মাগুরা প্রতিনিধি : ‘পুলিশে সেবার ব্রতে চাকরি’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে বাংলাদেশ পুলিশের দুর্নীতি মুক্ত, স্বচ্ছ ও মেধানির্ভর নিয়োগ প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে মাগুরায় সম্পন্ন হলো ২০২৫ সালের ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) নিয়োগের চূড়ান্ত পর্যায়। এই প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় সম্পূর্ণ যোগ্যতার ভিত্তিতে সুপারিশ পেয়েছেন ১৩ জন কনস্টেবল প্রার্থী, যারা মাত্র ১৬০ টাকার সরকার নির্ধারিত ফি প্রদান করে এই সুযোগ লাভ করেন।
মাগুরা পুলিশ লাইন্সে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে নিয়োগ বোর্ডের সভাপতি ও পুলিশ সুপার মিনা মাহমুদা, বিপিএম, পিপিএম আনুষ্ঠানিকভাবে চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা করেন। তিনি জানান, সম্পূর্ণ মেধা, যোগ্যতা এবং স্বচ্ছতার ভিত্তিতে এই নিয়োগ সম্পন্ন হয়েছে। কোনো ধরনের তদবির, ঘুষ কিংবা দালালচক্রের হস্তক্ষেপ ছাড়াই ১৩ জন প্রার্থী চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত হয়েছেন।
পুলিশ সুপার মিনা মাহমুদা বলেন, “চাকরি পাওয়ার জন্য অনেকেই ঘুষ বা সুপারিশের চিন্তা করেন, আর এই দুর্বলতার সুযোগ নেয় প্রতারক চক্র। কিন্তু আমরা ছয়বারের মতো এবারও জিরো টলারেন্স নীতিতে অটল ছিলাম। একমাত্র মেধা ও যোগ্যতাই চাকরি পাওয়ার মূল ভিত্তি ছিল।”গত ১৯-২১ এপ্রিল প্রার্থীদের কাগজপত্র যাচাই ও শারীরিক সক্ষমতা পরীক্ষার মধ্য দিয়ে নিয়োগ প্রক্রিয়ার সূচনা হয়। এরপর ১৪৩ জন প্রার্থী লিখিত পরীক্ষায় অংশ নেন, যার খাতা পুলিশ সদর দপ্তরে মূল্যায়নের জন্য পাঠানো হয়। লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের মধ্যে ২৩ জনকে মৌখিক পরীক্ষায় আহ্বান জানানো হয় এবং শেষ পর্যন্ত ১৩ জন প্রার্থীকে চূড়ান্তভাবে সুপারিশ করা হয়। পুলিশ সুপার মিনা মাহমুদা আরও বলেন, “আমরা আগে থেকেই জনগণকে সতর্ক করেছি যে, নিয়োগ হবে সম্পূর্ণ মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে। কোনো অবৈধ আর্থিক লেনদেন প্রার্থীর অযোগ্যতা বলে বিবেচিত হবে। সাইবার ও মাঠ পর্যায়ে গোয়েন্দা তৎপরতা ছিল পুরো সময়জুড়ে, যাতে কেউ প্রতারিত না হন।”এ সময় নিয়োগ বোর্ডের অন্যান্য সদস্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এ-সার্কেল) মোঃ হাফিজুর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মেহেরপুর) আব্দুল করিম এবং অন্যান্য দায়িত্বশীল পুলিশ কর্মকর্তারা।
মাগুরা জেলা পুলিশের এই সফল, স্বচ্ছ এবং দুর্নীতিমুক্ত নিয়োগ প্রক্রিয়া জেলার জনগণের আস্থার প্রতীক হয়ে উঠেছে। জেলা পুলিশ প্রধান তাঁর বক্তব্যে মাগুরাবাসীকে ধন্যবাদ জানিয়ে ভবিষ্যতেও আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় জনগণের পাশে থাকার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।