জুনে চালু হবে রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের দ্বিতীয় ইউনিট : ভারতীয় হাইকমিশনার

এখন সময়: শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল , ২০২৪, ০২:১৪:৫৯ এম

নকিব সিরাজুল হক, বাগেরহাট: বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাই কমিশনার প্রনয় ভার্মা বলেছেন, সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী জুনে রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের দ্বিতীয় ইউনিট চালু হবে। এ বিষয়ে সব ধরণের প্রস্তুতি নিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। কয়লা সংকটে বন্ধ থাকা প্রথম ইউনিট আগামী সপ্তাহে পুনরায় চালু হবে। এছাড়া সব ধরণের পরিবেশগত বিষয় বিবেচনা করে প্লাান্ট পরিচালনা করা হচ্ছে। যার কারণে সুন্দরবনের কেন ক্ষতি হবে না বলে উল্লেখ করেছেন তিনি। শনিবার  সকালে বাংলাদেশ ভারতের যৌথ মালিকানাধীন রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র পরিদর্শন শেষে তিনি এসব কথা বলেন।

এসময়, বাংলাদেশ ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানি (বিআইএফপিসিএল) এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাইদ আকরাম উল্লাহ, প্রকল্প পরিচালক সুভাষ চন্দ্র পান্ডেসহ ইন্ডিয়া হাই কমিশন ও তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের উর্দ্ধোতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এর আগে সকাল ১০টায় হাই কমিশনার প্রনয় ভার্মা তার সফরসঙ্গীদের নিয়ে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে আসেন। তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিভিন্ন স্থাপন ঘুরে দেখেন। এসময় তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের কর্মকর্তারা হাইকমিশনারকে কেন্দ্রের বিভিন্ন বিষয় অবহিত। অত্যাধুনিক সব প্রযুক্তি দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেন ভারতীয় হাইকমিশনার প্রনয় ভার্মা। এদিকে কয়লা সংকটে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রথম ইউনিট চালু হওয়া সম্পর্কে বাংলাদেশ ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানি (বিআইএফপিসিএল) এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাইদ আকরাম উল্লাহ বলেন, আমরা কয়লা আনার জন্য সব ধরণের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছি। আশাকরি আগামী সপ্তাহের মধ্যে কয়লা চলে আসবে। আসলেই বিদ্যুৎ কেন্দ্র চালু হয়ে যাবে। বারবার তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে মালামাল চুরি হওয়া সম্পর্কে তিনি বলেন, বড় প্রকল্পে এ ধরণের চুরি হয়ে থাকে। চুরি বন্ধে নিরাপত্তা বৃদ্ধির পরিকল্পনা রয়েছে।  উল্লেখ, ২০১০ সালে ভারত ও বাংলাদেশ যৌথ উদ্যোগে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মানের উদ্যোগ নেয়। ২০১২ সালের ২৯ জানুয়ারি বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড এবং ভারতের এনটিপিসি লিঃ এর মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানি (প্রাঃ) লিমিটেড (বিআইএফপিসিএল) নামে কোম্পানি গঠিত হয়। এই কোম্পানির অধীনে ১৩২০ মেগাওয়াট মৈত্রী সুপার থার্মাল পাওয়ার প্রজেক্ট (রামপাল) নামে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মান শুরু হয়। রমাপাল উপজেলার রাজনগর ও গৌরম্ভা ইউনিয়নের সাপমারী কৈ-গর্দ্দাশকাঠি মৌজায় ১ হাজার ৩৪ একর জমি অধিগ্রহণ শেষে ১৬ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ শুরু হয়। ২০১৩ সালের ৫ অক্টোবর কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা থেকে রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপরই শুরু হয় জমি ভরাট ও সড়ক নির্মাণের কাজ। প্রায় ৯ বছর বিশলা কর্মেযজ্ঞ শেষে বানিজ্যিকভাবে উৎপাদন শুরু করে প্রতিষ্ঠানটি।  ২০২২ সালের ১৪ আগস্ট টারবাইন-এ স্টিম ডাম্পিং এবং একদিন পরে ১৫ আগস্ট জাতীয় গ্রীডের সাথে পরীক্ষামূলক বিদ্যুৎ সরবরাহ (ট্রান্সমিশন) শুরু করা হয়।  ১৭ ডিসেম্বর থেকে  উৎপদিত বিদ্যুৎ  জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হওয়া শুরু হয়। তবে চলতি বছর ১৪ জানুয়ারি থেকে কয়লা সংকটে বন্ধ রয়েছে রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রথম ইউনিটের উৎপাদন।