Ad for sale 100 x 870 Position (1)
Position (1)

অভিজাত খাবার খেলেন সুবিধাবঞ্চিত মানুষ, নিজ হাতে পরিবেশন অমিতের

এখন সময়: রবিবার, ১৫ জুন , ২০২৫, ০২:৩১:৩৮ এম

নিজস্ব প্রতিবেদক: যশোর শহরতলী বিরামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে বিদ্যালয় চলাকালীন সময়ে ঝাল মুড়ি বিক্রি করেন ষাটোর্ধ্ব আনোয়ারা বেগম। এ থেকে প্রতিদিন যা আয় করেন, তা দিয়ে মাছ কিংবা মাংস দুরে থাক সামন্য ডাল ভাতও পেট ভরে খেতে পারেন না। সেই আনোয়ারা বেগমকে বৃহস্পতিবার দুপুরে নানান পদের বাহারি খাবার খাওয়ালো জয়ফুল জার্নি ফর দ্যা পিপল নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। পবিত্র ঈদুল আজহার আনন্দ সমাজের সুবিধা বঞ্চিত মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দিতে যশোর শহরের (কাচ্চি কুইন) নামের একটি অভিজাত রেঁস্তোরায় বিশেষ মেহমানদারির আয়োজন করে সংগঠনটি। যেখানে এক সাথে শহরের তিন শতাধিক সুবিধা বঞ্চিত মানুষ দুপুরের খাবার খেয়ে তৃপ্তির ঢেকুর তোলেন। লালদিঘীর পূর্ব পাড়ের ১০ জন ব্যবসায়ীর জয়ফুল জার্নি ফর দ্যা পিপল নামের ওই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বিশেষ মেহমান দারিতে খাবার তালিকায় ছিল অভিজাত সব খাবার। 

আগে থেকে বিশেষ দাওয়াত কার্ডের মাধ্যমে মেহমানদের আমন্ত্রণ জানানো হয়। বৃহস্পতিবার দুপুর বেলা মেহমানরা নির্ধারিত স্থানে হাজির হন। মেহমান দারির স্থানে ঢুকতেই ফুল দিয়ে তাদের বরণ করে নেওয়া হয়। তাদেরকে খাবার টেবিলে নিয়ে খাবার টেবিলে বসানো হয়। এরপর মেহমানদের নানান পদের বাহারি খাবার দিয়ে আপ্যায়ন করা হয়। বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক (খুলনা বিভাগ) অনিন্দ্য ইসলাম অমিত নিজ হাতে মেহমানদের প্লেটে খাবার পরিবেশন করেন। তাদের খাবার তালিকায় ছিল সাদা পোলও ভাত থেকে শুরু করে দিয়ে ডাল রান্না, মুরগির রোস্ট , গরুর মাংস। সবশেষে মেহমানদের মজাদার আইসক্রিম খেতে দেওয়া হয়।

জয়ফুল জার্নি ফর দ্যা পিপল নামের ওই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের আমন্ত্রণে অংশ নেওয়া সড়ক দুর্ঘটনায় পা হারানো রিক্সা চালক মঙ্গল গাজী বলেন, প্রতিদিন শহরের রিক্সা চালাই। এই হোটিলেও  (কাচ্চি কুইন রেস্তোরায়) আমার রিক্সায় চড়ি অনেকে খাতি আসে। আজ দুপুর সময় এমনি যাতিলাম তাই এক ভাই রিক্সা দাঁড় করায় হাতে একটা কার্ড দিয়ে কইলো আজকে এহেনে বসে খাওয়ার কথা কইলো। এরা আমরা পেট ভরি খাতি দেছে। ভাত, দুই পদের গোস্ত পেট ভরি খাইছি।

শহরের বেজপাড়ার ছাঁয়া বিথির মোড়ের বাসিন্দা দৃষ্টি শক্তি হারনো গোলাম মোস্তফা শুকুরিয়া আদার করে বলেন, বিটারা আমার পেট ভরি খাওয়াইছে। মসজিদে মসজিদে সাহায্য আদায় করি খাই। ভালো খাবার খাওয়ায় সামর্থ্য আমার নেই। এরা আমারে যা খাওয়াইছে আমি খুব খুশি হইছি।

হালিমা (৬৫) নামের এক ভিক্ষুক বলেন, শহরের মানুষির কাছে চাইয়ে চিনতে খাই। অনেকে দুই এক পয়সা দেয় কেউ খাতি দেয় না। বড়লোকগের বাড়ির সামনে অনুষ্ঠান হলি যাই, তারা তাড়াই খাতি দেয় না। আজকি এমনি সাহায্য চাতিলাম, তখন এই বিটারা হাত ধরি নিয়ে আসি কইলো চাচি তুমি দুপুরি খাবা। খুব যন্ত করি পেট পুরি খাতি দেছে।

বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক (খুলনা বিভাগ) অনিন্দ্য ইসলাম অমিত বলেন, জয় ফুল জার্নি ফর দ্যা পিপল নামের সামাজিক সংগঠন পবিত্র ঈদুল আজহার আনন্দ সমাজের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মাঝে ছড়িয়ে দেবার জন্য শহরের অভিজাত রেস্তোরায় খাবারের আয়োজন করে। বিগত ঈদুল ফিতরেও তারা ঠিক এ রকম একটি আয়োজন করেছিল। আমরা সাধারণ বন্ধু বান্ধব আত্মীয় স্বজনদের মাঝে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করি। কিন্তু কোন আনন্দই অর্থবহ হবে না, যদি সমাজের সকল শ্রেণীর মাঝে ছড়িয়ে না পড়ে। তারা সেই দৃষ্টি ভঙ্গি থেকে সমাজের সকল স্তরের বিশেষ করে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মাঝে ঈদের আনন্দ ছড়িয়ে কিংবা ভাগাভাগি করে নেবার জন্য যে আয়োজন করেছে। আমি মনে করি তা থেকে সকলে শিক্ষা গ্রহণের প্রয়োজন আছে।

এসময় উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন খোকন, দৈনিক লোকসমাজ পত্রিকার প্রকাশক শান্তনু ইসলাম সুমিত, জয়ফুল জার্নি ফর দ্যা পিপল নামের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের উপদেষ্টা এহতেশামুল হক পাপ্পু, সদস্য রিয়াদ উদ্দিন তুহিন, মিরাজুল ইসলাম মিন্টু, মনোয়ার হোসেন, কৃষ্ণপাল, সোহেল মাহমুদ, বোরহান উদ্দিন, হাসান শাহরিয়ার প্রমুখ।

মেহমানদারির আয়োজক সংগঠনের সদস্য শাহরিয়ার রহমান হেলাল বলেন, আমরা চাই সমাজের সকল মানুষের মাঝে ঈদের আনন্দ ছড়িয়ে যাক। সমাজে ধনী গরীবের কোন বৈষম্য থাকবে না। সেই অভিপ্রায়ে আমরা সুবিধা বঞ্চিত মানুষের নিয়ে ঈদুর আজহার বিশেষ আয়োজন করেছি। আমরা সাধ্যমতো তাদেরকে এক বেলা পেট ভরে খাওয়ানোর চেষ্টা করেছি। আমাদের এই চেষ্টা আগামীতেও অব্যাহত থাকবে।

 

 

Ad for sale 100 x 870 Position (2)
Position (2)
Ad for sale 225 x 270 Position (3)
Position (3)
Ad for sale 225 x 270 Position (4)
Position (4)