ভৈরব নদের দূষণ ঠেকানো যাচ্ছে না !

এখন সময়: বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল , ২০২৪, ০২:৫৪:৪৩ পিএম

মিরাজুল কবীর টিটো: ভৈরব নদের যশোর শহরাংশ দূষণ মুক্ত করতে স্যুয়ারেজ লাইন অপসারণ কার্যক্রম সফল হয়নি। নদী দুষণ মুক্ত কমিটি অভিযান চালিয়ে সতর্ক করে দেয়াসহ মামলা করেও কোন ফল পায়নি। কোন কিছু তোয়াক্কা না করে দড়াটানা ব্রিজের পূর্বপাশে অধিকাংশ বাড়ি ও প্রতিষ্ঠানের স্যুয়ারেজ লাইন দিয়ে পানি ফেলে দূষিত করা হচ্ছে ভৈরব। এ কথা স্বীকারও করেছেন যশোর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী তাওহীদুল ইসলাম। তবে দুষণমুক্ত কমিটির আগে তৎপরতা থাকলেও এখন ঝিমিয়ে পড়েছে। ফলে দূষণকারীরা বিনা বাধায় কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।

গত বছর এপ্রিলের দিকে ভৈরবের শহরাংশে সৌন্দর্য্য বর্ধনের কাজ শুরু করে পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ। সে লক্ষ্যে ভৈরবের উত্তর পাশে ড্রেন ও ওয়াকওয়ে নির্মাণ কাজ শুরু করে। এরমধ্যে ড্রেন নির্মাণ কাজ জুন মাসে শেষ করে। ভৈরবের দড়াটানা ব্রিজের পূর্ব পাশের দুই ধারের ও পশ্চিম পাশের ক্লিনিক ও প্রতিষ্ঠানের সেফটি ট্যাংকি থেকে স্যুয়ারেজ লাইনের মাধ্যমে ভৈরব নদ যাতে দূষণ না হয় এজন্য জেলা প্রশাসন নদের পরিবেশ দূষণ মুক্ত কমিটি করে। ২২ সালের ২৯ জুন স্যুয়ারেজ লাইন ও সেফটি ট্যাংকি অপসারনের লক্ষে সচেতনতামূলক মাইকিংও করা হয়।

ওই সময়কার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কাজী সায়েমুজ্জামানের নেতৃত্বে নৌকা থেকে হ্যান্ডমাইকের মাধ্যমে দুই পাড়ের অধিবাসীদের নদে ময়লা-আবর্জনা না ফেলা এবং সরাসরি স্যুয়ারেজ লাইন ও সেফটি ট্যাংকি স্থাপন না করার নির্দেশনা দেয়া হয় । প্রাথমিক এ সতর্কবার্তা অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে পরিবেশ আইনে মামলা করা হবে বলে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ঘোষণা দেন। অথচ নদী দূষণ মুক্ত কমিটির ভৈরব দূষণ মুক্ত রাখার এ ঘোষনা এক বছরেও কার্যকর হয়নি। বরং ভৈরবের দড়াটানা ব্রিজের পূর্ব পাশের অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের স্যুয়ারেজ লাইন সংযুক্ত রয়েছে ভৈরবে। ঢাকা ব্রিজের উপর দাড়ালে সেই লাইন গুলো দেখা যাচ্ছে।

নদী দূষণ মুক্ত কমিটির সদস্য এসএম তৌহিদুর রহমান বলেন, ভৈরব দুষণ মুক্ত রাখার আহবায়ক তৎকালীন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কাজী সায়েমুজ্জামানের নেতৃত্বে অভিযান পরিচালনা করে সতর্ক করে দেয়া হয় ক্লিনিক ও প্রতিষ্ঠান মালিকদের। এ কমিটি শুধু সুপারিশ করে, বাস্তবায়ন করবে পরিবেশ অধিদফতর। কিন্তু তিনি বদলি হয়ে যাওয়ায় কার্যক্রমটা আপাতত হচ্ছে না বললেই চলে।

ভৈরবের দড়াটানা ব্রিজের পূর্ব পাশের অনেক প্রতিষ্ঠান ও বাড়ির স্যুয়ারেজ লাইন ভৈরবের সাথে সংযুক্ত রয়েছে বলে স্বীকার করেছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডে নির্বাহী প্রকৌশলী তাওহীদুর ইসলাম। তিনি বলেন, যেসব প্রতিষ্ঠানের স্যুয়ারেজ লাইন ভৈরবে সংযুক্ত আছে। তাদের বিরুদ্ধে জরিমানা করা হয়। তবে এডিএম বদাল হয়ে যাওয়ায় সেই কার্যক্রম আপাতত পরিচালনা হচ্ছে না। খুব শীঘ্রই এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে।

এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খান বলেন, যেসব প্রতিষ্ঠানের স্যুয়ারেজ লাইন ভৈরবে সংযুক্ত আছে সেসকল প্রতিষ্ঠানের মালিকের বিরুদ্ধে পর্যায়ক্রমে মামলা হবে।