পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই পানির দাম বাড়ালো যশোর পৌরসভা

এখন সময়: শুক্রবার, ২৯ মার্চ , ২০২৪, ০৫:৩৫:৪২ পিএম

মিরাজুল কবীর টিটো: যশোর পৌরসভা কর্তৃক সাপ্লাই পানির দাম বৃদ্ধি করা হয়েছে। গ্রাহক প্রতি বৃদ্ধি করা হয়েছে ২০ টাকা। কোনো পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই গ্রাহককে বর্ধিত পানির বিল ধরিয়ে দেয়া হচ্ছে। বাড়তি বিলের কপি পেয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন পৌরবাসী।

গ্রাহকদের দাবি, কোনো পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই পৌরসভা পানির বিল বৃদ্ধি করতে পারে না। সাধারণ নাগরিককে সম্মান দেখিয়ে ন্যূনতম পূর্ব ঘোষণার দরকার ছিল।

তবে পৌর কর্তৃপক্ষ বলছে, পানির সেক্টরে পৌরকর্তৃপক্ষকে ভর্তুকি দিতে হয় মোটা অংকের টাকা। ঘাটতি পূরন করতে টাকা বৃদ্ধি করা হয়েছে। এতে করে কোনো সমস্যা হওয়ার কথা না।

পৌরসভা সূত্র জানায়, যশোর পৌরসভার ২৯ পাম্প থেকে ৯টি ওয়ার্ডে ১৫ হাজার গ্রাহকের লাইন সংযোগ দেয়া হয়েছে। প্রতিদিন ভোর ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত পানি সাপ্লাই দেয়া হয়। লোডশেডিংয়ের কারণে গ্রাহক ২ ঘন্টা থেকে চার ঘন্টা পানি পায় না। বাকি সময়ে সাপ্লাই দেয়া হয়। প্রিপ্রেইড মিটার স্থাপন করায় পাম্প চালানোর জন্য আগে মিটারে টাকা রিচার্জ করতে হয়। একারণে মিটার রিচার্জ, কর্মচারীদের বেতনসহ আনুসাঙ্গিক খরচে পৌরসভার মাসে ব্যয় ৪১ লাখ টাকা। পানির বিল বাবদ আদায় হয় ৩৩ লাখ টাকা। প্রতি মাসে ৮ লাখ টাকা ঘাটতি।

সহকারী প্রকৌশলী কামাল আহম্মেদ জানান, পানির টাকার ঘাটতি পূরণে বর্তমান পৌরপরিষদ গত ৩১ জুলাই সভা করে পানির বিল গ্রাহক প্রতি ২০ টাকা বাড়িয়ে দিয়েছে। হাফ ইঞ্চি ব্যাসের পাইপ লাইনের মাসিক বিল ১৭০ টাকার স্থলে ১৯০ টাকা করা হয়েছে। থ্রি-ফোর ব্যাসের পাইপ লাইনের পানির বিল ২৫০ টাকার স্থলে ২৭০ টাকা করা হয়েছে।

এদিকে কোনো পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই পৌরসভা থেকে পানির বিল বাড়িয়ে দেয়ায় গ্রাহকরা ক্ষুব্ধ হয়েছেন। কারন তারা বিলের কাগজ হাতে পেয়ে বর্ধিত বিলের বিষয়টি জানতে পারেন। এর আগে তারা পৌর পরিষদের কোনো সিদ্ধান্তের কথা জানতেন না।

কামাল পাশা নামে এক গ্রাহক জানান, পানির বিল বৃদ্ধি করা হয়েছে ঠিকই। কিন্তু সঠিক ভাবে পানি পাওয়া যায় না। পৌরকর্তৃপক্ষ যে পানি সাপ্লাই দেয় তা অত্যন্ত নোংরা। পানির গতিও কম। সেবার দিকে নজর নেই। বাড়তি টাকা আদায়ে ব্যস্ত পৌর কর্তৃপক্ষ।

তিনি আরো জানান, বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বৃদ্ধি করা হয়েছে। এর পাশাপাশি পানির বিল বৃদ্ধি করলে আমাদের মতো নিন্ম আয়ের গ্রাহকদের সমস্যাতো হবেই।

আমিনুর ইসলাম নামে আরেক গ্রাহক জানান, পৌরসভা ইচ্ছামতো পানির বিল বৃদ্ধি করে গ্রাহকের উপর চাপিয়ে দিয়েছে। এটা ঠিক না। দাম বৃদ্ধির আগে গ্রাহকদের জানানো উচিৎ ছিল।

মাজেদা বেগম নামে গ্রাহক জানান, গ্রাহকদের না জানিয়ে পৌরসভা কর্তৃপক্ষ পানির বিল বাড়িয়ে অন্যায় করেছে। পৌর পরিষদের সিদ্ধান্ত অন্তত একদিন মাইকিং করে জানিয়ে দেয়া উচিৎ ছিল। নাগরিককে নূন্যতম সম্মান দেয়ার দরকার ছিলো। পৌরকর্তৃপক্ষ যা খুশি তাই করতে পারে না।

তিনি আরো জানান, এমনিতে লোডশেডিংয়ের কারণে ১২ ঘন্টার মধ্যে গ্রাহকরা ৮ ঘন্টার পানি পাচ্ছে। একতো চার ঘন্টা পানি কম তার ওপর ২০ টাকা বৃদ্ধি। এটা রীতিমতো গ্রাহকদের সাথে অন্যায় করা হচ্ছে। অবিলম্বে এই বর্ধিত বিল প্রত্যাহার করে আগামী মাসের বিলের সাথে সমন্বয় করার জন্য তিনি আহবান জানান।

এ ব্যাপারে পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী কামাল আহমেদ জানান, পাম্পের খরচ সমন্বয় করার জন্য ২০ টাকা বৃদ্ধি করা হয়েছে। এতে গ্রাহকদের সমস্যা হবে না।