যশোরে ১৮ বছর হয় না হকি লিগ, ভোটেই তৃপ্ত ক্লাব প্রতিনিধিরা

এখন সময়: শনিবার, ২০ এপ্রিল , ২০২৪, ০৫:৫০:৪২ এম

মারুফ কবীর: যশোরে সর্বশেষ  হকি লিগের খেলা মাঠে গড়িয়েছিলো ২০০৪-২০০৫ মৌসুমে। লিগ হয় না দীর্ঘ ১৮ বছর। সর্বশেষ লিগে পৃষ্ঠপোষকতা ও আর্থিক সহযোগিতা দিয়েছিলো জাতীয় দৈনিক আজকের কাগজ। হকির সাথে সংশ্লিষ্ট ক্লাবগুলো যথাসময়ে জেলা ক্রীড়া সংস্থার ঘোষিত সূচি অনুযায়ী এন্ট্রি হয়। ক্লাব প্রতিনিধিরা ভোটও দেন। কিন্তু মূল লক্ষ্য যেটি সেটি থেকে যায় অধরাই। এক অর্থে ভোটেই তৃপ্ত ক্লাব প্রতিনিধিরা। খেলা মাঠে গড়ালো বা না গড়ালো সেটি বিবেচ্য বিষয় নয় হকি কর্মকর্তাদের। যশোর জেলা ক্রীড়া সংস্থার অধীনে ৬ টি  হকি ক্লাব আছে। ক্লাবগুলি খড়কি স্পোর্টিং, ম্যাগপাই ক্লাব, আসাদ স্মৃতি সংঘ, মিতালী সংঘ, সাজ ক্রীড়া চক্র ও ইয়থ স্টার ক্লাব। দীর্ঘ ১৮ বছর লিগ না হলেও এ ৬ টি ক্লাবের প্রতিনিধি  ভোটের সময় ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অন্যান্য ইভেন্টের কর্মকর্তারা। তাদের দাবি, আমরা অনেক টাকা ব্যয় করে ক্লাব করি এবং লিগে অংশ নিই। তারপর একটি করে ভোটাধিকার পায়। অথচ হকির ৬ টি দল দীর্ঘদিন লিগে অংশ না নিয়ে তাদের প্রতিনিধিরা ভোটের সময় ভোট দিচ্ছেন। এমন বৈষম্য যাতে আগামীতে না হয় তা জোরালো দাবি করেছেন ক্লাব কর্মকর্তারা। অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০০৮, ২০১৫, ২০১৬ ও ২০১৭ সালে যশোরের অনুষ্ঠিত হয়েছে স্কুল হকি টুর্নামেন্ট। ২০১৬ সালে অনুষ্ঠিত হয়েছে মুন্না-জনি স্মৃতি সিক্স এ সাইড হকি টুর্নামেন্ট। এর মধ্যে বাংলাদেশ হকি ফেডারেশনের উদ্যোগে ডেভোলেপমেন্ট প্রোগ্রাম হয়েছে ৪ বার। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের অর্থায়নে ৩ বার অনুষ্ঠিত হয়েছে হকি প্রতিভা অন্বেষণ কর্মসূচি। ২০১৪ সালে অনুষ্ঠিত হয়েছে ক্রীড়া পরিদপ্তরের অর্থায়নে স্কুলের শিক্ষার্থীদের ট্রেনিং প্রোগ্রাম। জাতীয় পর্যায়ে যশোর জেলা হকি দল অংশ নিয়েছে অনেকবার। ২০১৭ সালে অনুষ্ঠিত জাতীয় যুব হকিতেও অংশ নেয়। কিন্তু ২০১৮ সালের মে মাসে অনুষ্ঠিত জাতীয় হকি লিগে অংশ নেয়নি। এটি ছিলো হটকারি সিদ্ধান্ত। যশোর জেলা থেকে এক সময় জাতীয় দলে প্রতিনিধিত্ব করেছেন কাওছার আলী ও তাজ হোসেন তাজ। পরবর্তী সময়ে উঠে এসে জাতীয় দলে প্রতিনিধিত্ব করেছেন আশিকুজ্জামান, এছাড়া ঢাকার স্বনামধন্য ক্লাবগুলিতে খেলেছেন অসংখ্য খেলোয়াড়। এখন সেই মানের খেলোয়াড় নেই এটি সত্য। কিন্তু খেলোয়াড় সংকট নেই দাবি হকির সাথে সংশ্লিষ্টদের।  বছরের কিছু সময়  নিজ উদ্যোগে কখনও সরকারি এমএম কলেজ চত্বরে ও পুলেরহাটে হকির চর্চা হয়ে থাকে। সর্বশেষ কমিটিতে যশোর জেলা ক্রীড়া সংস্থার হকি পরিষদে সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন মাহমুদ রিবন। একই সাথে তিনি দীর্ঘ ১২ বছর ধরে বাংলাদেশ হকি ফেডারেশনের কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। মাহমুদ রিবন জানান, হকি লিগ মাঠে না গড়ানোর জন্য দু’টি অন্তরায় রয়েছে। প্রথমত মাঠ, দ্বিতীয়ত গোলরক্ষকের সরঞ্জামাদি সংকট। এই সংকট কাটিয়ে উঠতে পারলে নিয়মিত হকি লিগ মাঠে গড়ানো সম্ভব।  গোলরক্ষকের সরঞ্জামাদি ক্রয় করতে গেলে নূন্যতম ৭০ হাজার টাকা প্রয়োজন। তিনি আরো জানান এরই মধ্যে (চলতি মৌসুমে) ক্লাব এন্ট্রি হয়েছে। ১০ দিনের জন্য মাঠ চেয়েছি, মাঠ পেলে শিঘ্রই মাঠে গড়াবে জেলার হকি লিগ। হকি পরিষদের সভাপতি নির্বাচিত হন জাতীয় দলের সাবেক হকি খেলোয়াড় ও বিকেএসপির কোচ কাওছার আলী। সে দৃষ্টিকোণ থেকে আশা করা  হলেও  হকির  উন্নতির  হয়নি। পাশাপাশি লিগের খেলাও মাঠে গড়ায়নি। তবে তিনি বলেন, আমি পরে জেনেছি আমাকে হকি পরিষদের সভাপতি করা হয়েছে। চলতি বছরের ৪ এপ্রিল আমি সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগ করেছি। লিখিত পদত্যাগ পত্র জেলা প্রশাসকের কাছে দিয়েছি।