Ad for sale 100 x 870 Position (1)
Position (1)

ভারতীয় নাগরিকের জমি রেজিস্ট্রি : মণিরামপুর সাবরেজিস্ট্রি অফিসে দুদকের অভিযান

এখন সময়: সোমবার, ৭ জুলাই , ২০২৫, ০৬:১৬:০২ এম

নূরুল হক, মণিরামপুর : মণিরামপুরে শৈলন্দ্র নাথ মন্ডল নামে এক ব্যক্তি ৩৫ বছর আগে দেশত্যাগ করে ভারতীয় নাগরিকত্ব লাভ করেন। বাংলাদেশে নিজের কোন জাতীয় পরিচয়পত্র বা ভোটার তালিকায় নেই তার নাম। অথচ ভুয়া কাগজপত্র  তৈরি করে বাংলাদেশে পৈত্রিক সম্পত্তির প্রায় ৮১ শতাংশ জমি অবৈধভাবে বিক্রি করে সমুদয় অর্থ ভারতে পাচার করেছেন। অভিযোগ রয়েছে মোটা অংকের ঘুষের বিনিময়ে মণিরামপুর সাব-রেজিস্ট্রার রিপন মুন্সি ভারতীয় নাগরিক শৈলন্দ্র নাথের তিনটি জমি রেজিস্ট্রি (দলিল) সম্পাদন করেছেন। বিষয়টি জানাজানি হবার পর এলাকায় ব্যাপক তোলপাড়ের সৃষ্টি হয়। ফলে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে দুদকের এনফোর্সমেন্টের সদস্যরা রোববার মণিরামপুর উপজেলা সাব রেজিস্ট্রি অফিসে দিনব্যাপী অভিযান পরিচালনা করে বিভিন্ন নথি পর্যালোচনা করে অভিযোগের সত্যতা পেয়েছেন। আর বিষয়টি নিশ্চিত করেন দুদক যশোরের সহকারী পরিচালক মোশাররফ হোসেন। 

জানাযায়, মণিরামপুর উপজেলার খেদাপাড়া ইউনিয়নের ৫২ নম্বর রঘুনাথপুর গ্রামের মৃত হেমলতা মন্ডলের দুই ছেলে শৈলন্দ্র নাথ মন্ডল ও সুশীল মন্ডল। এর মধ্যে সুশীল মন্ডল বছর দুয়েক আগে মারা যান। বড় ছেলে শৈলন্দ্র নাথ মন্ডল ৩৫ বছর আগে ভারতে চলে যান। তিনি পরিবার নিয়ে বর্তমান ভারতের মধ্যপ্রদেশে বসবাস করছেন। তবে ভারতীয় পাসপোর্ট নিয়ে তিনি মাঝেমধ্যে বাংলাদেশে আসেন পৈত্রিক সম্পত্তি বিক্রির উদ্দেশ্যে। কিন্তু বাংলাদেশে ভোটার তালিকায় তার নাম নেই। নেই নিজের নামে জাতীয় পরিচয়পত্র। যে কারণে দীর্ঘদিনেও সে জমি বিক্রি করতে পারে নাই। তবে অভিযোগ রয়েছে ভূয়া জন্ম সনদ তৈরী করে শৈলন্দ্র নাথ ২০২১ সালের ১৪ মার্চ সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিস থেকে রঘুনাথপুর মৌজার ৮০ দশমিক পঞ্চাশ শতক জমি নিজের নামে নাম পত্তন সম্পন্ন করিয়ে আবারও ভারতে পাড়ি জমান।

পরবর্তিতে চলতি বছরের মে মাসে শৈলন্দ্র নাথ মন্ডল আবারো ভারতীয় পাসপোর্টে দেশে আসেন। ৩১ মে শৈলন্দ্র নাথ মন্ডল শুধুমাত্র জন্মসনদ দিয়েই রঘুনাথপুর মৌজার ৮০ দশমিক ৫০ শতক জমি বিক্রি করেন উপজেলার ইত্যা গ্রামের রাশেদ, রঘুনাথপুরের রবিউল ইসলাম ও নিরঞ্জন মন্ডলের কাছে। অভিযোগ রয়েছে মণিরামপুর সাবরেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) বর্তমান বাঘারপাড়া উপজেলায় কর্মরত রিপন মুন্সিকে মোটা টাকার ঘুষের বিনিময়ে ওই ৮০.৫০ শতাংশ জমি তিনটি দলিল রেজিস্ট্রি সম্পাদন করেন। যার দলিল নম্বর হচ্ছে ৫২৭০, ৫২৭১ এবং ৫২৭২, তারিখ ৩১ মে,২০২২। দলিল তিনটির লেখক (ভ্যান্ডার) নিত্য রঞ্জন ঘোষ জানান, শুধুমাত্র জন্ম সনদ দিয়েই শৈলন্দ্রের বিক্রয় করা জমি রেজিস্ট্রি করা হয়।

এদিকে দলিল সম্পাদনে নিয়ম অনুযায়ী জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকলে বিদেশে অবস্থান করলে পাসপোর্ট (দেশীয়) এবং নানা কারণে এর একটিও না থাকলে জন্ম সনদ দিয়ে জমি বিক্রির কার্যাদি সম্পন্ন করার বিধান রয়েছে। সেক্ষেত্রে অবশ্যই তাকে (জমিদাতা) এদেশের নাগরিক হতে হবে। কিন্তু মণিরামপুরের রঘুনাথপুর মৌজা সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের ভোটার তালিকায় ভারতীয় পাসপোর্টধারী নাগরিক শৈলন্দ্র নাথ মন্ডলের নাম নেই। যেখানে জাতীয় পরিচয় পত্রসহ সব কিছু থাকার পরও জমি রেজিস্ট্রি করতে ভোগান্তির শিকার হতে হয়। অথচ শুধুমাত্র জন্ম সনদ দিয়ে জমি রেজিস্ট্রি করায় নানা প্রশ্নের জন্ম দেয়। বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকায় ব্যাপক তোলপাড়ের সৃষ্টি হয়।

ফলে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে দুদকের এনফোর্সমেন্টের সদস্যরা রোববার মণিরামপুর উপজেলা সাব রেজিস্ট্রি অফিসে অভিযান পরিচালনা করে বিভিন্ন নথিপত্র পর্যালোচনা করে অভিযোগের সত্যতা পান। দুদকের যশোর জেলার সমন্বিত টিমের সদস্য সহকারী পরিচালক মোশাররফ হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সহকারী পরিচালক মাহমুদুল হাসান শুভ্র, উপসহকারী পরিচালক চিরঞ্জীব নিয়োগী ও সাদিয়া সুলতানার সমন্বয়ে গঠিত এনফোর্সমেন্ট টিমের সদস্যরা।

এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন মণিরামপুরে সদ্য যোগদানকৃত সাবরেজিস্ট্রার পারভেজ খান। তিনি টিমের সদস্যদের হাতে সকল নথিপত্র তুলে দেন। অভিযোগের সত্যতা পাবার কথা স্বীকার করে টিমের সদস্য সহকারী পরিচালক মোশাররফ হোসেন জানান, এ ব্যাপারে কমিশনে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।

Ad for sale 100 x 870 Position (2)
Position (2)
Ad for sale 225 x 270 Position (3)
Position (3)
Ad for sale 225 x 270 Position (4)
Position (4)