মধ্যরাতে নদী ভাঙনে কোটি টাকার ক্ষতি

এখন সময়: বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল , ২০২৪, ০৪:৪২:১৯ পিএম

ডুমুরিয়া (খুলনা) প্রতিনিধি: খুলনার ডুমুরিয়ায় বাদুরগাছি গ্রামে মধ্যরাতে ভয়াবহ নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে। বাঁধ ভেঙে তেলিগাতি নদীর জোয়ারে পানিতে বোরো ধান, মৎস্য ঘেরসহ দুই শতাধিক বিঘা ফসলি জমি তলিয়ে একাকার হয়ে গেছে। এতে কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে এলাকাবাসী জানিয়েছেন।

জানা যায়, উপজেলার শোভনা ইউনিয়নের তেলিগাতি নদীর পাশ দিয়ে ভেড়ি বাঁধটির প্রায় সাড়ে ৩ কিলোমিটার পর্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে। ইতোপূর্বে এলজিইডি’র ’মাধ্যমে ১৬ লাখ টাকা বরাদ্দে বাঁধ মেরামতে কাজ হলেও অনেক জায়গায় বাঁধটি দুর্বল আছে। ফলে মঙ্গলবার মধ্যরাতে বাদুরগাছা গ্রামের উত্তরপাড়ায় দুর্বল ওই পয়েন্ট জোয়ারের চাপে ভেঙে যায়। প্রায় ৩০ ফুট বাঁধ ভেঙে রাত দেড়টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত ভিতরে জল ঢোকে। পানিতে তলিয়ে গেছে বোরো ধান, মৎস্য ঘেরসহ দুই শতাধিক বিঘা ফসলি জমি। নদী বেষ্টিত এ এলাকার মানুষকে গত কয়েক বছর ধরে নদী ভাঙনের সাথে লড়াই করে বেঁচে থাকতে হচ্ছে। 

স্থানীয়রা জানান, ঘটনার রাতে মান্দারতলায় আমরা গ্রামবাসী যজ্ঞ অনুষ্ঠানে ছিলাম। রাত দেড়টার দিকে সংবাদ পাই বাদুরগাছি উত্তরপাড়ায় বাঁধ ভেঙে ভিতরে জল ঢুকছে। দ্রুত একে অপরের মাধ্যমে খবর পেয়ে বাদুরগাছি-বাগআচড়াসহ পাশর্^বর্তী গ্রামের ২/৩’শ মানুষ স্বেচ্ছায় বাঁধ মেরামত কাজে অংশ নেয়। একটানা দিনরাত কাজ শেষে দুপুরের দিকে জোয়ারের আগে বাঁধ মেরামত হয়।

বাদুরগাছির নির্মল কান্তি মন্ডল জানান, আশু বাঁধ মেরামত করা হয়েছে। তবে ভাঙ্গন আতংক কাটছে না আমাদের। এলাকার মানুষ নাওয়া-খাওয়া ছেড়ে অবস্থান নিয়েছে বাঁধের উপরে। শতশত বিঘা ধান ক্ষেত ও ঘের বেড়ি সব তলিয়ে গেছে। বাঁধটি অতি দুর্বল কখন যে আবার কি হয় সেই আতঙ্কে রয়েছে এলাকার মানুষ।

শোভনা ইউপি চেয়ারম্যান সুরঞ্জিত কুমার বৈদ্য বলেন, বাঁধ ভাঙা জোয়ারের পানিতে বোরো ধান, মৎস্য ঘেরসহ দুই শতাধিক বিঘা ফসলি জমি তলিয়ে কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। সারারাত এলাকার লোকজন নিয়ে বাঁধের উপর অবস্থান করেছি। ভোরে জোয়ারের চাপ কিছুটা কমলে কাজ শুরু করা হয়। এখানে বাঁধ মেরামত কাজের জন্য রাখা বালি বর্তি জিও ব্যাগ ছিলো অনেক। তাই দিয়ে দ্রুত আটকানো সম্ভব হয়েছে। তা না হলে আরো অনেক বড় ক্ষতি হয়ে যেতো। তিনি বলেন, ভাঙন এলাকায় মাটির সংকট থাকায় জিয়েলতলার পার থেকে ৩টি ট্রলারে করে মাটি এনে বাঁধ মেরামত করেতে হয়েছে। 

এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী মো. রবিউল ইসলাম বলেন, বাঁধটি দূর্বলের কারণে প্রতিবছর একই জায়গায় ভাঙন কবলিত হয়। বাগআঁচড়া বাদুরগাছা পানি সমবায় সমিতির আবেদনের প্রেক্ষিতে এলজিইডি থেকে ভাঙন প্রতিরোধে ১১শ’ মিটার পর্যন্ত বাঁধটি মেরামতে ২ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। যার কাজ চলমান রয়েছে। আমরা এটাকে একটা পাইলট প্রজেক্ট হিসেবে কাজ করছি।’