ডুমুরিয়ায় ভারীবর্ষণে মৎস্য ঘের ও শাকসবজির ব্যাপক ক্ষতি

সুব্রত কুমার ফৌজদার, ডুমুরিয়া: ডুমুরিয়ায় শুক্রবার থেকে শুরু হওয়া ৪ দিনের ভারীবর্ষণে চারদিকে প্লাবিত হয়েছে। এতে রাস্তাঘাট, মৎস্য ঘেরসহ শাকসবজি ও বসতবাড়ির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। দেয়াল চাপায় সাড়ে ৪ বছরের এক শিশুর মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। 

জানা যায়, ৪ দিনের একনাগাড়ে বৃষ্টির সাথে বয়ে চলা ঝড়ো হাওয়ায় ডুমুরিয়া এলাকায় প্রায় অধিকাংশ মাছের ঘের ও ফসলি জমি তলিয়ে একাকার হয়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অনেক কাঁচা বসতবাড়ির। শনিবার ধামালিয়া ইউনিয়নে টোলনা গ্রামে বসতঘরের দেয়াল চাপা পড়ে আমিরুল বিশ^াসের সাড়ে ৪ বছরের ছেলে ইছানুর বিশ^াস মারা গেছে।

এদিকে পানি নিষ্কাশনের সুব্যবস্থা না থাকার কারণে ক্রমান্বয়ে প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। ঘেরের বাঁধ তলিয়ে যাওয়ার কারণে সবজি ক্ষেতের অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে বলে কৃষকরা জানিয়েছেন। গুটুদিয়ার কৃষক শেখ আব্দুর রশিদ জানান, তার ২ বিঘা জমির মাছের ঘেরের বেড়ির উপর হাতখানেক পানি। মাছ তো ভেসে গেছে, এখন সবজি ক্ষেতও নষ্ট হচ্ছে।

উপজেলা বিএনপির আহবায়ক মোল্যা মোশাররফ হোসেন মফিজ জানান, স্লুইস গেটগুলো অকার্যকর থাকা, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের গাফিলতিসহ অসময়ের অতিবৃষ্টির কারণে ব্যাপক জলাবদ্ধতায় পরিণত হয়েছে ডুমুরিয়া উপজেলার প্রায় প্রত্যেকটি অঞ্চল। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার বেশি পানি নিষ্কাশন হয় সোলমারি স্লুইজ গেট দিয়। সোলমারী ও ষষ্ঠীতলা স্লুইস গেটের মুখে পলি অপসারণ করতে না পারলে জলাবদ্ধতা আরো ভয়াবহ হবে। মাগুরাঘোনার কাঞ্চনপুর এলাকাতেও জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। নিম্নাঞ্চলের অনেক কাঁচাঘর ভেঙে পড়ছে। আমরা উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে পাউবো কর্তৃপক্ষকে দ্রুত পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করতে বলেছি।

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইনসাদ ইবনে আমিন জানান, টানা বৃষ্টিতে গত রোববার পর্যন্ত ডুমুরিয়া এলাকায় ২ কোটি টাকার বেশি সবজি, ৮ হেক্টর জমির রোপা আমন ধান এবং ১৫ হেক্টর জমির তরমুজসহ শাকসবজির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তবে ক্ষতির পরিমাণ আরো বৃদ্ধি পাবে বলে তিনি জানিয়েছেন।

সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আবু বকর সিদ্দিক জানান, ১২ হাজার ৫৩০ টি পুকুর ও ঘের ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, ৩ হাজার ৫৬০ ম্যাট্টিক টন সাদা মাছ, ৪ হাজার ৬৭০ ম্যাট্টিক টন চিংড়ি এবং কাঁকড়া ভেসে গেছে ৭.৫ মেট্টিক টন। যার আনুমানিক মূল্য ধরা হয়েছে ১শ’ কোটি টাকার বেশি।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আল আমিন জানান, ভারী বৃষ্টিতে উপজেলা ক্যাম্পাসসহ অধিকাংশ এলাকা প্লাবিত হয়ে পড়েছে। আমরা দ্রুত পানি নিষ্কাশনের লক্ষ্যে কাজ করছি।