মহসিন মোল্যা, শ্রীপুর (মাগুরা) : শ্রীপুর উপজেলার খামারপাড়ায় ঐতিহ্যবাহী খামারপাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মাঠে স্থায়ী জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়ায় শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। ভোগান্তির শিকার হয়েছেন বিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষার্থীরা। ১৯৬২ সালে এ বিদ্যালয়টি মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে স্বীকৃতি পায়। সে থেকে হাঁটি হাঁটি পায়ে এগিয়ে চলছে বিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম। বিদ্যালয়ের পানি নিষ্কাশনের ড্রেন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় মাঠে স্থায়ী জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। যে কারণে মাঠ ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
রোববার সরেজমিনে দেখা যায়, সামান্য বৃষ্টি হলে জলাবদ্ধতার কবলে পড়েছে মাঠটি। বিদ্যালয়ের মাঠ নিচু হওয়ায় বাজার ও আশপাশের সব পানি বিদ্যালয়ের মাঠে এসে জমা হয়। মাঠে পানি জমে থাকায় শিক্ষার্থীরা অ্যাসেম্বলি করতে পারে না। টিফিন চলাকালীন মাঠে খেলাধুলার কোন সুযোগ নেই। হাটু পানি পেরিয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের যেতে হয় বিদ্যালয়ে। সপ্তাহ খানেক আগে বৃষ্টি থামলেও এখনো মাঠে হাটু পানি জমে রয়েছে। আশেপাশের চলাচলের রাস্তা, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, আশেপাশের বেশ কয়েকটি বসতবাড়ি জলাবদ্ধতায় রয়েছে। দ্রুত পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না করতে পারায় জলাবদ্ধতায় চরম ভোগান্তির সৃষ্টি হচ্ছে। ৬ষ্ঠ শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত ৫শ’ শিক্ষার্থী থাকলে সকল ক্লাস মিলে মাত্র ১শ’ জন শিক্ষার্থী বিদ্যালয়ে উপস্থিত হচ্ছে। যার ফলে লেখাপড়া চরম বিঘ্নিত হচ্ছে। এমনকি চরম স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে শিক্ষার্থীরা।
এ বিষয়ে নবম শ্রেণির অর্পণ কবিরাজ মুগ্ধ ও মারুফ আহম্মেদ, অষ্টম শ্রেণির জুবায়ের বলেন, তাদের হাটু পানি পেরিয়ে বিদ্যালয়ে আসতে হয়। মাঠে অ্যাসেম্বলি ও খেলাধুলা থেকে আমরা বঞ্চিত। দীর্ঘদিন পানি বদ্ধ থাকায় পানিতে নামলে চুলকানি শুরু হয়।
এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মোল্যা আতিয়ার রহমান বলেন, বিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী বসবাসকারী পরিবারগুলো পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ করে দেয়ায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। ময়লা-দুর্গন্ধযুক্ত পানিতে পরিবেশ বিনষ্ট হচ্ছে।
এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল মজিদ মোল্যা বলেন, জলাবদ্ধতা নিরসন ও শিক্ষার পরিবেশ রক্ষায় মাঠ ভরাট ও ড্রেনেজ ব্যবস্থা জরুরি। পানি নিষ্কাশনের জন্য রোববার সকালে স্যালো মেশিন লাগানো হলে স্থানীয়রা বাঁধা দেয়। বিদ্যালয়ের সকল সমস্যা সমাধানে তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
এ বিষয়ে স্থানীয় শ্রীকোল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কুতুবুল্লাহ হোসেন মিয়া কুটি বলেন, সমস্যা সমাধানে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের সাথে আমার কথা হয়েছে। আশা করছি খুব দ্রুতই এ সমস্যার সমাধান হবে।
এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল গণি বলেন, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করা হবে শিগগিরই। সমস্যা সমাধান করে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনা হবে।
এ বিষয়ে শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি রাখী ব্যানার্জী বলেন, এ বিষয়ে একটি লিখিত আবেদন পেয়েছি। খুব দ্রুত এ সমস্যার সমাধানে কাজ করা হবে।