Ad for sale 100 x 870 Position (1)
Position (1)

❒অর্ধশতাধিক গ্রামে জলাবদ্ধতার শঙ্কায় প্রতিবাদ

মণিরামপুরে ঘের করে ২০ বিলের পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধের চেষ্টা

এখন সময়: রবিবার, ১৫ জুন , ২০২৫, ০৪:০১:৩১ এম

 

 

নূরুল হক, মণিরামপুর (যশোর): মণিরামপুরের রাজগঞ্জ এলাকার ২০ বিলের পানি নিষ্কাশনের একমাত্র পথ বালিয়ার খালের মোহনায় অবৈধভাবে মৎস্যঘের নির্মাণ চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এখানে মৎস্যঘের নির্মাণ করা হলে ২০ বিলসহ প্রায় অর্ধশতাধিক গ্রামে স্থায়ী জলাবদ্ধতার আশঙ্কায় এলাকাবাসীর মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। ফলে মৎস্যঘের নির্মাণ চেষ্টার প্রতিবাদে এলাকাবাসী বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছে।

কৃষকসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের সাথে কথা বলে জানা যায়, উপজেলার হেলাঞ্চী, হানুয়ার, খেদাপাড়া, জালালপুর, গালদা, খড়িঞ্চী, রোহিতা, দিঘীরপাড়, হরিহরনগর, কোদলাপাড়া, তেতুলীয়া, বসন্তপুর, গাংগুলিয়াসহ ২০ বিলের পানি নিষ্কাশনের জন্য ১৯৭৯ সালে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান হেলাঞ্চী-হানুয়ারের মাঝ দিয়ে বালিয়ার খাল খননের উদ্যোগ গ্রহণ করেন। সে মোতাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান খননের উদ্বোধন করেন। খেদাপাড়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতিসহ অনেকে জানান, খননের পর পশ্চিমাঞ্চের ২০ বিলের পানি বালিয়ার খাল দিয়ে প্রবাহিত হয়ে কপোতাক্ষ নদে পড়ে। সেই থেকে ২০ বিলে কৃষকরা কাঙ্খিত ফসল উৎপাদন করে আসছে। কিন্তু অভিযোগ রয়েছে উপজেলার মশ্বিমনগর এলাকার ব্যবসায়ী বিমল বিশ্¦াস, হানুয়ারের রবিউল ইসলামসহ তিন ব্যক্তির যৌথ মালিকানায় বালিয়ার খালের মোহনায় প্রায় শতাধিক বিঘা জমি লিজ নিয়ে গত ১০মে মৎস্যঘের নির্মাণ শুরু করেন। ফসলি জমিতে ঘের নির্মাণ করতে হলে উপজেলা ভূমি ও পানি ব্যবস্থাপনা কমিটির অনুমোদন নেয়ার বিধান থাকলেও তা মানা হয়নি। তার ওপর বালিয়ার খালের মোহনায় ঘের নির্মাণ করা হলে বর্ষা মৌসুমে ২০ বিলের পানি নিষ্কাশনে বাধাগ্রস্ত হবে। ফলে বিলসমুহ ও তার আশপাশের অন্তত: অর্ধশতাধিক গ্রামে দেখা দেবে জলাবদ্ধতার। যে কারণে এলাকাবাসী এ ঘের নির্মাণে বাঁধ দেন।

এলাকার জাহিদুল ইসলাম, সোহান, াশরাফ হোসেন, মোদাচ্ছের আলী, এরশাদ আলীসহ অধিকাংশ কৃষকের অভিযোগ ঘের নির্মাণে বাধা দেয়ার পর রাতের অন্ধকারে ৬/৭  স্কেভেটর দিয়ে মাটি কাটা শুরু করেন। স্কুল শিক্ষক শামছুজ্জামান জানান, খালের গা ঘেষে গতবছর ছোট একটি ঘের নির্মাণ করেন এলাকার বুলবুল ও আব্দুল লতিফ নামে দুই ব্যবসায়ী। খেদাপাড়া ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আজিবর রহমান এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল আলিম জিন্নাহ জানান, বিমল বিশ্বাসের নেতৃত্বে খালের মোহনায় শতাধিক বিঘা জমিতে প্রশাসনের কোন অনুমতি ছাড়াই ঘের নির্মাণ চেষ্টার প্রতিবাদে ইতোমধ্যে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর অভিযোগ দিয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করা হয়েছে। ঝাপা ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা আসলাম হোসেন জানান, উর্ধতন কর্মকর্তার নির্দেশে সরেজমিন তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতা পেয়ে তাদের ঘের নির্মাণ করতে নিষেধ করা হয়। কিন্তু তারা কোন কর্ণপাত করেননি। ফলে আসলাম হোসেন বাদী হয়ে ১৭ মে জাকাত আলী, রুহুল আমিন, সুবোধ চন্দ্র, কেতু চন্দ্র, অনন্ত লাল, আব্দুল রহমান, সরোয়ার হোসেনসহ ১১ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় একটি অভিযোগ করেন। কিন্তু এ ব্যাপারে পুলিশ কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি বলে এলাকাবাসী অভিযোগ করেন। তবে মণিরামপুর থানায় সদ্য যোগদানকারী অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রবিউল ইসলাম খান বলেন, অভিযোগের ব্যাপারে তদন্ত চলছে। প্রতিবেদন পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ দিকে বুধবার বিকেলে ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী অফিসার সহকারী কমিশনার (ভূমি) নিয়াজ মাখদুম ও সিনিয়র মৎস্য অফিসার আমিনুল হক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ সময় কয়েক হাজার বিক্ষোভকারী খালপাড়ে অবস্থান নিয়ে দাবি জানান, যেকোন মূল্যে ঘের খনন বন্ধ করার।  সহকারী কমিশনার নিয়াজ মাখদুম বলেন, আমরা যেয়ে ঘের নির্মাণে সংশ্লিষ্ট কাউকে পাইনি। তবে জনস্বার্থে এ ঘের নির্মাণ বন্ধ করতে করণীয় সব পদক্ষেপ নেয়া হবে। এছাড়া নির্মিত ঘের মাটি দিয়ে ভরাট করতে বৃহস্পতিবার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। ঘের মালিক বিমল বিশ্বাস বলেন, বিনাঅনুমতিতে ঘের নির্মাণ করতে গিয়ে এলাকাবাসীর বাঁধার মুখে অনেক লোকসানের সম্মুখিন হয়েছি। এখন আবার মাটি ভরাট করতে হলে আমি অর্থনৈতিক ভাবে ধ্বংস হয়ে যাবো।   

Ad for sale 100 x 870 Position (2)
Position (2)
Ad for sale 225 x 270 Position (3)
Position (3)
Ad for sale 225 x 270 Position (4)
Position (4)