর রাজ্জাক ও তার নির্ভরশীলদের বার্ষিক আয় ছিল সাড়ে ৩ লাখ টাকা। বর্তমানে তার বার্ষিক আয় ৫ লাখ ত্রিশ হাজার টাকা। স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের মধ্যে রয়েছে নিজ নামে ১ দশমিক ৫ শতক জমি ও নির্ভরশীলদের নামে ৩০ শতক জমি। ধার ও ঋণ আছে ৬ লাখ টাকা। 
বাঘারপাড়ার বন্দবিলা ইউপি চেয়ারম্যান সবদুল হোসেন খান ও তার উপর নির্ভরশীলদের বার্ষিক আয় ছিল ২২ লাখ টাকা। বর্তমানে ২৫ লাখ টাকা বার্ষিক আয় তাদের। স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের মধ্যে নিজ নামে ১৫ একর জমি ও স্ত্রীর নামে ২০ ভরি সোনার গহনা আছে। তার দায় দেনা আছে ৬ লাখ টাকা।
কেশবপুর সদর ইউপি চেয়ারম্যান মো. আলাউদ্দিন ও তার উপর নির্ভরশীলদের বার্ষিক আয় ছিল ৯ লাখ ৯০ হাজার টাকা। বর্তমানে তাদের বার্ষিক আয় ১০ লাখ ২২ হাজার টাকা। স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের মধ্যে নিজ নামে ৩ বিঘা জমি, স্ত্রীর নামে ৯ শতক ও নির্ভরশীলদের নামে ৮ বিঘা জমি আছে। ব্যাংক ঋণ আছে ৯ লাখ টাকা।
অভয়নগরের প্রেমবাগ ইউপি চেয়ারম্যান মফিজ উদ্দিন ও তার নির্ভরশীলদের বার্ষিক আয় ছিল ১৩ লাখ ২১ হাজার ৪০৮ টাকা। বর্তমানে তাদের বার্ষিক আয় ১৬ লাখ ৮৬ হাজার টাকা। স্থাবর অস্থাবর সম্পদের মধ্যে স্ত্রীর নামে ৫ শতক, নিজের ২ দশমিক ১৮ একর জমি ও ৫ লাখ ৪৫ হাজার টাকা মূল্যের বাড়ি, স্ত্রীর ১০ দশমিক ৫ ভরি সোনার গহনা ও নিজের ৪ লাখ টাকা মূল্যের জীপ গাড়ি আছে।
শার্শার বেনাপোল ইউপি চেয়ারম্যান বজলুর রহমান ও তার নির্ভরশীলদের বার্ষিক আয় ছিল ১৭ লাখ ৮৪ হাজার টাকা। বর্তমানে তাদের বার্ষিক আয় ৮৩ লাখ ৯৩ হাজার ২৮৯ টাকা। স্থাবর সম্পদের মধ্যে নিজ নামে ৮ বিঘা জমি, স্ত্রীর নামে দশমিক ৩৫ শতক জমি, নির্ভরশীলদের নামে দশমিক ২৫ শতক জমি ও যৌথ মালিকানার ৫ বিঘা জমির এক তৃতীয়াংশ। অস্থাবর সম্পদের মধ্যে ব্যাংক গ্যারান্টি ২০ লাখ টাকা ও ওষুধ-সিমেন্টের দোকান ৪৬ লাখ টাকা।
বীরমুক্তিযোদ্ধা ডাক্তার ইয়াকুব আলী মোল্লার সভাপতিত্বে সম্পদ বিবরণী প্রকাশ সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন যশোরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রফিকুল হাসান। বিশেষ অতিথি ছিলেন দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) যশোর সমন্বিত কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. নাজমুচ্ছায়াদাত, দি এশিয়া ফাউন্ডেশনের পরিচালক (ফিন্যান্স এন্ড এডমিন) কামরুল হাসান ভুঁইয়া, প্রোগ্রাম ম্যানেজার মো: জাকারিয়া, নাগরিক অধিকার আন্দোলনের আহ্বায়ক মাস্টার নূর জালাল, জাতীয় পার্টির সিনিয়র নেতা ও সাবেক কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মাহবুব আলম বাচ্চু, জেলা আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক বীরমুক্তিযোদ্ধা হারুন অর রশিদ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন রাইটস যশোরের নির্বাহী পরিচালক বিনয় কৃষ্ণ মল্লিক। আরও বক্তব্য দেন প্রেসক্লাব যশোরের সম্পাদক এসএম তৌহিদুর রহমান, জেলা প্রতিবন্ধী বিষয়ক কর্মকর্তা মুনা আফরিন, পুলিশ ব্যুারো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) যশোরের পরিদর্শক শামীম মুসা, প্রেমবাগ ইউনিয়নের বীরমুক্তিযোদ্ধা আফজাল হোসেন, সাংবাদিক সাইফুর রহমান সাইফ, মনিরুল ইসলাম প্রমুখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন রাইটস যশোরের প্রোগ্রাম ম্যানেজার এসএম আজহারুল ইসলাম।