যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে রোগী সেবার নামে বাণিজ্যের ধান্দা !

এখন সময়: বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ , ২০২৪, ০৭:৫২:২৯ পিএম

 

বিল্লাল হোসেন: যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের সুনাম নষ্ট করছে বহিরাগত কর্মচারীরা। রোগী সেবার নামে ঢুকে তারা বাণিজ্যের ধান্দায় ব্যস্ত থাকে। রোগী জিম্মি করে বাণিজ্যের পাশাপাশি তারা সরকারি অর্থ লোপাট করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। ক্যাশ কাউন্টারের রশিদ ছাড়া পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য নগদ টাকা নেয়ার সময় হাসপাতাল তত্ত্বাবধায়কের কাছে হাতেনাতে ধরা পড়েছেন শাহিন নামে এক বহিরাগত কর্মচারী। আবার ২শ টাকার এক্সরে করার জন্য রোগীকে ভুল বুঝিয়ে সাড়ে ৩শ টাকা আদায় করেছে বহিরাগত আরেক কর্মচারী রিপন।

জানা গেছে, ২০১৮ সালের ১ জানুয়ারি প্রথমবারের মতো ৪২ বহিরাগতকে হাসপাতালের কাজের সুযোগ করে দেন তখনকার কর্মকর্তারা। বর্তমানে সরকারি এই হাসপাতালে বহিরাগতদের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯৫ জন। তারা স্পেশাল কর্মচারী হিসেবে পরিচিত। বহিরাগতরা বর্হিবিভাগ ও অন্তর্বিভাগে দায়িত্ব পালন করেন।

অভিযোগ উঠেছে, স্পেশাল কর্মচারীরা স্বেচ্ছায় হাসপাতালে ঢুকে অর্থ আয়ের ধান্দায় ব্যস্ত রয়েছে। তারা টাকা ছাড়া কোনো কাজ করেন না। রোগী ও স্বজনদের জিম্মি করে বাণিজ্যের পাশাপাশি সরকারি অর্থ লোপাট করছেন বলে অভিযোগ। সূত্র জানায়, কয়েক দিন আগে হাসপাতালের নাক কান গলা বিভাগে দায়িত্বপালনকারী বহিরাগত কর্মচারী রিপন এক রোগীর কাছ এক্সরে করানো বাবদ সাড়ে ৩শ টাকা আদায় করেছে। অথচ ওই রোগীর চিকিৎসাপত্রে এক্সরে করার জন্য চিকিৎসকের কোনো নির্দেশনা ছিলো না। প্রতারিত ওই রোগী রিপনের বিরুদ্ধে হাসপাতালের কর্মকর্তাদের কাছে অভিযোগ করেছেন।  এছাড়া প্যাথলজি বিভাগে দায়িত্ব পালনকারী শাহিন নামে এক কর্মচারী ক্যাশ কাউন্টারের রশিদ ছাড়া রোগীর কাছ থেকে নগদ টাকা নেয়ার সময় তত্ত্বাবধায়কের হাতে ধরা পড়েছেন। অভিযোগ উঠেছে, রিপন ও শাহিনের মতো অধিকাংশ বহিরাগত কর্মচারীর টার্গেট হলো অর্থবাণিজ্য করা। রোগী সেবা পাক আর না পাক তাদের পকেট ভরতেই হবে। সরকারিভাবে নিয়োগ পাওয়া কর্মচারিরা একটু কৌশলে আর বহিরাগতরা প্রকাশ্যে অর্থবাণিজ্যে লিপ্ত রয়েছেন। দীর্ঘদিন ধরে তারা এই অবৈধ বাণিজ্য চলে আসছে। কিন্তু বর্তমানে বাণিজ্যে বেড়েছে কযেকগুণে। বিভিন্ন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রোগীর স্বজনরা জানিয়েছেন, দায়িত্বরত কর্মচারীকে কোন কাজের কথা বললেই তারা টাকার প্রশ্ন তোলেন। অসহায় মুহূর্তে তারাও কর্মচারিদের টাকা দিতে বাঁধ্য হন। কেননা তাদের চাহিদামতো টাকা না দিলেই পরবর্তীতে আর কোন কাজ করেন না । ডাকলেও রোগীর কাছে আসতে চাইনা। এমনকি মারমুখি আচরণ করা হয়।  বর্তমানে হাসপাতালে টাকা ছাড়া কোন কাজ হয়না। বহিরাগত কর্মচারীদের অনিয়মে হাসপাতালটি সুনাম হারাচ্ছে। এই বিষয়ে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক  ডা. হারুন অর রশিদ জানান, রোগী ও স্বজনদের জিম্মি করে বাণিজ্যের পাশাপাশি সরকারি অর্থ লোপাট করছেন বলে প্রমান পেয়েছেন। শাহিন নামে এক কর্মচারীকে টাকাসহ হাতে নাতে ধরেছেন। আরেক কর্মচারী রিপনের বাণিজ্যের বিষয়টি তিনি শুনেছেন। আগামী সোমবার বহিরাগতদের অর্থবাণিজ্য নিয়ে মিটিং করা হবে। মিটিংয়ের মাধ্যমে শাহিনকে হাসপাতাল থেকে বের করা হবে। তিনি আরও জানান, বহিরাগত কর্মচারীদের অবৈধ বাণিজ্য বন্ধে কঠোর ভূমিকা নেয়া হবে।