শেখ কাজিম উদ্দিন, বেনাপোল: যশোরের শার্শা উপজেলার কাজীরবেড় গ্রাম থেকে আব্দুল্লাহ (২৬) নামে এক নিখোঁজ ভ্যানচালকের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) সকাল ৬টার দিকে উপজেলার কাজিরবেড় এলাকার একটি পরিত্যক্ত বাড়ির স্টিলের বাক্স থেকে এ মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে তিনজনকে আটক করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
গত ১০ অক্টোবর ঝিকরগাছার বাইশা গ্রামের পরিত্যক্ত ভবন থেকে মাসুদ রানা নামে আরেক ভ্যান চালকের লাশ উদ্ধার করেছিল পুলিশ। চারদিনের ব্যবধানে দুইটি লাশ উদ্ধারের ঘটনায় ভ্যান চালকদের মধ্যে আতংক ছড়িয়ে পড়েছে।
পুলিশ জানায়, নিহত আব্দুল্লাহ শার্শা উপজেলার গাতিপাড়া গ্রামের ইউনুস আলী মোড়লের ছেলে। তিনি পেশায় ব্যাটারিচালিত ভ্যানচালক ছিলেন। গত ১০ অক্টোবর সকাল ১১টার দিকে ভ্যান নিয়ে জীবিকার উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফিরে আসেননি। পরদিন (১১ অক্টোবর) তার পিতা শার্শা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি নম্বর- ৫০৫) করেন।
নিখোঁজের পর থেকে পুলিশ ও জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) যৌথভাবে তদন্ত শুরু করে। তল্লাশি ও তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় ঝিকরগাছা এলাকা থেকে ভিকটিমের ভ্যানটি উদ্ধার করা হয়। পরে সন্দেহভাজন হিসেবে এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী আশানুর রহমান ওরফে আশা (২৮), মুকুল হোসেন (৩৮) এবং সাগর হোসেনকে আটক করা হয়।
আটককৃতদের দেওয়া তথ্যের ওপর ভিত্তি করে মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) সকাল ৬টার দিকে আশানুর রহমানের বাড়ির পাশে মালয়েশিয়া প্রবাসী বাবলু সরদারের পরিত্যক্ত একতলা বাড়ির স্টিলের বাক্স থেকে অর্ধগলিত লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহতের বাবা ইউনুস আলী বলেন, ১০ অক্টোবর সকালে আমার ছেলে ভ্যান নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়। এরপর থেকেই ফোন বন্ধ পাওয়া যাচ্ছিল। ভোরে জানতে পারি, তার মরদেহ পাওয়া গেছে। পরিকল্পিতভাবে আমার ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে।
শার্শা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল আলীম বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করেছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, ভ্যান ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে আব্দুল্লাহকে হত্যা করা হয়েছে। মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। তিনি আরও জানান, এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে এবং আটক তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িত অন্যদেরও শনাক্ত ও গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
এ ঘটনায় নিহতের পরিবারে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। নিহত আব্দুল্লাহর পরিবার ও এলাকাবাসী এই নৃশংস হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।