চেয়ারম্যান দাউদকে সন্ত্রাসীদের গডফাদার বললেন মুন্না!

এখন সময়: শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল , ২০২৪, ০৭:৩১:৪৭ পিএম

নিজস্ব প্রতিবেদক: যশোর সদর উপজেলার চুড়ামনকাটি ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান মুন্না সংবাদ সম্মেলনে বর্তমান চেয়ারম্যান দাউদ হোসেনকে সন্ত্রাসীদের ‘গডফাদার’ আখ্যায়িত করেছেন। তিনি জানান, দাউদের নেতৃত্বে গড়ে ওঠা একটি সন্ত্রাসী চক্র ইউনিয়নে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। তাদের পদভারে প্রকম্পিত বিভিন্ন এলাকা। মুন্না জানান, অস্ত্রধারী ওই সন্ত্রাসীরা আওয়ামী লীগ কর্মী আলমগীর ওরফে আলমের মতো করে যে কোনো সময় তাকে খুন করতে পারে। ফলে তিনি ও তার পরিবারের সদস্যরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। এদিকে, চেয়ারম্যান দাউদ হোসেন দাবি করেছেন, নিজের সন্ত্রাসের কলঙ্ক অন্যের ঘাড়ে চাপাতে সংবাদ সম্মেলনে মিথ্যাচার করেছেন মুন্না। ইউনিয়নের মানুষ খুব ভালো করে জানে সন্ত্রাসীদের লালনকর্তা কে।

৩১ জানুয়ারি চুড়ামনকাটি প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে আব্দুল মান্নান মুন্না লিখিত বক্তব্যে বলেন, চেয়ারম্যান দাউদ হোসেনের ভাইপো লিপু ও পৌষ্য ক্যাডার সেলিমসহ ৮/১০ জনের একদল সন্ত্রাসী আমার সামনে চাচাতো ভাই শিক্ষক মোজাম্মেল হককে বিনা কারণে মারপিট করে। এ সময় আমার সাথে থাকা নেতা কর্মীরা প্রতিবাদ করলে তারা পিছু হটে। পরে আরও লোকজন জোটবন্ধ হয়ে ফের আমাদের উপর হামলা চালায়। তখন উভয় গ্রুপের সদস্যরা হাতাহাতিতে লিপ্ত হয়ে পড়লে আমি আমার নেতাকর্মীদের শান্ত করে ফিরিয়ে নিয়ে আসি। এ  ঘটনার জেরে যশোর কোতয়ালি মডেল থানায় পাল্টাপাল্টি  লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়।

সাবেক চেয়ারম্যান মুন্না আরও জানান, বর্তমান চেয়ারম্যান এলাকার সন্ত্রাসীদের নিয়ে প্রকাশ্যে চলাফেরা করেন। তার সাথে থাকা ব্যক্তিদের নামে হত্যাসহ একাধিক করে মামলা রয়েছে। তারা ২৬ জানুয়ারি পর থেকে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা এলাকায় মোটরসাইকেলে মহড়া দিচ্ছে। যে কোনো সময় তারা আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে ওপর হামলা করতে পারে। ফলে তিনি চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।

সাংবাদিক সম্মেলনে সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান মুন্না বলেন, আমি স্কুল জীবন থেকেই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত। আমি কখনো হত্যা বা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের রাজনীতি করিনা। বর্তমান চেয়ারম্যান খুনের রাজনীতিতে বিশ্বাসী বলে তিনি উল্লেখ্য করে বলেন, চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার ৬ মাস পর তার নির্দেশে আমার সমর্থক আওয়ামী লীগ কর্মী আলমগীর ওরফে আলমকে প্রকাশ্যে খুন করে। ওই খুনিদের গডফাদার হলেন চেয়ারম্যান দাউদ হোসেন। তার নির্দেশে কখন না জানি আমাকে খুন করা হয়।

মুন্না বলেন, চেয়ারম্যান দাউদ বর্তমানে জনপ্রিয়তা হারিয়েছেন। অবাক লাগে দাউদ হোসেন নিজে সন্ত্রাসী লালন করে প্রেসবিফিংয়ে সাধারণ মানুষকে সন্ত্রাসী বানানোর পায়তারায় মিথ্যা তথ্য উপস্থাপন করেছেন। যা রীতিমতো হাস্যকর। তিনি বলেন সাংবাদিকরা খোঁজ নিয়ে দেখেন তার ছেলে রক্সিসহ তার ক্যাডারদের নামে কতটা মামলা আছে। 

সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগ নেতা ইসহাক আলী গাজী, সাবেক ইউপি সদস্য এনামুল কবির, মাসুদুর রহমান মাসুদ, মনিরুল ইসলাম, অসিম কুমার দাস, হেদায়েত , প্রমুখ।

এদিকে, চেয়ারম্যান দাউদ হোসেন সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান মুন্নার  পোষ্য ও বহিরাগত সন্ত্রাসীদের ভয়ে নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন বলে গত ৩০ জানুয়ারি প্রেসবিফিং করেন। এর একদিন পরেই সংবাদ সম্মেলন করে চেয়ারম্যান দাউদকে সন্ত্রাসী গডফাদার হিসেবে আখ্যায়িত করলেন সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান মুন্না।

সাবেক চেয়ারম্যান মুন্নার সংবাদ সম্মেলনে প্রকাশ করা তথ্য সঠিক নই দাবি করে চেয়ারম্যান দাউদ হোসেন জানান, সন্ত্রাসীদের গডফাদার  কে তা সাধারণ মানুষ জানে। এখন নিজেকে ভালো মানুষ দাবি করে অন্যকে সন্ত্রাসী গডফাদার বলছে। মুন্নার নেতৃত্বে চুড়ামনকাটিতে একটি সন্ত্রাসী বাহিনী রয়েছে। তাদের কাছে  আছে বিভিন্ন আগ্নেয়াস্ত্র। সন্ত্রাসীদের পাল্লা ভারি করার জন্য ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার বারোবাজার এলাকার একটি সন্ত্রাসী গ্রুপকে ভাড়া করে এলাকায় এনেছে। মুন্নার ক্যাডাররা যে কোনো মুহূর্তে তাকে খুন করতে পারে।