কালিগঞ্জ (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি: মহাষষ্ঠীর মধ্য দিয়ে আগামী ৯ অক্টোবর সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজার মূলপর্ব শুরু হচ্ছে। এর আগে গত ২ অক্টোবর শুভ মহালয়ার মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে পূজার আনুষ্ঠানিকতা। এবছর উপজেলার ১২ ইউনিয়নে ৪৯ মণ্ডপে অনুষ্ঠিত হবে দুর্গাপূজা। আর ১৩ অক্টোবর বিজয়া দশমীতে দেবীর বিসর্জনের মধ্য দিয়ে ইতি ঘটবে শারদীয় দুর্গোৎসবের। আনন্দমুখর পরিবেশে সুষ্ঠুভাবে দুর্গাপূজা সম্পন্নের লক্ষ্যে উপজেলার সব পূজামন্ডপ ঘিরে নেয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ কালিগঞ্জ উপজেলা শাখার সভাপতি অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক সনৎ কুমার গাইন জানান, এ বছর উপজেলার ১২ ইউনিয়নে মোট ৪৯ মণ্ডপে সার্বজনীন দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। গতবছর ৫১ মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়েছিল। বিগত বছরের ন্যায় এবারও সর্বাধিক ৭ মণ্ডপে পূজা হচ্ছে উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নে। এছাড়া কৃষ্ণনগর ইউনিয়নে ২, চাম্পাফুল ইউনিয়নে ৬, দক্ষিণ শ্রীপুর ইউনিয়নে ৩, কুশলিয়া ইউনিয়নে ৭, নলতা ইউনিয়নে ২, তারালী ইউনিয়নে ৪, ভাড়াশিমলা ইউনিয়নে ৩, মথুরেশপুর ইউনিয়নে ৫, ধলবাড়িয়া ইউনিয়নে ৪, রতনপুর ইউনিয়নে ৩ এবং মৌতলা ইউনিয়নে ৩ মণ্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হবে।
তিনি আরও বলেন, সুষ্ঠুভাবে দুর্গোৎসব সম্পন্ন করার লক্ষ্যে ইতোমধ্যে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সভা করে বিভিন্ন উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। সরকারি ভাবে প্রতিটি মণ্ডপের জন্য বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ৫শ’ কেজি চাল। নিরাপত্তার অংশ হিসেবে পূজা মণ্ডপসমূহে সিসি ক্যামেরা স্থাপনসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর নেতৃবৃন্দ শারদীয় দুর্গোৎসব সুন্দর পরিবেশে নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করতে পূজা উদযাপন পরিষদের নেতৃবৃন্দের সাথে মতবিনিময় করে সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ^াস প্রদান করেছেন।
সরেজমিন বিভিন্ন পূজামণ্ডপ ঘুরে দেখা গেছে, প্রায় প্রতিটি মণ্ডপের সামনে গেইট ও মনোরম প্যান্ডেল নির্মাণ করা হয়েছে। প্রতিমার সাজসজ্জাকরণও শেষ পর্যায়ে। এবার নলতা ইউনিয়নের নলতা কালীবাড়ি পূজামণ্ডপে দুর্গাপূজার সর্ববৃহৎ আয়োজন করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ কালিগঞ্জ উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক গ্রামডাক্তার মিলন কুমার ঘোষ জানান, দুর্গাপূজা পাঁচ দিন ধরে অনুষ্ঠিত হয়। মা দুর্গার অর্চনার পাশাপাশি একই মঞ্চে দেবী মা লক্ষী, মা সরস্বতী এবং দেবতা শ্রী গণেশ ও শ্রী কার্তিকেরও পূজা করা হয়। এ সময়টাতে ঢাকের বাদ্য আর শিউলি ফুলের মিষ্টি গন্ধে মাতোয়ারা হয় সনাতন ধর্মাবলম্বী সকল বয়সের মানুষ। দেবী দূর্গা এবার ‘দোলা’ (পাল্কিতে) চড়ে মর্তালোকে আগমণ করবেন এবং ‘ঘোটক’ (ঘোড়ায়) চড়ে ফিরে যাবেন স্বর্গলোকে।