মিথ্যা তথ্য দিয়ে জখমি সনদ দেয়ায় ডাক্তারসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা

এখন সময়: শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল , ২০২৪, ০৬:০৭:১৮ এম

নিজস্ব প্রতিবেদক: মিথ্যা তথ্য দিয়ে জখমি সনদ দেয়ায় দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনে ডাক্তার মুরসালিনুর রহমানসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে যশোর আদালতে মামলা হয়েছে। মঙ্গলবার ঝিকরগাছার রাজাপুর গ্রামের মৃত আব্দুল সামাদের ছেলে মিলন মাহমুদ বাদী হয়ে এ মামলা করেছেন। বুধবার সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক মো. কবির উদ্দিন প্রামানিক অভিযোগটি গ্রহণ করে গত ৮ জানুয়ারি দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত যশোর কার্যালয় বাদীর দেয়া অভিযোগের কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে কিনা মর্মে প্রতিবেদন আকারে জমা দেয়ার আদেশ দিয়েছেন দুদক উপ পরিচালককে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাদীর আইনজীবী কাজী ফরিদুল ইসলাম।

আসামিরা হলো, যশোর ২৫০ শয্যা জেনালের হাসপাতালের ইএমও মেডিকেল অফিসার মুরসালিনুর রহমান, ঝিকরগাছার রাজাপুর গ্রামের মৃত কেনায়েত আলীর ছেলে রফিক, মৃত নুর ইসলামের ছেলে সেলিম রেজা, নওশের আলীর ছেলে লাবু, মৃত ওয়াজেদ সরদারের ছেলে নুর ইসলাম ফকির, মৃত জালাল সরদারের ছেলে মুনতাজ, সাইফুল ইসলাম লেদার ছেলে মিঠু ও মোহিনী কাটি গ্রামের আকছেদ আলীর ছেলে কবির হোসেন।

মামলার অভিযোগে জানা গেছে, ২০২১ সালের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে মিলন মাহমুদের ভাই জাকির হোসেন পিপুল চেয়ারম্যান প্রার্থী ছিলেন। নির্বাচনী প্রচারের উদ্দেশ্যে মিলন মাহমুদ ৩০/৩৫ জনকে সাথে নিয়ে ২৮ অক্টোবর সন্ধ্যায় ইউনিয়নের বেজিয়াতলা মালোপাড়া মোড়ে পৌঁছান। এ সময় রফিক, সেলিম রেজা, লাবুসহ একদল সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে মাহাবুবুর রহমান বুড়োকে গাছিদা দিয়ে কুপিয়ে হত্যা চেষ্টা চালায়। হামলাকারীরা বুড়োসহ তিনজনকে হত্যার উদ্দ্যেশ্যে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ৭টি কোপ দিয়েছিল। যাতে সেলাই দেয়া হয়েছিল ৪৪টি। গুরুতর জখম বুড়োকে উদ্ধার করে প্রথমে ঝিকরগাছা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পরে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় মিলন মাহমুদ বাদী হয়ে রফিক, সেলিম রেজা, লাবুসহ ১৪ জনের নাম উল্লেখসহ অপরিচিত ১২/১৪ জনকে আসামি করে হত্যা চেষ্টার অভিযোগে ঝিকরগাছা থানায় একটি মামলা করেন। এপর মিলন মাহমুদসহ কয়েকজন আহত বুড়োর জখমী সনদ আনতে যান ইএমও ডাক্তার মুরসালিনুর রহমানের কাছে। চিকিৎসক সেদিন তাদের কাছে ১ লাখ টাকা দাবি করেছিল। দাবিকৃত টাকা না দিলে সাধারণ জখমী সনদ দিবে বলেও জানিয়ে দিয়েছিলেন।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মামলার তদন্তকালে মেডিকেল সার্টিফিকেট তলব করলে ডাক্তার মুরসালিনুর রহমান ২০২২ সালের ১২ জানুয়ারি আহত প্রত্যেকের সাধারণ জখমী সনদ প্রদান করেন। ফলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আহতরা গুরতর জখম হলেও ডাক্তারি সনদের উপর নির্ভর করে সাধারণ ভোতা অস্ত্রের আঘাতের জখম বলে ৩২৩ ধারায় আদালতে চার্জশিট জমা দেন।  হত্যা চেষ্টাকারী রফিক, সেলিম রেজা, লাবুসহ অন্যদের কাছ থেকে ডাক্তার মুরসালিনুর রহমান জখমের প্রকৃত তথ্য গোপন করে হামলাকারীদের কাছ থেকে উৎকোচ গ্রহণ করে মিথ্যা তথ্য দিয়ে সাধারণ জখমী সনদ দিয়েছেন। এ ঘটনায় দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত যশোর কার্যালয়ে অভিযোগ দিয়ে বিচার না পেয়ে তিনি আদালতে এ মামলা করেছেন।