চৌগাছা প্রতিনিধি: যশোরের চৌগাছা পৌরসভায় পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশন প্রকল্পের অধীনে টয়লেট নির্মাণের নামে ৫ কোটি টাকা লুটপাট করার অভিযোগ উঠেছে। সাবেক পৌর মেয়েরের যোগসাজসে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের নামে পৌরসভার ওয়ার্ক এসিসটেন্ট নিজেই দায়সারভাবে কাজ করে টাকা লুট করেছেন। লুটপাট বাস্তবায়নে অন্যতম সহযোগী ছিলেন উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী।
জানা যায়, বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর চৌগাছা পৌর এলাকায় ৭’শ ৫০ টি টয়লেট নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। যার মধ্যে ১’শ ৩২ টি টয়লেট নির্মান ব্যয় ধরা হয় ৫৫ হাজার ৫’শ টাকা করে এবং বাকি ৬’শ ৭৮ টির প্রত্যেক টয়লেটের নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ৭০ হাজার ৩০০ টাকা করে। সে হিসেবে এ প্রকল্প বাস্তবায়নে ৫ কোটি ৮ লাখ ৩৮ হাজার ৬’শ ২৫ টাকা ব্যয় হয়েছে। ইতোমধ্যে প্রকল্পের নির্মাণ কার্যক্রম শেষ হয়েছে। টয়লেটের সাথে একটি মোটর ও ৩০০ লিটারের একটি পানির ট্যাংকি বরাদ্দ থাকলেও তা দেওয়া হয়নি বলেও অভিযোগ রয়েছে।
প্রকল্পের হিসেব অনুযায়ি পৌরসভার প্রত্যেকটি ওয়ার্ডে ৮৩ টি করে টয়লেট নির্মান কাজ হওয়ার কথা। কিন্তু সরেজমিনে বাস্তবতা খুঁজে পাওয়া যায়নি। যা দুইয়েকটি পাওয়া গেছে সেখানে নিম্নমানের সামগ্রি ও আংশিক কাজ করা হয়েছে।
একটি সূত্র জানায় তালিকা ধরে অনুসন্ধান করলে ৭’শ ৫০ টি টয়লেটের সন্ধান পাওয়া যাবেনা। টয়লেট নির্মান না করেই অর্থ লুটপাট করেছেন সাবেক পৌর মেয়র নুর উদ্দীন আল মামুন হিমেল ও তার সহযোগীরা।
এ বিষয়ে পৗরসভায় কার্যসহকারি লিটনের দপ্তরে গিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা আমাদের বিষয় না। এই কাজ জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের, তারাই বলতে পারবে কিভাবে কাজ করা হয়েছে।
উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী ফেরদৌসি খানমের কাছে ‘ক’ ফরমের মাধ্যমে প্রকল্পের সুবিধাভোগীদের নামের তালিকা চাইলে তিনি তালিকা দিতে নানা রকম তালবাহান করেন। এক পর্যায় তিনি ঠিকানা বিহীন মনগড়া নামের তালিকা সরবরাহ করেন যা বাস্তবতার সাথে কোনো মিল নেই।
কয়েকজন সুবিধাভোগী জানান, টয়লেট নির্মানে সঠিক পরিমাপ অনুসরন করা হয়নি। এ ছাড়া কম ওয়াটের মোটর দেওয়ায় পানি উঠাতেও সমস্যা হচ্ছে তাদের।
সঠিক নিয়ম মেনেই শতভাগ কাজ শেষ করা হয়েছে দাবি করে টয়লেট নির্মাণের দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিক সাহাবুদ্দিন বলেন, কাজ না করলে বিল কিভাবে তুলেছি।
জনস্বাস্থ্য ও প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপ-সহকারী ফেরদৌসি খানম দাবি করেন, নিয়ম মেনেই শতভাগ কাজ শেষ করা হয়েছে।
পৌরপ্রশাসক ও উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) তাসনিম জাহান বলেন, ‘আমি দায়িত্ব পাওয়ার আগে এই কাজ শেষ হয়েছে। তার পরেও খোঁজ নিয়ে দেখবেন বলে জানান তিনি’।