নিজস্ব প্রতিবেদক : উদীচী, ছায়ানট প্রথম আলো, ডেইলি স্টারসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ‘পরিকল্পিত সন্ত্রাসবাদী’ হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের প্রতিবাদে যশোরে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে সাংস্কৃতিক কর্মীরা। সোমবার বিকালে যশোর শহরের টাউন হল ময়দানে যশোরের সাংস্কৃতিক সংগঠন সমূহের ব্যানারে এই কর্মসূচি পালিত হয়। এতে সংহতি প্রকাশ করে বিভিন্ন প্রগ্রতিশীল রাজনীতিক দল, পেশাজীবী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ অংশনেন। প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য রাখেন জেলা শিল্পকলা একাডেমির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. মাহামুদ হাসান বুলু, গণতান্ত্রিক ঐক্য জোটের পক্ষে জিল্লুর রহমান ভিটু ও ছাত্রনেতা ইমরান হোসেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আনোয়ারুল করীম সোহেল এবং সঞ্চালনা করেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট যশোরের সাধারণ সম্পাদক সানোয়ার আলম খান দুলু।
কর্মসূচি থেকে জুলাই যোদ্ধা ওসমান হাদি, দিপু দাস, আয়েশা আক্তারের হত্যাকারীদের বিচারের দাবি জানানো হয়।
সমবেত কন্ঠে জাতীয় সংগীতের মধ্যে কর্মসূচি শুরু হয়। মুক্তির মন্দির সোপান তলে গণ সংগীতের পর শুরু হয় সমাবেশ। সমাবেশে বক্তারা বলেন, ‘দেশের মবসন্ত্রাসের রামরাজত্ব চলেছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার মব সন্ত্রাস নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ। এমন কি সরকার প্রথম থেকেই এ দেশের মানুষের জানমালের নিরাপত্তা বিধান করতে পারেনি। হাদির মৃত্যুর পর ঘটনা ভিন্নখাতে নিতে এবং নির্বাচন বানচাল করার ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে সারাদেশে নাশকতা শুরু করেছে গণতন্ত্রবিরোধী নব্য ফ্যাসিবাদী শক্তি। দেশ-বিদেশে বিভিন্ন ব্যক্তি ও গোষ্ঠী প্রকাশ্যে ঘোষণা দিয়ে দেশের গণতান্ত্রিক ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানসমূহকে আক্রমণের লক্ষবস্তু হিসেবে ঠিক করে দিচ্ছে। আর সরকারকে দেখা যাচ্ছে নির্বিকার। জুলাই অভ্যুত্থানের পর দেশের এমন বাস্তবতা কোনোভাবেই কাম্য নয়।
সমাবেশে বাম গণতান্ত্রিক জোট যশোর জেলার সমন্বয়ক ও বাংলাদেশের বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের কেন্দ্রীয় নেতা কমরেড জিল্লুর রহমান ভিটু বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন একটি ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। যেখানে মানুষের নিরাপত্তা নেই। ধর্মীয় ফ্যাসিবাদ মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। একাত্তরের পক্ষের প্রগতিশীল সংগঠন এবং গণমাধ্যম হুমকির মুখে পড়েছে। তৌহিদী জনতার নামে একদল মৌলবাদী গোষ্ঠী মবতন্ত্রের মাধ্যমে দেশটি অস্থিতিশীল করে তুলছে। মবতন্ত্র ঠেকাতে ও মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে।
সম্প্রতি ঘটে যাওয়া উদীচী, ছায়ানট, প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার এর মত প্রতিষ্ঠানে হামলা ও ভাঙচুর করা হয়েছে। ধর্ম অবমাননা নামে ময়মনসিংহের ভালুকায় দীপনচন্দ্র দাসের শরীরে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। এসব ঘটনার সুস্থ তদন্ত ও বিচার দাবি করা হয় সমাবেশ থেকে। সমাবেশ শেষে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলে জাতীয় পতাকা হাতে নিয়ে সমাবেশে যোগ দেওয়া বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ অংশনেন। মিছিলটি চিত্রার মোড় দড়াটানা মোড় ঘুরে আবার টাউন হল মাঠে এসে শেষ হয়।