Ad for sale 100 x 870 Position (1)
Position (1)

জুলাই হত্যা : ‘মানবতাবিরোধী অপরাধে’ শেখ হাসিনার প্রাণদণ্ড

এখন সময়: মঙ্গলবার, ১৮ নভেম্বর , ২০২৫, ১২:৫৪:৩২ এম

স্পন্দন ডেস্ক : জুলাই গণঅভ্যুত্থান দমানোর চেষ্টায় মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের দায়ে দোষী সাব্যস্ত করে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রাণদণ্ড দিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
হাসিনা সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালেরও একই সাজা হয়েছে। অভ্যুত্থানের সময় পুলিশ বাহিনীর নেতৃত্বে থাকা চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দায় স্বীকার করে রাজসাক্ষী হওয়ায় তাকে দেওয়া হয়েছে ৫ বছরের সাজার লঘুদণ্ড।
দোর্দণ্ড প্রতাপে দেড় দশক দেশ শাসন করা হাসিনা ১৫ মাস আগের ওই অভ্যুত্থানে ক্ষমতা হারিয়ে এখন পালিয়ে আছেন ভারতে। তিনিই বাংলাদেশের প্রথম সাবেক সরকারপ্রধান, যার মাথার ওপর ঝুললো মৃত্যুদণ্ডের খাঁড়া।
আর সেই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল থেকেই শেখ হাসিনার সর্বোচ্চ সাজার রায় এল, যে আদালত তার সরকার গঠন করেছিল একাত্তরের যুদ্ধাপরাধের বিচারের জন্য।
এই ট্রাইব্যুনালে মৃত্যুদণ্ডের রায়ের ভিত্তিতেই আওয়ামী লীগের আমলে জামায়াতে ইসলামীর পাঁচ শীর্ষ নেতা এবং বিএনপির একজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছিল।
বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদার নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ সোমবার শেখ হাসিনার মামলার রায় ঘোষণা করে। ৪৫৩ পৃষ্ঠার এই রায়ে মোট ছয়টি অংশ ছিল।
ট্রাইব্যুনালের দ্বিতীয় সদস্য বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী এবং প্রথম সদস্য বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ রায়ের দুটি অংশ পড়ে শোনান। সবশেষে আসামিদের সাজার বিষয়ে ট্রাইব্যুনালের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদার।
শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের এই রায় এল তার বিয়ে বার্ষিকীর দিনে। ১৯৬৭ সালের ১৭ নভেম্বর পরমাণু বিজ্ঞানী এম এ ওয়াজেদ মিয়ার সঙ্গে তার বিয়ে হয়েছিল।
মামলার আসামিদের মধ্যে হাসিনার মত কামালও ভারতে পালিয়ে আছেন। গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন কেবল সাবেক আইজিপি মামুন।
রায়ের জন্য এদিন সকালে মামুনকে আদালতে হাজির করা হয়। রায় শেষে তাকে আবার ফিরিয়ে নেওয়া হয় কারাগারে।
সরকারি চাকরির কোটা ব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে ছাত্রদের আন্দোলন সরকারের পদত্যাগের এক দফার রূপ নেওয়ার পর ২০২৪ সালের ৫ অগাস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে; হেলিকপ্টারে চড়ে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা।
এরপর তার বিরুদ্ধে কয়েকশ মামলা হয় দেশের বিভিন্ন আদালত ও থানায়। আওয়ামী লীগের অসংখ্য নেতাকর্মীকে সেসব মামলায় আসামি করা হয়। এর মধ্যেই অন্তর্বর্তী সরকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে জুলাই হত্যাকাণ্ডের বিচারের উদ্যোগ নেয়।
চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার পতনের ঘটনা সারা বিশ্বের নজর কেড়েছিল। ফলে তার রায়ের দিনে পুরো বাংলাদেশের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলোর নজর ছিল ট্রাইব্যুনালের দিকে।
বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মত এ মামলার রায় ঘোষণার কার্যক্রম আদালত থেকে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়।
আর বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে নজিরবিহীন এ রায়ের প্রভাব যে অত্যন্ত সুদূরপ্রসারী হবে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই।
কোন অপরাধে কী সাজা
জুলাই আন্দোলন দমনে ১৪০০ জনকে হত্যার উসকানি, প্ররোচনা ও নির্দেশ দান, ‘সুপিরিয়র কমান্ড রেসপনসিবলিটি’ এবং ‘জয়েন্ট ক্রিমিনাল এন্টারপ্রাইজের’ মোট ৫ অভিযোগ আনা হয়েছিল এ মামলার আসামিদের বিরুদ্ধে।
এর মধ্যে প্রথম অভিযোগে ‘উসকানিমূলক’ বক্তব্য দিয়ে ছাত্র-জনতাকে হত্যার প্ররোচনা, উসকানি, সহায়তা, সম্পৃক্ততা, অপরাধ সংঘটন প্রতিরোধে ব্যর্থতার জন্য শেখ হাসিনাকে দেওয়া হয়েছে আমৃত্যু কারাদণ্ড।
দ্বিতীয় অভিযোগে হেলিকপ্টার, ড্রোন ও প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের মাধ্যমে আন্দোলনকারীদের ‘হত্যা করে নির্মূলের নির্দেশ’, চতুর্থ অভিযোগে চাঁনখারপুলে ছয় হত্যা এবং পঞ্চম অভিযোগে আশুলিয়ায় ছয়জনকে হত্যা ও লাশ পোড়ানোর ঘটনাতেও শেখ হাসিনাকে দোষী সাব্যস্ত করেছে আদালত। এই তিন অভিযোগ মিলিয়ে তাকে দেওয়া হয়েছে মৃত্যুদণ্ড।
চতুর্থ অভিযোগে চাঁনখারপুলে ছয় হত্যা এবং পঞ্চম অভিযোগে আশুলিয়ায় ছয়জনকে হত্যা ও লাশ পোড়ানোর ঘটনায় সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং সাবেক আইজিপি আবদুল্লাহ আল-মামুনকে দোষী সাব্যস্ত করেছে ট্রাইব্যুনাল।
তাদের মধ্যে কামালকে দেওয়া হয়েছে সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ড। আর মামুন রাজসাক্ষী হিসেবে তথ্য দিয়ে অপরাধ প্রমাণে সহযোগিতা করায় তাকে ৫ বছরের কারাদণ্ডের লঘুদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
শেখ হাসিনা এবং আসাদুজ্জামান খান কামালকে সর্বোচ্চ সাজা দেওয়ার পাশাপাশি বাংলাদেশে তাদের সম্পদ রাষ্ট্রের অনুকূলে জব্দের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
পাশাপাশি জুলাই আন্দোলনে নিহতদের পরিবার এবং আহতদের জন্য ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করতে সরকারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদার আসামিদের সাজা ঘোষণা করে বলেন, ১৯৭৩ সালের আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইনের ২০ (৩) ধারা অনুযায়ী, প্রচলিত রেওয়াজ মাফিক কার্যকর করা হবে।
বাংলাদেশের রেওয়াজ অনুযায়ী, বেসামরিক আদালতের রায়ে আসামিকে আমৃত্যু ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।
এই রায়ের বিরুদ্ধে আসামিরা আপিল করারও সুযোগ পাবেন। তবে হাসিনা ও কামাল পলাতক থাকায় আপিল করতে চাইলে তাদের ট্রাইব্যুনাল আত্মসমর্পণ করে এক মাসের মধ্যে আপিল করতে হবে।
কার কী প্রতিক্রিয়া
ঢাকায় এ রায় হওয়ার পরপরই ভারত থেকে বিবৃতি দিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ফেরারি আসামি শেখ হাসিনা। তার সেই বিবৃতি ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো প্রকাশ করেছে।
এ রায়কে ‘পক্ষপাতদুষ্ট এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ আখ্যা দিয়ে হাসিনা সেখানে বলেছেন, “আমাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার ঘৃণ্য আদেশের মধ্য দিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের চরমপন্থি ব্যক্তিরা আমাকে হত্যার যে মনোভাব প্রকাশ করছে—বাংলাদেশের সর্বশেষ নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রীকে সরিয়ে দেওয়া এবং আওয়ামী লীগকে রাজনৈতিকভাবে নিষ্ক্রিয় করার লক্ষ্যই সেখানে স্পষ্ট।”
অন্যদিকে জুলাই আন্দোলনে নিহতদের পরিবার ও আহতরা ঢাকায় ট্রাইব্যুনালের সামনে এই রায়কে স্বাগত জানিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন। ‘এই মাত্র খবর এল, খুনি হাসিনার ফাঁসি হল’ স্লোগান দিতে দিতে তারা একে অপরকে জড়িয়ে ধরেন।
ট্রাইব্যুনালের প্রধান কৌঁসুলি মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম রায়ের পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, “আমরা মনে করি এই রায়টি কনো ধরনের কোনো অতীতের প্রতিশোধ নয়। এটি হচ্ছে জাতির প্রতিজ্ঞা ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য। এটা হচ্ছে জাতির কোয়েস্ট ফর জাস্টিস।
“এই রায় প্রমাণ করেছে-অপরাধী যত বড় হোক, যত ক্ষমতাশালী হোক সে আইনের ঊর্ধ্বে নয়। এবং বাংলাদেশ এমন একটি রাষ্ট্র যেখানে যত বড় অপরাধীই হোক, তার অপরাধের জন্য তাকে জবাবদিহিতার মুখোমুখি হতে হবে এবং তার প্রাপ্য শাস্তি পেতে হবে।”
তাজুল বলেন, “বাংলাদেশে যে ১৪০০ তরতাজা তরুণ প্রাণ এই স্বৈরশাসনের অবসানের জন্য জীবন দিয়েছেন, তাদের পরিবারে যদি সামান্য একটু স্বস্তি আসে, সেটিই আজকের এই প্রসিকিউশনের প্রাপ্তি।
“জাতির পক্ষে আমরা একটা বিচারিক প্রক্রিয়াকে সম্পন্ন করার মাধ্যমে এই জাতিকে বিচারহীনতার কলঙ্ক থেকে মুক্ত করার যে ক্ষুদ্র আমাদের প্রয়াস, সেটা যদি সফল হয় সেখানেই আমাদের সাফল্য।”
‘আন্তর্জাতিক মানদণ্ড’ মেনে এ বিচারের রায় হয়েছে দাবি করে তাজুল বলেন, “আমরা এটাও একই সাথে বলতে চাই, যে কোয়ালিটি অফ এভিডেন্স এখানে দেখানো হয়েছে, যে ধরনের সাক্ষ্যপ্রমাণ এই আদালতে উপস্থাপিত হয়েছে, বিশ্বের যে কোনো আদালতের স্ট্যান্ডার্ডে এই সাক্ষ্যপ্রমাণগুলো উত্তীর্ণ হয়ে যাবে।
“এবং পৃথিবীর যেকোনো আদালতে এই সাক্ষ্য প্রমাণ উপস্থাপন করা হলে আজকে যেসব আসামিকে শাস্তি প্রদান করা হয়েছে তারা প্রত্যেকেই সেই শাস্তি পাবেন।”
অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, “আমরা মনে করি, শহীদদের প্রতি, দেশের প্রতি, এদেশের মানুষের প্রতি, গণতন্ত্রের প্রতি সংবিধানের প্রতি, আইনের শাসনের প্রতি আগামী প্রজন্মের প্রতি দায়বদ্ধতা পরিশোধের স্বার্থে এ রায় একটি যুগান্তকারী রায়। এ রায় প্রশান্তি আনবে, ভবিষ্যতের প্রতি একটা বার্তা, বাংলাদেশের ন্যায়বিচার ও আইনের শাসনের প্রতি মাইলফলক হয়ে থাকবে।”
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “এ মামলার মধ্যে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের ইস্যু ছিল না বলে ওই বিষয়ে তারা (ট্রাইব্যুনাল) কোনো কমেন্টস করেননি। শেখ হাসিনা এবং আসাদুজ্জামান খান কামালের বাংলাদেশের সমস্ত সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”
রায় বাস্তবায়ন কীভাবে হবে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, “রায় বাস্তবায়ন আইনি পথেই, আইনসঙ্গতভাবেই হবে। বেআইনি বা আইনসঙ্গত নয়ুএমন পথ সরকার অবলম্বন করবে না।”
আদালতের দৃষ্টিতে পলাতক শেখ হাসিনা এ মামলার শুনানিতে সরাসরি আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ পাননি। তবে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি জুলাই হত্যাকাণ্ডের নির্দেশ দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। ট্রাইব্যুনালের শুনানিতে তার পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেনও তাকে নির্দোষ দাবি করেছিলেন।
রায়ের পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় আমির হোসেন বলেন, “রায়টা আমার পক্ষে হয়নি, বিপক্ষে গেছে। এজন্য আমি ক্ষুদ্ধ। কষ্ট লালন করতেছি। আসামিদের ফাঁসির রায়ে আমি কষ্ট পেয়েছি।”
হাসিনা সরকারের পতনের পর বাংলাদেশের রাজনীতিতে হঠাৎ করেই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে জামায়াতে ইসলামী। দলটির সেক্রেটারি জেনারেল গোলাম পরওয়ার রায়ের প্রতিক্রিয়ায় বলেন, “দেশের ১৮ কোটি মানুষের যে গণআকাঙ্ক্ষা ছিল এই রায়, ঘৃণ্য মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নির্বাচনের আগে করে যাবেন, এটা আমাদের দাবি ছিল। সেটি পূরণ হয়েছে।”
আর চব্বিশের অভ্যুত্থানের ছাত্রনেতাদের নিয়ে গঠিত জাতীয় নাগরিক পার্টির মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম ভারতকে উদ্দেশ্য করে বলেন, “হাজারের অধিক হত্যাকাণ্ডের নির্দেশদাতা এবং মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি (শেখ হাসিনা)। আপনারা (ভারত) যদি বাংলাদেশে তাকে (শেখ হাসিনা) ফিরিয়ে দিয়ে সহযোগিতা করেন, তবেই বাংলাদেশের সাথে আপনাদের যে সম্পর্ক, সেই সম্পর্ক ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়ে উঠবে।
“কিন্তু শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে না দিলে, বাংলাদেশের সঙ্গে, বাংলাদেশের মানুষের সাথে ভারতের সম্পর্ক কখনোই স্বাভাবিক হবে না। পাশাপাশি আমরা দল হিসেবে আওয়ামী লীগের বিচার নিশ্চিত করার দাবি করছি। কারণ এই হত্যাযজ্ঞ আওয়ামী লীগেরও।”
রায়ের প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলও এ বিষয়ে কথা বলেন।
তিনি বলেন, “আমরা শেখ হাসিনার প্রত্যার্পণের জন্য ভারতের কাছে আবার চিঠি লিখব। ভারত যদি এই গণহত্যাকারীকে আশ্রয় দেওয়া অব্যাহত রাখে, তাহলে ভারতকে বুঝতে হবে, বাংলাদেশ ও বাংলাদেশের মানুষের বিরুদ্ধে একটা শত্রুতা এটা অত্যন্ত নিন্দনীয় আচরণ।
“আমরা যতদিন আছি এই বিচারকাজ চলবে। আশা করি আগামীতে যেই সরকারই নির্বাচিত হবে এই বিচারের গুরুদায়িত্ব থেকে কোনো অবস্থাতেই যেন পিছপা না হয়।”
ট্রাইব্যুনাল আইনে কীভাবে এ বিচার
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার বিচারের কথা বলেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। গত বছরের ১৪ অগাস্ট সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সামনে তিনি ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনাসহ দলের শীর্ষ নেতা ও সহযোগীদের এ আদালতে বিচারের আইনি যৌক্তিকতা তুলে ধরেন।
তিনি সেদিন বলেন, জুলাই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা, যারা আদেশ দিয়েছেন, বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করেছেন, তাদের সকলকে ১৯৭৩ সালের ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইম ট্রাইব্যুনাল অ্যাক্টের অধীনে বিচারের আওতায় আনা সম্ভব।
এ আইনটি করা হয়েছিল স্বাধীনতা যুদ্ধে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের জন্য। এ ট্রাইব্যুনালে ব্যক্তি এবং গোষ্ঠীকে বিচারের আওতায় আনা এবং স্বাধীনভাবে ট্রাইব্যুনালের বিচারকাজ পরিচালনার বিধান যুক্ত করে ২০০৯ সালে আইনে কিছু সংশোধনী আনা হয়। এর মাধ্যমেই ২০১০ সালে ট্রাইব্যুনাল, আইনজীবী প্যানেল এবং তদন্ত সংস্থা গঠন করা হয়।
১৯৭৩ সালে প্রণীত আইনের ৩(১) ধারায় বলা আছে, আইনের দুই নম্বর উপধারায় উল্লিখিত যে-কোনো অপরাধের সাথে সংশ্লিষ্ট কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠী [বা সংস্থা] বা কোনো সশস্ত্র, প্রতিরক্ষা বা সহায়ক বাহিনীর কোনো সদস্যের জাতীয়তা যাই হোক না কেন, তা যদি এই আইন প্রবর্তনের আগে বা পরে বাংলাদেশ ভূখণ্ডে সংঘটিত হয়, তবে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তার বিচারের এবং শাস্তি দেওয়ার ক্ষমতা থাকবে।
অর্থাৎ মানবতাবিরোধী অপরাধ, শান্তিবিরোধী অপরাধ, গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধ, জেনিভা কনভেনশন বিরোধী কাজসহ আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে যে কোনো অপরাধের দায়ে অভিযুক্ত ব্যক্তি বা দল, সেনাবাহিনী কিংবা তাদের সহযোগী সশস্ত্র বাহিনীর বিচারের ক্ষমতা ট্রাইব্যুনালকে দেওয়া হয়েছে।
কী ছিল অভিযোগ
চলতি বছরের ১২ মে শেখ হাসিনা, আসাদুজ্জামান খান কামাল ও চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে এ মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয় ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা। এরপর ১ জুন প্রসিকিউশন ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রারের দপ্তরে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ এবং যাবতীয় দলিল জমা দেয়।
পরে প্রধান কৌঁসুলি মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম সাড়ে আট হাজার পৃষ্ঠার ওই অভিযোগপত্র বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদার নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনালে উপস্থাপন করেন। এ তিনজনের বিরুদ্ধে পাঁচটি অভিযোগ আমলে নেয় ট্রাইব্যুনাল। ওইদিন শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আদেশ হয়।
গত ১০ জুলাই মানবতাবিরোধী অপরাধের পাঁচ অভিযোগে শেখ হাসিনা, কামাল ও মামুনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেয় ট্রাইব্যুনাল-১। সেই সঙ্গে মামুনের রাজসাক্ষী হওয়ার আবেদন মঞ্জুর করা হয়।
অভিযোগ-১: গণভবনে ২০২৪ সালের ১৪ জুলাই আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে শেখ হাসিনার ‘উসকানিমূলক’ বক্তব্য প্রদান এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে আসাদুজ্জামান খান কামাল ও চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনসহ তৎকালীন সরকারের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের ‘প্ররোচনা, সহায়তা ও সম্পৃক্ততায়’ তাদের অধীনস্ত ও নিয়ন্ত্রণাধীন আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্য ও সশস্ত্র ‘আওয়ামী সন্ত্রাসীদের’ মাধ্যমে ব্যাপক মাত্রায় ও পদ্ধতিগতভাবে নিরীহ নিরস্ত্র ছাত্র-জনতার উপর আক্রমণের অংশ হিসেবে হত্যা, হত্যার চেষ্টা, নির্যাতন এবং অন্যান্য অমানবিক আচরণ করার অপরাধ সংঘটনের প্ররোচনা, উসকানি, সহায়তা, সম্পৃক্ততা, অপরাধ সংঘটন প্রতিরোধে ব্যর্থতা, অপরাধ সংঘটনের জন্য দায়ী ব্যক্তিদের শান্তি প্রদান না করা এবং ষড়যন্ত্র করার অপরাধ; যা আসামিদের জ্ঞাতসারে সংঘটিত।
অভিযোগ-২: আসামি শেখ হাসিনার ছাত্র-জনতার উপর হেলিকপ্টার, ড্রোন ও প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের মাধ্যমে আন্দোলনকারীদের ‘হত্যা করে নির্মূলের নির্দেশ’ এবং এ নির্দেশ বাস্তবায়নে তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন তাদের নিয়ন্ত্রণাধীন ও অধীনস্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের অপরাধ সংঘটনের নির্দেশ প্রদানের পাশাপাশি সহায়তা, সম্পৃক্ততা ও ষড়যন্ত্র করেন।
অভিযোগ-৩: রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে ২০২৪ সালের ১৬ জুলাই আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে স্বল্প দূরত্ব থেকে নিরস্ত্র আন্দোলনকারী ছাত্র আবু সাঈদের ‘বুক লক্ষ্য করে বিনা উসকানিতে একাধিক গুলি চালিয়ে’ তাকে নির্মমভাবে হত্যা করার মাধ্যমে উল্লিখিত আসামিদের জ্ঞাতসারে এবং তাদের মাধ্যমে অপরাধ সংঘটনের নির্দেশ, প্ররোচণা, উসকানি, সহায়তা, সম্পৃক্ততা এবং ষড়যন্ত্র করার মাধ্যমে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটন।
অভিযোগ-৪: ঢাকা মহানগরীর চাঁনখারপুল এলাকায় ২০২৪ সালের ৫ অগাস্ট আন্দোলনরত নিরস্ত্র ছাত্র-জনতার ওপর তৎকালীন সরকারের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের মাধ্যমে নিরীহ-নিরস্ত্র ৬ জন ছাত্র-জনতাকে গুলি করে হত্যা করার মাধ্যমে উল্লিখিত আসামিদের জ্ঞাতসারে এবং তাদের কর্তৃক হত্যার নির্দেশ, প্ররোচনা, উসকানি, সহায়তা, সম্পৃক্ততা এবং ষড়যন্ত্র করার মাধ্যমে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটন।
অভিযোগ-৫: ঢাকার আশুলিয়া থানার সামনে এবং আশপাশ এলাকায় ২০২৪ সালের ৫ অগাস্ট আন্দোলনরত নিরস্ত্র ছাত্র-জনতার উপর তৎকালীন সরকারের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা নিরীহ-নিরস্ত্র ৬ ছাত্র-জনতাকে গুলি করে তাদের মধ্যে ৫ জনের মৃতদেহ এবং একজনকে জীবিত ও গুরুতর আহত অবস্থায় আগুনে পুড়িয়ে দেওয়ার অপরাধ, যা আসামিদের জ্ঞাতসারে সংঘটিত হয়েছে। ওই ঘটনায় হত্যা, নির্যাতন, মৃত ও জীবিত অবস্থায় আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে অমানবিক আচরণ করার অপরাধ সংঘটনের নির্দেশ, প্ররোচনা, উসকানি, সহায়তা, সম্পৃক্ততা এবং ষড়যন্ত্রের অভিযোগ আনা হয়েছে আসামিদের বিরুদ্ধে।
গত ৩ অগাস্ট প্রসিকিউশন প্রারম্ভিক বিবৃতি (ওপেনিং স্টেটমেন্ট) দেয় এবং ৪ অগাস্ট মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। সাক্ষ্যগ্রহণ বাংলাদেশ টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচার করা হয় ট্রাইব্যুনাল থেকে।
সাক্ষ্যগ্রহণ, জেরা ও যুক্তিতর্ক শেষে ২৩ অক্টোবর মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমান রাখা হয়। এরপর ১৩ নভেম্বর ট্রাইব্যুনাল জানায়, এ মামলার রায় হবে ১৭ নভেম্বর।
প্রসিকিউশনের প্রধান কৌঁসুলি হিসেবে এ মামলা পরিচালনায় নেতৃত্ব দেন মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, যিনি একসময় একাত্তরের যুদ্ধাপরাধ মামলার আসামি জামায়াতে ইসলামীর নেতাদের আইনজীবী ছিলেন।
রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনায় তাজুল ইসলামের সঙ্গে ছিলেন প্রসিকিউটর মো. মিজানুল ইসলাম, গাজী এমএইচ তামিম, বিএম সুলতান মাহমুদ, ফারুক আহম্মদ, মো. আব্দুস সোবহান তরফদার, মো. সহিদুল ইসলাম সরদার, তানভীর হাসান জোহাসহ প্রসিকিউশন দল।
চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন যায়েদ বিন আমজাদ। আর শেখ হাসিনা ও কামালের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন শুনানি করেন।
সাক্ষীরা কে কী বলেছিলেন
এ মামলায় মোট ৫৪ জন সাক্ষ্য দেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক আবু সাঈদের বাবা, নিহতদের পরিবারের সদস্য, জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক ও জুলাই আন্দোলনের নেতা নাহিদ ইসলাম, জুলাই আন্দোলনের আরেক নেতা উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান।
বদরুদ্দিন উমরের লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনানো হয় ট্রাইব্যুনালে, যা তিনি মৃত্যুর আগে লিখে পাঠিয়েছিলেন। এ ছাড়া রাজসাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দিয়েছেন সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন।
তিনি বলেন, “১৮ জুলাই ২০২৪?এ তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আমাকে ফোন করে জানায় যে, শেখ হাসিনা আন্দোলন বন্ধ করার জন্য প্রত্যক্ষভাবে প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ দিয়েছেন।”
হেলিকপ্টারে করে হামলার বিষয়ে মামুন বলেন, “প্রতিবাদকারীদের এলাকা ভাগ করা হয়েছিল। তারপর হেলিকপ্টার, ড্রোন ও প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করে ছাত্র ও সাধারণ বেসামরিক অনেককে হত্যা ও জখম করা হয়।”
এই মামলার ৪ নম্বর অভিযোগ হল রাজধানীর চানখাঁরপুলে ৬ হত্যা। এ মামলায় ১৬ অক্টোবর সাক্ষ্য দেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া, যিনি আন্দোলনের সামনের সারির ছাত্রনেতা ছিলেন।
১৪০০ জনকে হত্যার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “এখন আমরা বিভিন্নভাবে তালিকা পাচ্ছি। এর আগে আমরা আরও দুটি হত্যাকাণ্ড প্রত্যক্ষ করেছি, যেটা বিডিআর বিডিআর হত্যাকাণ্ড এবং পরবর্তীতে শাপলা চত্বর হত্যাকাণ্ড। শত শত মানুষকে গুম করে হত্যা করা হয়েছে। অনেককে আর ফিরে পাওয়া যায় নাই। আমরা আয়নাঘর প্রত্যক্ষ করেছি।
“সুতরাং প্রত্যেকটা ঘটনায় প্রত্যেকটা ভিক্টিমের জন্য যদি আপনি একবার করে বিচার করতে যান, তাহলে এই বিচার হয়ত কেয়ামত পর্যন্ত শেষ হবে না।
“আমরা এ সকল ভিক্টিমদের পক্ষ থেকে এই ‘মিসডিডগুলো’ যে শেখ হাসিনা এবং এর সাথে আর যারা জড়িত ছিলেন, তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চেয়েছি এবং আশা করি এই দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত হবে।”
মাহমুদুর রহমান সাক্ষ্যে বলেন, “বিডিআর হত্যাকাণ্ডে শেখ তাপসের জড়িত থাকার সব রকম প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও তাকে কখনও বিচারের মুখোমুখি করা হয়নি। বিডিআর হত্যাকাণ্ডে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর দেশপ্রেমিক ৫৭ জন অফিসারকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছিল।
“তাদের পরিবারের উপর অমানবিক নির্যাতন চালানো হয়েছিল। তৎকালীন সরকার প্রধান, প্রধানমন্ত্রীর প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা, স্বরাষ্টমন্ত্রী এবং সেনাপ্রধান মঈন ইউ আহমেদ সেনাসদস্য এবং তাদের পরিবারকে রক্ষা করবার কোনো রকম ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি, বরং দুই দিন ধরে এই হত্যাযজ্ঞ ঘটতে দিয়েছিল।”
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতা নাহিদ ইসলাম সাক্ষ্যে বলেন, “ছাত্রদেরকে রাজাকারের বাচ্চা এবং রাজাকারের নাতিপুতি আখ্যায়িত করায় সমগ্র দেশের ছাত্রছাত্রীরা অপমানিত বোধ করে।”
ট্রাইব্যুনালে যুক্তিতর্ক উপস্থাপনকালে প্রধান কৌঁসুলি মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, “‘রোম স্ট্যাটিউট অব দ্য ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল কোর্ট’-এর ৭ অনুচ্ছেদে মানবতাবিরোধী অপরাধের সংজ্ঞা দেওয়া হয়েছে, যেখানে ‘ওয়াইডস্প্রেড অ্যাটাক’ এবং ‘সিস্টেম্যাটিক অ্যাটাকের’ কথা বলা আছে। এ দুই ধরনের অপরাধ শেখ হাসিনা করেছেন।”
অন্যদিকে শেখ হাসিনার আইনজীবী মো. আমির হোসেন যুক্তিতর্ক শুনানিতে বলেন, “আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনে মূল এভিডেন্স অ্যাক্ট প্রয়োগের কোনো সুযোগ নেই। সিআরপিসিও এ আইনে গ্রহণ করা যায় না। এ আইনে বিচার মানে হাত-পা বেঁধে নদীতে ফেলে দিয়ে আসামিকে বলা হবে, ‘এখন সাঁতার কাটো’।”
শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের ‘কমান্ড রেসপনসিবিলিটি’র অভিযোগের বিষয়ে আমির হোসেন বলেন, “যদি ২০২৪ সালের জুলাই আন্দোলনকে বৈধও ধরে নেওয়া হয়, সেই আন্দোলনকেও নিয়ন্ত্রণ করার দায়িত্ব রাষ্ট্রের রয়েছে।”
এ আইনজীবীর ভাষ্য, “রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে ভুলত্রুটি থাকতে পারে। সেগুলো মেনে নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। পৃথিবীর শুরু থেকে এগুলো হয়ে আসছে। ইরানের খোমেনি, মালয়েশিয়ার মাহথির মোহাম্মদ করেছেন। শুধু বেঠিকটাকে প্রাধান্য দেবেন, সঠিকটাকে দেবেন না-তা তো হবে না।”

Ad for sale 100 x 870 Position (2)
Position (2)
Ad for sale 225 x 270 Position (3)
Position (3)
Ad for sale 225 x 270 Position (4)
Position (4)