মহেশপুরে মাটিবাহী ট্রাক্টরের কারণে নষ্ট হচ্ছে কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত রাস্তা

এখন সময়: শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল , ২০২৪, ১০:২৯:৪২ এম

অসীম মোদক, মহেশপুর: ঝিনাইদহের মহেশপরে কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সরকারি রাস্তা নষ্ট হচ্ছে বিভিন্ন ইটভাটার মাটিবাহী ট্রাক্টরের কারণে। একের পর এক রাস্তা নষ্ট হলেও প্রশাসন রয়েছে নিরব দর্শকের ভূমিকায়। এক প্রকার সড়কের ঘাতক বলে পরিচিত ট্রাক্টরের দখলে রয়েছে পৌর এলাকাসহ সীমান্তবর্তী উপজেলার সংযুক্ত রাস্তা গুলো। ট্রাক্টরের কারণে প্রতিনিয়ত নষ্ট হচ্ছে কাঁচা ও পাকা রাস্তাগুলো। এছাড়াও এ সকল ট্রাক্টরের বেপরোয়া গতিতে চলাচলের কারণে প্রতিনিয়ত ঘটছে ছোট-বড় দূর্ঘটনা।

গ্রামীর সড়কে চলাচলকারী এবং রাস্তার পাশে বসবাসকৃত জনসাধারণ অবৈধ ট্রাক্টরের জুলুমে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। উপজেলা এলাকার মহাসড়ক ও গ্রামীণ সড়কে অবাধে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে এ ট্রাক্টর গুলো। চাষাবাদের জন্য আমদানিকৃত ট্রাক্টর এখন অবৈধ ট্রাক বা পরিবহন হয়ে গ্রামীন জনপদে সর্বনাশ ঘটাতে শুরু করেছে। যা সড়কের বেহাল দশা করে আবার ধুলিকনা সৃষ্টি করে।

মহেশপুর উপজেলার ১২ ইউনিয়নের বিভিন্ন নতুন নতুন রাস্তার পরিস্থিতি আজ এমন কোটি টাকার রাস্তা মাটি বোঝাই অবৈধ ট্রাক্টরের চলাচলের কারেণ ধুলোর সৃষ্টি হচ্ছে। আর রাস্তায় কাঁদা পড়ে থাকার কারণে একটু বৃষ্টিতে মরণ ফাঁদে পরিণত হচ্ছে। বেপরোয়া চলাচলে শব্দ দূষণেও আশপাশের গ্রামের রাস্তায় চলাচলকারী জনসাধারণ ও শিক্ষার্থীরা অতিষ্ট হয়ে উঠেছে।

উপজেলার সবকটি ইটভাটায় ইট, বালি, মাটি পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে এসকল ট্রাক্টর। এসব ট্রাক্টরের নেই কোনো রোডপার্মিট, তাছাড়া ড্রাইভিং লাইসেন্সের প্রয়োজন না হওয়ায় ১৫ থেকে ২০ বছরের শিশু-কিশোররাও এসব ট্রাক্টর চালানোর সুযোগ পাচ্ছে। যার ফলে প্রতিনিয়ত ঘটছে সড়কে প্রাণহানী।

অবৈধ ট্রাক্টর চলাচলের কারণে এলাকার স্থানীয়রা জানান, সরকারের কোটি কোটি টাকার রাস্তাঘাট ধ্বংস করছে ইট ভাটার ট্রাক্টর গুলো। তারা স্বল্পমূল্যে ফসলি জমি ও পুকুর খননের মাটি কিনে পরিবহনের ফলে বিলীন হচ্ছে রাস্তাঘাট এবং ট্রাক্টরের চাকায় ধ্বংস হচ্ছে মহাসড়কসহ  গ্রামের সদ্য নির্মিত কাঁচা আধাপাকা ও পাকা সড়ক গুলো।

উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) শাহরিয়া আকাশ বলেন, মাটি বোঝাই ট্রাক্টরের চলাচলের কারণে নব-নির্মিত পাকা রাস্তা গুলোর ক্ষতি হচ্ছে। তারপরও আমরা কিছু করতে পারছি না, কারণ মাটি বোঝই ট্রাক্টর গুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দায়িত্ব আমাদের না। 

স্থানীয়দের অভিযোগ এসব যন্ত্রদানবের প্রতি স্থানীয় প্রশাসন একেবারে উদাসীন। এলাকার প্রভাবশালীদের খুঁটির জোরে এ সকল ট্রাক্টর চলছে বহাল তবিয়তে। স্থানীয়রা আরো জানান, ট্রাক্টরের বেপরোয়া চলাচল রাস্তাঘাট ভেঙে চুরমার হয়ে যাচ্ছে। একটু বৃষ্টি হলেই রাস্তা যেন মরণ ফাঁদে পরিনত হচ্ছে। কৃষি জমির উর্বরতা টপসয়েল কেটে সরবরাহ করা হচ্ছে ইট ভাটায়। রোডপার্মিট বিহীন ট্রাক্টর ও লাইসেন্স বিহীন চালকের কারণে দোকান পাট, রাস্তাঘাটে চলাচলকারী মানুষ সার্বক্ষণিক উদ্বেগ ও উৎকন্ঠার মধ্যে চলাচল করতে হচ্ছে। বিকট শব্দে মাটি বোঝাই নিয়ে সাদা পাউডারের মত ধুলো উড়িয়ে দাপিয়ে চলছে এ সকল ট্রক্টর।

মহেশপুর উপজেলা সহকারী (ভূমি) কর্মকর্তা শরীফ শাওন জনান, আমি যোগদানের পর থেকে মাটি ও বালি উক্তলনের বিরুদ্ধে বেশে কয়েকটি অভিযান পরিচালনা করে জেল-জরিমানা করেছি। তিনি আরও বলেন, মাটি ও বলি উত্তোলনের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে মোবাইল কোটের মাধ্যমে তাদের বিরুদ্ধে  ব্যবস্থা নেয়া হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নয়ন কুমার রাজবংশী বলেন, কে কার জমি থেকে মাটি কাটছে আর কোথায় নিয়ে যাচ্ছে আমাকে জানালে আমি আইনগতভাবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।