Ad for sale 100 x 870 Position (1)
Position (1)

বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাত : জালিয়াতের সাম্রাজ্য আর সৎ উদ্যোক্তার মৃত্যুকূপ

এখন সময়: মঙ্গলবার, ১৮ নভেম্বর , ২০২৫, ১২:০৮:০৪ এম

ব্যারিস্টার ওয়ালিউর রহমান খান : বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাত আজ জাতীয় নিরাপত্তার সমান সংকটে। একটি দেশের অর্থনীতির অন্যতম মেরুদন্ড হচ্ছে ব্যাংকিং খাত। দুর্নীতি,স্বেচ্ছাচারিতা,অবৈধ সরকারকে টিকিয়ে রাখার প্রয়াস, ও নানাবিধ নিয়ম বহির্ভূত কারণে আজকে বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাত এক চরম সংকট সময় মোকাবেলা করছে। এই সংকটময় সময় কখন শেষ হবে সেটা বলা অনেক কঠিন। কিন্তু এই সংকটকে মোকাবেলা করা ব্যতীত অন্য কোন উপায় আমাদের সামনে খোলা নেই। সংকটকে সামনে নিয়ে, ব্যবসা-বাণিজ্যকে প্রসারিত করা, আমদানি রপ্তানিকে সহজীকরণ করা,উৎপাদন মুখী ব্যবসার উপরে মনোযোগ দেয়া, এবং গতানুগতিক ব্যবসা-বাণিজ্যের সাথে আধুনিকায়ন ব্যবসা কে নিয়ে সঠিকভাবে চিন্তা করা এবং সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নকল্পে সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংক এবং ব্যবসায় মহল যৌথভাবে একনিষ্ঠ হয়ে কার্যক্রম গঠনমূলকভাবে সম্পূর্ণ একনিষ্ঠ পরিকল্পনায় একমাত্র এই সমস্যার সমাধানের গ্রহণযোগ্য মাধ্যম হতে পারে। একদিকে কোটি কোটি টাকা ঋণ ডুবছে, যে টাকার সিংহভাগ বিদেশে পাচার হচ্ছে, বিদেশে প্রাসাদ বানানো হচ্ছে, বেনামের বিলাসবহুল হোটেল রিসোর্ট তৈরি হচ্ছে, বিদেশি নাগরিকত্ব কেনা হচ্ছে — অন্যদিকে সৎ উদ্যোক্তারা যারা সত্যিকার অর্থেই কর্মসংস্থান সৃষ্টি, বাংলাদেশের অর্থনীতি সমৃদ্ধ করার ইচ্ছা, ও নিজেদের সত্যিকার পেশাদার কল্পে ব্যবসা-বাণিজ্য করছেন তাঁরা আজ ব্যবসা বাঁচানোর জন্য নগদ অর্থ বিনিয়োগ করতে না পেরে হাহাকার করছেন। কর্ম হারাচ্ছেন শত শত পেশাজীবী, অনিশ্চিত ভবিষ্যতের ভুগছে ব্যবসা-বাণিজ্যের পুরো খাতটি। এটাই বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ট্র্যাজেডি: যেখানে প্রকৃত ব্যবসা করার ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও প্রকৃত ব্যবসায়ীরা ঋণ পাচ্ছেন না, বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবাহ দিনে দিনে অবর্ণনীয় মাত্রায় কমেছে, আর যারা প্রতারণা করেছে, তারা বিদেশে বিলাসবহুল জীবনযাপন করছেন, হয়তো অট্টহাসি দিচ্ছেন বাংলাদেশের অর্থনীতির এই চ্যালেঞ্জিং অবস্থা দেখে। যে কেউ অর্থনীতির অবস্থাকে ভঙ্গুর কিংবা খারাপ ধরনের কথা বলে সম্মোধিত করতে চেত, কিন্তু আমি বলব যে সম্পূর্ণ চ্যালেঞ্জিং। কঠিন!!! কিন্তু এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণ হওয়া সম্ভব যদি সঠিক পদক্ষেপ সঠিক সময় নেয়া যায়। ঋণের মরণকূপ ২০২৫ সালের মার্চ পর্যন্ত খেলাপি ঋণ দাঁড়িয়েছে ৪,২০,৩৩৫ কোটি টাকা, মোট ঋণের ২৪.১৩%। এক বছরে এই হার দ্বিগুণের বেশি হয়েছে। অর্থাৎ প্রতি চার টাকার মধ্যে একটি টাকা ঋণ খেলাপিতে পরিণত হয়েছে । এই খেলাপি টাকার অনেক টাকা আর ফেরার সম্ভাবনা খুব ক্ষিনো। কিন্তু কিছু ডায়নামিক সিদ্ধান্ত, এবং এক্সট্রাডিনারি কিছু পদক্ষেপ সময়োপযোগী হবে গ্রহণ করলে এই টাকার অনেক টাকা দেশের অর্থনীতিতে যোগ হওয়ার সম্ভব হবে বলে আমি মনে করি। যেমন উদাহরণস্বরূপ বলা যেতে পারে, হলমার্কের সকল প্রতিষ্ঠান অবৈধ ঋণের অভিযোগে বন্ধ হওয়ার পরে এই মুহূর্তে হলমার্কের সকল ফ্যাক্টরিতে শুধুমাত্র জমি এবং কিছু অবকাঠামো ব্যতীত ব্যবহারযোগ্য কোন মেশিনারি নাই বললে চলে। অনেক মেশিনারিজ চুরি হয়ে গিয়েছে সময়ের কালে। ওই সময় হলমার্কের প্রতিষ্ঠানগুলো যদি ছোট ছোট কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের কাছেও কন্টাক্ট ম্যানুফ্যাকচারিং ভাড়া পর্যন্ত দেয়া যেত এ পর্যন্ত টাকা থেকে অসম্ভব ছিল। সরকার যদি ভালো কোন ব্যবসায়ীকে প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ করে খানকে রপ্তানিমুখী হিসেবে তাহলে কে ৩-৪ গুণ পর্যন্ত করা সম্ভব ছিল। এখানে প্রশাসক হিসেবে ভালো ব্যবসায়ীর করার কারণ হচ্ছে, আমাদের দেশের রাজনৈতিক বাস্তবতায় সাধারণত যে কোন প্রতিষ্ঠান স্বায়ত্তশাসন কিংবা সরকারি কোনো প্রতিষ্ঠানে প্রশাসন বলতাম সাধারণত যেকোনো ধরনের সরকারি কর্মকর্তাকে জেনে থাকি। কিন্তু এ ধরনের একটি বড় প্রতিষ্ঠানে অনেক সিদ্ধান্ত অনেক ঝুঁকি নিয়ে নিতে হয় যা একজন সরকারি কর্ম কর্তার পক্ষে নেয়া অনেকটা কঠিন হয়ে পড়ে। মাত্র ১০টি ব্যাংকের কাছেই ৭১% খেলাপি ঋণ কেন্দ্রীভূত। এটি কোনো আর্থিক অসাবধানতা নয়—এটি একটি পরিকল্পিত ধ্বংসযজ্ঞ। ব্যবসা-বাণিজ্যে যেরকম লাভ আছে সেরকম লোকসানও আছে। যেকোনো কারণেই যদি কোন ব্যবসায়ী লোকসানের সম্মুখীন হয় সে ক্ষেত্রে একটি ব্যবসায়ী ঋণ খেলাপি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। কিন্তু বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা সত্যিকার অর্থে বিভিন্নভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন এবং বিভিন্নভাবে পরিণত হয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান খুব শক্ত পদক্ষেপ নিয়েছে। অথচ যারা ইচ্ছাকৃতভাবে অবৈধভাবে ঋণ নিয়ে টাকা পাচার করেছেন, বিদেশে সম্পদ গড়েছেন, প্রকৃত ভাবে ব্যবসা না করে শুধুমাত্র ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে টাকা বের করা যাদের উদ্দেশ্য ছিল, তাদের বিরুদ্ধে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো নমনীয় ছিল, ২৪ সালের ৫ই আগস্ট এর পরে তোদের বিরুদ্ধে কিছু পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে, এটা সত্য!! কিন্তু শেখর উৎপাটন করার এখনো যায়নি!!

জালিয়াত বনাম সংগ্রামী ব্যবসায়ী-

সব খেলাপি এক নয়। এখানে আলাদা করা জরুরি।  এস আলম বা সাবেক মন্ত্রী সাইফুজ্জামান জাভেদ-যারা রাজনৈতিক ছায়ায় ব্যাংকের টাকা গিলে ফেলেছে। বিদেশে বিলাসবহুল ফ্ল্যাট, শপিং মল, ব্যবসা তাদের হাতের মুঠোয়। যারা কুমিরের বুকের চামড়া ব্যতীত জুতা পরতে অনীহা প্রকাশ করে, যারা দৈনন্দিন জীবনে অযাচিত খরচ করে চলেছে শুধুমাত্র ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে চুরি করা টাকার মাধ্যমে, তারা আজ অত্যন্ত স্বাচ্ছন্দ্যে জীবনযাপন করছে। এই উদাহরণগুলো আমাদের দেশের অর্থনীতির জন্য অত্যন্ত খারাপ এবং লজ্জাস্কর। একজন অপরাধীর সঠিক বিচার না হওয়ার কারণে, অন্য সৎ মন হওয়ার জন্য প্রলোভিত হতে পারে। বিষয়টা অনেকটা এরকম যে আমি খুন করে যদি শাস্তি ভোগ না করি তাহলে আমার বন্ধুবান্ধব যারা অত্যন্ত সৎভাবে জীবন যাপন করে, তারা পরবর্তীতে খুন করতে অতি উৎসাহী হতে পারে। কারণ আইনের শাসন সঠিকভাবে প্রতিষ্ঠিত না হওয়ার দরুন অনেকেই এ ধরনের অনৈতিক কার্যক্রমে জড়িত হওয়ার জন্য প্রলব্ধ হতে পারে। – যুক্তরাজ্যে ইতিমধ্যে ১৮৫ মিলিয়ন পাউন্ড মূল্যের সম্পদ ফ্রিজ হয়েছে। যা যুক্তরাজ্য সরকারের জন্য একটি রেকর্ড। আমাদের দেশের প্রচুর প্রবাসী বাস করেন বর্তমান মে যুক্তরাজ্যে। তাদের জন্য উদাহরণটি হবে বলে আমি মনে করি না। পশ্চিমা বিশ্ব সর্বদা দুর্নীতিকে একটি হাতিয়ার হিসেবে আমাদের সিস্টেমের বিরুদ্ধে ব্যবহার করে, যেই দুর্নীতি গুলার শতাব্দীর সবচেয়ে বড় প্রমাণ আমরা তাদেরকে হাতে করে তুলে দিয়েছি। পরবর্তীতে রাজনৈতিক নির্বাচিত সরকার আসলেও পশ্চিমা বিভিন্ন দেশের সাথে স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আলোচনার সময় এই বিষয়গুলো উঠে আসা শুধুমাত্র সময়ের অপেক্ষা। বলার অপেক্ষা রাখে না সে আলোচনাগুলোই আমাদের উদ্ধারের জন্য সহযোগিতামূলক হবে না। সে ক্ষেত্রে আমরা পারস্পারিক সম্পর্ক রাখার জন্য অনেক ক্ষেত্রেই আমাদেরকে স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে আলোচনার ক্ষেত্রে অনেক বিষয়ে ছাড় দেবার প্রয়োজন হতে পারে, যেগুলো ভবিষ্যতে আমাদের দেশের জন্য ভালো কিছু বয়ে আনবে বলে মনে হয় না। সুতরাং বর্তমান সরকারকে এ বিষয়ে ভবিষ্যতের চিন্তা করে অত্যন্ত সুদৃঢ় গঠনমূলক সিদ্ধান্ত নেয়া সমশীন বলে মনে করি। সরকারের অনুমান, গত ১৫ বছরে ২৩৪ বিলিয়ন ডলার পাচার হয়েছে। এই ধরনের অংক কোন কিছুর সাথে তুলনামূলক হওয়া সম্ভব নয়। জিডিপি কিংবা বাজেট কিংবা অন্য কোন কিছুই এটার সাথে সামঞ্জস্য বয়ে আনা সম্ভব হবে না। এরা অপরাধী—তাদের শাস্তি, সম্পদ বাজেয়াপ্ত ও পাচারের পথ বন্ধ করাই সর্ব উত্তম একটি পন্থা । বিদেশে তাদের সহায় সম্পদকে প্রশ্নবোধক করে সেগুলো উদ্ধারে সতস্র থাকা ভালো পন্থা। সেক্ষেত্রে বিদেশি বিভিন্ন দূতাবাসের সাথে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরো জোরদার করে, এবং পাচার হওয়া অর্থ গুলো উদ্ধারের জন্য একটি গঠনমূলক পরিকল্পনা অতি প্রয়োজন। গুরুত্ব সহকারে একটি জিনিস মনে রাখা উচিত, উন্নত কোন দেশ কোন ধরনের অপরাধমূলক অর্থ তাদের দেশে ফ্লেক্সিবল ওয়েতে ব্যবহার করতে দিতে চায়না ।এবং যদি অভিযোগগুলো সুনির্দিষ্ট হয় সেক্ষেত্রে বর্তমান যুগে সেই দেশগুলো এর বিরুদ্ধে যেকোনো ধরনের একশন নিতে দ্বিধাবোধ করবে না, স্টাব লিস্ট কান্ট্রি ডাজেন্ট ওয়ান টু ওয়েট দেয়ার হ্যান্ডস উইথ আনওয়ান্টেড ব্লাড । সিঙ্গাপুর যুক্তরাজ্য যুক্তরাষ্ট্রের মত দেশগুলো এই ধরনের পাচারকৃত অর্থের জন্য কোন ধরনের শর্ত সংশ্লিষ্ট সম্পর্ক নষ্ট করতে চাইবে না। এইটা আমাদের জন্য একটি বড় হাতিয়ার হতে পারে, যদি আমরা এই হাতিয়ারকে সঠিকভাবে ব্যবহার করতে পারি। সংকটে পড়া উদ্যোক্তারা: যারা করোনার ধাক্কা, ডলার সংকট, আমদানি ব্যয়ের ঝড়, রাজনৈতিক দমনপীড়নে হাঁপিয়ে উঠেছেন। যাদের কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে কেবল মূলধন সংকটে। এরা প্রতারক নয়, এরা সংগ্রামী। এই সকল ব্যবসায়ীরা বিদেশ ভিভো এ সম্পদ করে তোলে নাই এ গড়ে তোলে নাই। তারা দেশ থেকে অন্য দেশে পালিয়ে আশ্রয়ও নেন নাই। ব্যাংক কিংবা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের যেকোনো ধরনের পদক্ষেপ তারা মোকাবেলা করছেন। তাদের ঋণ যদি ১০–১৫ বছরে পুনঃতফসিল করা হয়, নতুন মূলধন দিয়ে দাঁড় করানো হয়, তবে তারাই দেশের মেরুদণ্ডকে আবার জাগিয়ে তুলবে। এক্ষেত্রে ব্যাংক কিংবা প্রতিষ্ঠানের ডায়নামিক ডিসিশন নেয়ার জন্য প্রয়োজন হবে। ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্র বিশেষে বিভিন্ন ধরনের সিদ্ধান্ত নেয়ার প্রয়োজন হতে পারে। খেলাফি গ্রাহককে নতুন করে ঋণ দেয়া অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ সিদ্ধান্ত। গঠনমূলকভাবে সিদ্ধান্ত নেয়া সম্ভব হলে এই যুগে অ্যাডানো সম্ভব। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক, ঋণদাতা কমার্শিয়াল ব্যাংক, সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী মহল, সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী সংগঠনকে একসাথে ভাবে কাজ করতে হবে অত্যন্ত সুদৃঢ়ভাবে, এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে সিদ্ধান্ত নিতে হবে গতানুগতিক ব্যবসায়িক পরিস্থিতিকে বিবেচনা নিয়ে বাস্তবতার সহিত সবকিছু বিবেচনায় নিয়ে, এবং এর সাথে অন্তর্নিহিত অনেক কিছু বিবেচনয় নিয়ে সম্মিলিত ভাবে যদি সবকিছু সিদ্ধান্ত নেয়া সম্ভব হয়, সেক্ষেত্রে দেশের বর্তমান ব্যবসা-বাণিজ্য এবং বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি অনেকটাই উন্নত করা সম্ভব হবে। একটি কারখানা বন্ধ মানে শুধু একটি ব্যবসার মৃত্যু নয়—শত শত শ্রমিকের রুটি বন্ধ, আর ব্যাংকের টাকার নিশ্চয় মৃত্যু। এই কথা মনে রেখে আমাদেরকে গঠনমূলক সিদ্ধান্ত নেয়া অতি প্রয়োজন । মানি লন্ডারিং: রক্তক্ষরণ দেশের রক্তক্ষরণ এখন বিদেশে জমে থাকা সম্পদ। লন্ডনে ফ্ল্যাট, দুবাইয়ে শপিং মল, টরন্টোতে ভিলা—সবই প্রমাণ করে, লুটপাটের টাকা দেশের বাইরে চলে যাচ্ছে। যখন প্রকৃত উদ্যোক্তা মাত্র ৫০ লাখ টাকার ঋণের জন্য মাসের পর মাস ঘুরছেন, তখন হাজার কোটি টাকা গোপনে পাচার হচ্ছে। এটি শুধু অর্থনীতির লুণ্ঠন নয়—এটি জাতির প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা। মানবিক খরচ দুর্নীতি যখন প্রতিষ্ঠিত হয়, তখন মানুষ আশা হারায়। তরুণ উদ্যোক্তা ভাবে-“আমি কেন সৎ থাকব, যখন প্রতারকরা রাজা?” কর্মসংস্থান থেমে যায়, বিনিয়োগ ভেঙে পড়ে, ব্রেন ড্রেইন বেড়ে যায়। একটি জাতি এভাবে দীর্ঘদিন টিকে থাকতে পারে না। সংস্কারের ডাক এখন আর সাধারণ সংস্কার নয়—ঝাঁকুনি দরকার।

১.জালিয়াতদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা– ফরেনসিক অডিট, আন্তর্জাতিক সহযোগিতা, পাচারকৃত সম্পদ ফিরিয়ে আনা। যারা প্রতারণা করেছে, তাদের নাম প্রকাশ্যে আনা, শাস্তি নিশ্চিত করা।

২.সৎ উদ্যোক্তাদের পুনর্জন্মের সুযোগ ১০-১৫ বছর মেয়াদি পুনঃতফসিল, নতুন মূলধন সহায়তা, ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে কার্যকর পরিকল্পনা। এসএমই ও ছোট উদ্যোক্তাদেরকে অতি সহজে ঋণ প্রবাহ নিশ্চিত করে দেশের অর্থনীতিকে করার একটি বড় চেষ্টা করা রপ্তানি মুখী শিল্পকে আরো সুযোগ-সুবিধা দিয়ে সবকিছু তৈরি করা আমদানি শিল্পকে আরো সাহজীকরণ করা যার মাধ্যমে আমদানি শিল্প আরো ভালোভাবে বিকশিত হয় সর্বশেষ আর্থিক পরিস্থিতিকে বিবেচনা নিয়ে সরকার, ব্যবসায়ী মহল এবং সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুল আরো ভালোভাবে পরিচিতি বিবেচনা সাপেক্ষে সঠিকভাবে সিদ্ধান্ত নিয়ে ব্যবসা-বাণিজ্য কে আরো প্রসারিত করার চেষ্টা করা ভালো উদ্যোগ হতে পারে।

শেষ কথা : সাহসের পরীক্ষা বাংলাদেশ এখন এক রণক্ষেত্রে দাঁড়িয়ে। আমরা কি ব্যাংক খাতকে দুর্নীতিবাজদের সাম্রাজ্য হতে দেব, নাকি এটিকে জাতীয় অগ্রগতির ইঞ্জিনে পরিণত করব? জালিয়াতদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। সৎ ব্যবসায়ীদের পুনরুজ্জীবিত করতে হবে। যদি আমরা শিল্পকে শ্বাসরুদ্ধ করি, তবে ব্যাংকের টাকা চিরতরে হারিয়ে যাবে। কিন্তু যদি আমরা তাদের বাঁচাই, তবে সেই টাকা ফেরত আসবে, কর্মসংস্থান বাড়বে, জাতি এগিয়ে যাবে। -- লেখক : সভাপতি, যশোর জুনিয়র চেম্বার অব কমার্স

Ad for sale 100 x 870 Position (2)
Position (2)
Ad for sale 225 x 270 Position (3)
Position (3)
Ad for sale 225 x 270 Position (4)
Position (4)