কালিগঞ্জ (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি: কালিগঞ্জের কৃষ্ণনগরে বন্ধন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবহেলায় এক নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে। জরুরি চিকিৎসা সেবার আশ্বাসে রোগী ভর্তি করলেও সেখানে নেই চিকিৎসক, নার্স কিংবা প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসামগ্রী- এমন অভিযোগ উঠেছে ভুক্তভোগী পরিবার ও সচেতন মহলের পক্ষ থেকে। নবজাতক মৃত্যুর ঘটনার প্রতিকার ও আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য শিশুর বাবা সোমবার উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
অভিযোগে মৃত নবজাতকের বাবা উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের রামনগর গ্রামের মোস্তাকিম বিল্লাহ উল্লেখ করেন, তার স্ত্রী মনিরার প্রসবযন্ত্রণা শুরু হলে তাকে শনিবার (২৪ মে) বিকেল ৪টার দিকে কৃষ্ণনগর বাজার সংলগ্ন বন্ধন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ সময় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ প্রসূতির সকল চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করার আশ্বাস দিলেও বাস্তবতা ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন। রাতে প্রসূতির শারীরিক জটিলতা দেখা দিলে হাসপাতালের কোনো চিকিৎসক বা নার্স রোগীর পাশে আসেননি। যন্ত্রণায় ছটফট করলেও দিতে পারেননি প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবা। রাত সাড়ে ৩ টার দিকে অপারেশনের মাধ্যমে বাচ্চা প্রসব করানোর জন্য বারবার দাবি জানালেও চিকিৎসক কিংবা নার্স না থাকায় সেটা সম্ভব হয়নি। একপর্যায়ে যন্ত্রণায় ছটফট করা অবস্থায় একজন আয়ার তত্ত্বাবধানে ভোর ৪ টার দিকে এক ছেলে শিশুর জন্ম হয়। তবে প্রয়োজনীয় সেবা নিশ্চিত করতে না পারায় প্রসূতি বেঁচে গেলেও প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম ও অক্সিজেন না পেয়ে মারা যায় শিশুটি। মর্মান্তিক এ ঘটনার পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলতে গেলে হাসপাতালের পরিচালকসহ অন্যান্য স্টাফরা পরিবারের সদস্যদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করে হাসপাতাল থেকে বের করে দেন।
শিশুটির বাবা আরও বলেন, বন্ধন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় চিকিৎসক, নার্স ও চিকিৎসা সামগ্রীর ব্যবস্থা না থাকা সত্ত্বেও সাধারণ মানুষকে প্রতারণার হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে জীবন ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দিচ্ছেন। এ ধরনের মানহীন প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে বন্ধন হাসপাতালের পরিচালক আলমগীর হোসেন বলেন, চিকিৎসার অবহেলার অভিযোগ সঠিক নয়। প্রসূতি স্বাভাবিকভাবে মৃত বাচ্চা প্রসব করেছে। তবে সে সময় দায়িত্বরত চিকিৎসক কে ছিলেন সে প্রশ্ন করলে তিনি এর জবাব দেননি।
কালিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার অনুজা মণ্ডল বলেন, বন্ধন হাসপাতালের ভুল চিকিৎসায় রোগী মারা গিয়েছে এমন অভিযোগ পেয়েছি। এ বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। তদন্ত শেষে ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি আরো বলেন, উপজেলার বিভিন্ন জায়গার নিবন্ধন ছাড়া ক্লিনিক, হাসপাতাল গড়ে উঠেছে। এ বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা কমিটির মিটিংয়ে আলোচনা হয়েছে। আমরা ব্যবস্থা নিতে সিভিল সার্জনকে চিঠি দিয়েছি।