নিজস্ব প্রতিবেদক : পুলিশে উপপরিদর্শক (এসআই) পদে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে শিক্ষানবীশকাল পর্যন্ত প্রার্থীর অবিবাহিত থাকা এবং সামাজিক মর্যাদাসম্পন্ন ও উচ্চবংশীয় হওয়ার শর্ত কেন সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক, অসাংবিধানিক ও বেআইনি ঘোষণা করা হবে না- তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছে হাই কোর্ট।
একটি রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি আশরাফুল কামালের হাই কোর্ট বেঞ্চ রোববার এ রুল জারি করে।
আদালতে রিটকারী পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ইশরাত হাসান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল পূরবী সাহা; তার সঙ্গে ছিলেন পূরবী রানী শর্মা।
পুলিশ প্রবিধানের ৭৪১ এর (চ) দফার (১) নং উপ-দফায় বলা হয়েছে, পুলিশের সাব ইন্সপেক্টটর হিসেবে নিয়োগ পেতে হলে প্রার্থীকে অবশ্যই উচ্চ সামাজিক মর্যাদাসম্পন্ন ও উচ্চ বংশীয় হতে হবে।
আর ৪ নম্বর উপ-দফায় বলা হয়েছে, প্রার্থীকে অবিবাহিত হতে হবে এবং তার শিক্ষানবিশকাল শেষ না হওয়া পর্যন্ত অবিবাহিত থাকতে হবে।
আইনজীবী ইশরাত বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, পুলিশ নিয়োগের প্রবিধানের এসব দফা চ্যালেঞ্জ করে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি হাই কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিট আবেদনটি করেন ঢাকার খিলগাঁওয়ের বাসিন্দা মো. হোসেন খান।
“শিক্ষাগত যোগ্যতাসহ সকল যোগ্যতা থাকার পরও কেবল বিবাহিত হওয়ার কারণে প্রবিধানের শর্ত অনুযায়ী তিনি আবেদন করতে পারেননি। ফলে তিনি এসব শর্ত চ্যালেঞ্জ করে রিট আবেদনটি করেছিলেন। আদালত প্রাথমিক শুনানি নিয়ে রুল জারি করেছে।”
ইসরাত বলেন, “আমাদের দেশে অনেক ছেলেমেয়ে গ্র্যাজুয়েশন শেষ করার আগেই বিয়ে করে ফেলেন। অর্থাৎ পড়ালেখা করা অবস্থাতেই বিয়ে করে ফেলেন, বা বিয়ে হয়ে যায়। ফলে তাদের বয়স, শারীরিক ও শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকার পরও পুলিশের এই পোস্টে তারা আবেদন করতে পারেন না। এটা অযৌক্তিক, সাংঘর্ষিক।
“তাছাড়া সামাজিক মর্যাদাসম্পন্ন বা উচ্চবংশীয় হওয়ার শর্ত খুবই পশ্চাদপদ ধারণা এবং তা সংবিধানের ২৯ ও ৩২ অনুচ্ছেদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।”
আইন সচিব, লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা ও সুরক্ষা সেবা বিভাগের দুই সচিব এবং পুলিশ প্রধানকে চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।