নিজস্ব প্রতিবেদক: কমিউনিটি ক্লিনিকে পিয়ন পদে চাকরি দেয়ার নামে ৪০ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মীর আবু মাউদসহ তিনজনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে। রোববার যশোর সদরের শানতলা গ্রামের নাজির আলীর ছেলে আসিফ হোসাইন মামলাটি করেছেন। সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ইমরান আহম্মেদ সিআইডিকে অভিযোগের তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেয়ার দিয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাদীর আইনজীবী এম সামছুর রহমান।
অপর দুই আসামি হলো, যশোর সদরের ফরিদপুর গ্রামের আলতাফ হোসেনের ছেলে আহসান আহমেদ ও নাটুয়াপাড়া গ্রামের শফিয়ার রহমানের ছেলে সাইফুল ইসলাম।
মামলার অভিযোগে জানা গেছে, যশোর সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মীর আবু মাউদ ও তার সহযোগী আহসান আহমেদ এবং সাইফুল ইসলাম মৌখিকভাবে প্রচার করেন যে, যশোর সদর উপজেলার ১৫টি ইউনিয়নের ৬০টি কমিউনিটি ক্লিনিকে অফিস সহায়ক (পিয়ন) পদে জনবল নিয়োগ হবে। যার নির্ধারিত বেতন হবে ১০ হাজার ৫’শ টাকা। নিয়োগের বিষয়টি জানতে পেরে আসিফ হোসাইনসহ ২০ জন চাকরির আশায় আহসান আহমেদ ও সাইফুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করেন। আহসান ও সাইফুল চাকরি প্রত্যাশীদের প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা ডা. মীর আবু মাউদের সাথে যোগাযোগ করতে বলেন।
আসিফ হোসাইনসহ চাকরি প্রত্যাশী ২০ জন ডা. মীর আবু মাউদের সাথে যোগাযোগ করেন। চাকরি পাইয়ে দিতে মীর আবু মাউদ জন প্রতি আড়াই লাখ টাকা করে চান। ওই টাকা দিলে তিনি নিজেই প্রত্যেককে নিয়োগপত্র দেবেন বলে আশস্ত করেন। একপর্যায়ে চাকরি প্রত্যাশীদের অনুরোধে তিনি আড়াই লাখের পরিবর্তে ২ লাখ টাকা করে নিতে রাজি হন। এরপর ২০২৩ সালের ১০ মে থেকে ১৬ মে পর্যন্ত চাকরি প্রত্যাশী ২০ জন মীর আবু মাউদকে ২ লাখ টাকা করে মোট ৪০ লাখ টাকা দেন।
মীর আবু মাউদ চাকরি প্রত্যাশীদের পারাডাইস নামে একটি প্রতিষ্ঠানের প্যাডে ২০ জনকে বিভিন্ন কমিউনিটি ক্লিনিকে পিওন পদের নিয়োগপত্র দেন। ওই পত্র পাওয়ার পর একই বছরের ১০ জুলাই আসিফ হোসাইন রামনগর ইউনিয়নের রামনগর দক্ষিণ পাড়া কমিউনিটি ক্লিনিকে যোগদান করেন। এ ছাড়া অন্যারা বিভিন্ন কমিউনিটি ক্লিনিকে যোগ দেন। তাদের বেতন দেয়া হতো ডাচ-বাংলা ব্যাংকের মাধ্যমে। কিন্তু তাদের ১০ হাজার ৫’শ টাকা করে বেতন দেয়ার কথা থাকলেও পেতেন ৫ হাজার টাকা করে। কয়েক মাস চাকরির পর তাদের বেতন বন্ধ হয়ে যায়।
ভুক্তভোগীরা মীর আবু মাউদসহ অপর দুই আসামির সাথে যোগাযোগ করলে তারা নানা অজুহাত দেখাতে থাকেন। পারাডাইসের প্রধান কার্যালয়ে যোগাযোগ করলে ওই অফিস থেকে এ ধরনের নিয়োগপত্র দেয়া হয়নি বলে তাদের জানানো হয়।
পরবর্তীতে আসিফ হোসাইনসহ অন্যরা খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, আসামিরা ভুয়া নিয়োগপত্র তৈরি করে চাকরি প্রত্যাশীদের প্রতেককে নিজেরা মাসে ৫ হাজার টাকা করে বেতন দিতেন। এভাবে তাদের ঠকিয়ে তারা ৪০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। বিষয়টি জানজানির পর টাকা ফেরত চাইলে দিতে অস্বীকার করেন। আসামিদের লিগ্যাল নোটিশ দেয়া হলেও টাকা ফেরত না দেয়ায় মামলাটি করা হয়।