নিজস্ব প্রতিবেদক : দুর্নীতির এক অভিযোগ অনুসন্ধানে এক সাংবাদিককে সাক্ষী হিসেবে তলব করে দেওয়া দুর্নীতি দমন কমিশনের নোটিসে ‘আপত্তিকর’ ভাষার প্রতিবাদ জানিয়েছেন সাংবাদিকরা।
বুধবার সকালে রাজধানীর সেগুন বাগিচায় দুদক কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ ও মানববন্ধন করে এর প্রতিবাদ জানানো হয়।
দুদক পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছিরের সঙ্গে পুলিশের ডিআইজি মিজানুর রহমানের ৪০ লাখ টাকা ঘুষ লেনদেনের অভিযোগ অনুসন্ধানে অনলাইন নিউজপোর্টাল বাংলা ট্রিবিউনের বিশেষ প্রতিনিধি দীপু সারোয়ারকে তলব করে মঙ্গলবার ওই নোটিস দেয় দুদক।
অনুসন্ধান কর্মকর্তা দুদকের পরিচালক শেখ মো. ফানাফিল্ল্যা স্বাক্ষরিত নোটিসে বলা হয়, “দুদকের পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছিরের বিরুদ্ধে ডিআইজি মিজানুর রহমানের কাছ থেকে ৪০ লাখ টাকা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ প্রসঙ্গে আপনার (দীপু সারোয়ার) সাক্ষ্যগ্রহণ ও শ্রবণ একান্ত প্রয়োজন।”
নোটিসের শেষ অংশে বলা হয়, “উল্লিখিত অভিযোগের বিষয়ে আগামী ২৬/০৬/২০১৯ খ্রি: তারিখ ১০.৩০ ঘটিকায় নিম্ন স্বাক্ষরকারীর কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে বক্তব্য প্রদানের জন্য আপনাকে অনুরোধ করা হল। অন্যথায় আইনানুগ কার্যধারা গৃহীত হবে।”
‘আইনানুগ কার্যধারা গৃহীত হবে’- এ বাক্য আপত্তিকর উল্লেখ করে তা সাংবাদিকতার স্বাধীনতার পরিপন্থি বলে মানববন্ধনে অংশ নেওয়া সাংবাদিকরা অভিযোগ করেন।
পাশাপাশি দুদকের ওই নোটিস প্রত্যাহারের দাবি জানান তারা।গত ২৩ জুন বাংলা ট্রিবিউনে ডিআইজি মিজান-এনামুল বাছিরের মধ্যে ঘুষ লেনদেন সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। প্রতিবেদনটির প্রতিবেদক দীপু সারোয়ার।
এর আগে ওই ঘুষ লেনদেনের অভিযোগে বেসরকারি টেলিভিশন এটিএন নিউজে একটি বিশেষ প্রতিবেদন প্রচার করা হয়। তাতে ডিআইজি মিজান ও বাছিরের কথপোকথনের অডিও ক্লিপও শোনানো হয়েছিল।
এটিএন নিউজের প্রতিবেদক ইমরান হোসেন সুমনকেও সাক্ষী হিসেবে বুধবার তলব করা হয়। তিনি দুদকে নির্ধারিত সময়ে তদন্ত কর্মকর্তার দপ্তরে উপস্থিত হয়ে তার বক্তব্য দেন।
তবে ইমরানকে দেওয়া নোটিসে দুদকে উপস্থিত না হলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ কোনো কথা ছিল না।
এদিকে সাংবাদিকদের অভিযোগের ভিত্তিতে ‘আপত্তিকর কথাসহ’ ওই চিঠি পাঠানো দুদক কর্মকর্তা ফানাফিল্ল্যাহকে কারণ দর্শাতে বলেছে দুদক।
নোটিসে তাকে ‘দায়িত্ব অবহেলা ও অসদাচরণের’ ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।
এ বিষয়ে দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ সাংবাদিকদের বলেন, “সাক্ষী হিসেবে সাংবাদিকদের তলব করে যে চিঠি দেওয়া হয়েছে, এতে যদি তদন্ত কর্মকর্তা কোনো ভুল করে থাকন বা দায়িত্ব অবহেলার প্রমাণ পাওয়া যায়, তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”