বাগেরহাট প্রতিনিধি: বাগেরহাটের কচুয়া উপজেলার আবাদ-ভাটখোলা গ্রামের এক কৃষকের জমি ভূমিদস্যু দখল করে নিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
সরকার পরিবর্তন হওয়ার পরে রাতারাতি তারকাটার বেড়া ও মালিকানার পক্ষে দেয়া সাইনবোর্ড ভেঙে ফেলে দিয়ে দখল নিয়েছেন প্রভাবশালী ভূমিদস্যু হেমায়েত। এরপর তিনি জমির মালিকের জামাতার কাছে চাঁদাও দাবি করেছেন। এর আগেও ২০০১ সালের দিকে একই জমি দখল করেছিলেন। তখন জমির কাগজপত্র যাচাই বাছাই করে হেমায়েতকে জমি থেকে বের করে দিয়েছিলেন ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান। এরপর হেমায়েত আবারও দখল করে নেয়ায় হতাশা প্রকাশ করেছেন জমির মালিক আবাদ এলাকার বাসিন্দা প্রয়াত জীতেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছেলে শ্যামা প্রসাদ বন্দ্যোপাধ্যায়। জমি ফেরত পেতে সরকারের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
শ্যামা প্রসাদ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, পৈত্রিকসূত্রে প্রাপ্তে ৮৭ নম্বর সাংদিয়া মৌজায় ১৮ শতক জমি দীর্ঘদিন ধরে ভোগ দখল করে আসছি। যার বিআরএস ও ডিপি পর্চায়ও মালিক আমরা। বিভিন্ন সময় জমির গাছও বিক্রি করেছি। জমি নিয়ে হেমায়েতদের সাথে মামলা ও রিভিশনে আমরা রায় পেয়েছি। এরপরও আমাদের তারকাটার বেড়া ও সাইনবোর্ড ভেঙ্গে ফেলে তিনি জমি দখল করেছে। জমির গাছপালা কেটেছে।
শ্যামা প্রসাদের জামাতা লব কিশোর সরকার ওরফে লক্ষ্মণ সরকার বলেন, ২০১১ সালে রিভিশন রায়ে জমির মালিকানা আমাদের দেয়াসহ হেমায়েত গংদের জেল ও জরিমানা দুটোই বহাল থাকে। রায়ের কাগজ হাতে আসার পর প্রশাসন ও স্থানীয় সরকার জমির আমাদের জায়গা বুঝিয়ে দেয়। তারপর থেকে ওই জায়গা আমাদের দখলে ছিল। ২০২২ সালে ওই জমিতে তারকাটার বেড়া দেয়া হয়। ৫ আগস্টের পট পরিবর্তনের পরে হেমায়েত আমার বাড়ির সামনে যেয়ে গালিগালাজ করে বলে এবং ১ লাখ টাকা দিতে হবে, আর বাড়ি আসলে কুপিয়ে জখম করা হবে বলে হুমকি দেয়। তখন স্থানীয়দের নিষেধ অমান্য করে তিনি জবরদখল করেছে।
স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘদিন ধরে শ্যামা প্রসাদ বন্দ্যোপাধ্যায় ও তার পরিবার দীর্ঘদিন ধরে এই জমি ভোগ দখল করেছেন। হঠাৎ করে হেমায়েত এই জমি দখল করেছে। তাই এলাকার মানুষ মুখ খুলতে সাহস পান না।
ভূমি জরিপকারী শহিদুল ইসলাম বলেন, স্থানীয়ভাবে এই জমির সীমানা নির্ধারণ ও জমির মালিকানার কাগজপত্র দেখা হয়েছিল। তাতে ওই জমিতে হেমায়েতের কোন শর্ত নেই। জোরপূর্বক ভাবে জমিতে গড়াবেড়া দেয়া যায়। কিন্তু জমির মালিক হওয়া যায় না বলে তিনি দাবি করেন।
মোস্তাফিজুর রহমান নামে এক ব্যক্তি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এই জমিটি শংকর প্রসাদ বন্দ্যোপাধ্যায় ও তার পরিবার ভোগ দখল করতেন। জমি নিয়ে মামলা হলে শ্যামা প্রসাদ বন্দ্যোপাধ্যায় ও তার পরিবারের পক্ষে রায় হয়। তারপর থেকে শ্যামা প্রসাদরা জমি ভোগ দখল করছিলেন। এখন জোরপূর্বক ভাবে হেমায়েত জমি দখল করেছে।