যশোরে সড়ক-মহাসড়কে নির্মাণ সামগ্রী রাখলে জরিমানা

মিরাজুল কবীর টিটো: যশোরের সড়ক ও মহাসড়কে নির্মাণ সামগ্রী রাখলে অপসারণ ও জরিমানা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলা প্রশাসন। একই সাথে যশোর শহরের ফুটপাত দখলমুক্তে দোকান উচ্ছেদ করা হবে। মঙ্গলবার জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভায় এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। কালেক্টরেট সভা কক্ষ অমিত্রাক্ষরে এদিন সভাটি অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় বলা হয়, শহরের ফুটপাত দখলমুক্ত ও সড়কের পাশে রাখা নির্মাণ সামগ্রী অপসারণে যশোর পৌরসভাকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। আর জেলার বিভিন্ন মহাসড়কের পাশ থেকে এগুলো অপসারণে ব্যবস্থা নেবে বিআরটিএ। প্রয়োজনে জরিমানা করতে হবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় কিশোর গ্যাংয়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে পুলিশ।

সভায় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা শহিদুল ইসলাম মিলন বলেন, যশোরের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো আছে। মানুষ নির্বিঘ্নে ঈদুল ফিতর ও পহেলা বৈশাখ উদ্যাপন করতে পেরেছে। পুলিশের তৎপরতার কারণে বেশ কিছু দিন কিশোর গ্যাংয়ের দৌরাত্ব কম ছিল। সেটা আবারও বৃদ্ধি পেয়েছে। এ গ্যাংয়ের সদস্যরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।

তিনি বলেন,  রেজিস্ট্রি অফিসে দলিল লেখক সমিতির নামে রেজিস্ট্রি করতে আসা মানুষের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করা হচ্ছে। শহরের মশার উপদ্রব বেড়েছে। এতে ঘরে থাকা দায় হয়ে পড়েছে। মশা নিধনে পৌরসভা কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না।

প্রেসক্লাব যশোরের সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুন বলেন, রেজিস্ট্রি অফিসে ঘুষ নেয়া বন্ধ করতে হবে। রাস্তায় যারা ইট ও বালি রাখছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।

সরকারি মাইকেল মধুসূদন (এমএম কলেজ) কলেজের সহকারী অধ্যাপক শাহাদৎ হোসেন বলেন, শহরের বেজপাড়ায় মোটরসাইকেল চালানোর সময় গত ৬ এপ্রিল তানভীর নামে এক ছাত্র মারা গেছেন। তিনি দ্রুতগতিতে মোটরসাইকেল চালাচ্ছিলেন। স্পিড ব্রেকারের কাছে বালি ফেলে রাখার কারণে দুর্ঘটনাটি হয়।

তিনি বলেন, শহরের শিল্পকলা একাডেমি থেকে এমএম কলেজের আসাদ হল গেট সড়কে কিশোররা অতি দ্রুত গতিতে মোটরসাইকেল চালায়। প্রতিযোগিতা করে মোটরসাইকেল চালানো নিয়ে তারা মারামারিও করে। এটি বন্ধ করা দরকার।

র‌্যাবের মেজর সাকিব বলেন,  পরিবহনে চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। শহরের অনেক ছোট ছোট রেস্টুরেন্টে রাস্তায় গ্যাসের সিলিন্ডার রেখে রান্না করা করে। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া উচিত। যেসব রোডে স্পিড ব্রেকার নির্মাণ হয়েছে সেগুলোর তদারকি দরকার।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম ও অপস) বেলাল হোসাইন বলেন, মানুষ নির্বিঘ্নে ঈদুল ফিতর ও পহেলা বৈশাখ উদ্যাপন করেছেন। রোজার মধ্যে অজ্ঞান পাটির সদস্য আটক হয়েছে। পুলিশ প্রশাসন চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে ছিল। আসন্ন উপজেলা নির্বাচন সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হবে। কোনো ধরণের বিশৃঙ্খলা করতে দেয়া হবে না।

সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবরাউল হাছান মজুমদার বলেন, চালের বস্তায় দাম, উৎপাদনের তারিখ ও প্রতিষ্ঠানের নাম লেখা সিল মারা হচ্ছে। কিশোর গ্যাংকে ছাড় দেয়া হবে না। তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি বলেন, ঈদের কারণে ফুটপাত দখল করে যারা ব্যবসা করছে মানবিক দিক বিচেনায় তাদের উচ্ছেদ করা হয়নি। ফুটপাত থেকে দোকার উচ্ছেদ করা হবে। পৌরসভা এটি করবে। রাস্তায় উপর ইট-বালি রাখলে  প্রয়োজনে জরিমানা করতে হবে।

সভায় আরো বক্তব্য রাখেন পিপি অ্যাডভোকেট ইদ্রিস আলী, আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর জেলা কমাড্যান্ট সনজয় কুমার সাহা, ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক দেওয়ান সোহেল রানা, জেলা দুর্নীতি দমন প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি মিজানুর রহমান প্রমুখ।