জামসিদুল হক মুনি, আলমডাঙ্গা (চুয়াডাঙ্গা): চুয়াডাঙ্গা জেলার আলমডাঙ্গা পৌর এলাকায় বৃদ্ধ স্বামী-স্ত্রী হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে ৪ জনকে আটক করেছে পুলিশ। আটকের পর তাদের কাছ থেকে হত্যা কাজে ব্যবহৃত সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। বৃহস্পতিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টার সময় চুয়াডাঙ্গার পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল-মামুন সাংবাদিকদের এক প্রেস বিফিংয়ের মাধ্যমে এ বিষয়টি জানান।
পুলিশ সুপার বলেন, আলমডাঙ্গা পৌর শহরের পুরাতন বাজারে বসত ঘর থেকে গত ২৪ সেপ্টেম্বর সকাল ১১টায় হাত-মুখ বাঁধা অবস্থায় ষাটোর্ধ্ব নজির উদ্দিন ও ফরিদা খাতুন দম্পতির মরদেহ উদ্ধার করা হয়। নজির উদ্দিনকে শৌচাগারের ভেতরে হাত-মুখ বেঁধে শ্বাসরোধ ও গলায় ধারালো অস্ত্রের আঘাতে এবং তার স্ত্রী ফরিদা খাতুনকে শোবার ঘরের মেঝেতে ফেলে গলায় ধারালো অস্ত্রের আঘাতে মৃত্যু নিশ্চিত করে বাড়ির বাইরে থেকে দরজায় তালা দিয়ে পালিয়ে যায় অজ্ঞাতরা।
পুলিশ সুপার আরও বলেন, এ ঘটনার পর ওই দম্পতির মেয়ে ডালিয়া পারভীন শিলা বাদী হয়ে আলমডাঙ্গা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার পর প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার করে হত্যাকান্ডে জড়িত প্রকৃত আসামিদের আটক করে তাদের কাছ থেকে নগদ টাকা, রক্তমাখা জামা কাপড়, মোবাইল ফোনসহ বিভিন্ন ধরনের আলামত উদ্ধার করা হয়।
হত্যাকান্ডের ঘটনায় চুয়াডাঙ্গার পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ্ আল-মামুনের তত্ত্বাবধায়নে এবং সার্বিক দিক-নির্দেশনায় মামলার রহস্য উদ্ঘাটনের জন্য ডিবি ও আলমডাঙ্গা থানা পুলিশের একাধিক টিম একযোগে তদন্ত কার্যক্রম আরম্ভ করে। অবশেষে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল), আনিসুজ্জামান , অফিসার ইনচার্জ গোয়েন্দা শাখা আলমগীর কবীর, চুয়াডাঙ্গাসহ ডিবি ও সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন সেল, চুয়াডাঙ্গার চৌকস টিম এসআই(নি.) সোহেল রানা, এসআই(নি.) মোহাম্মদ শিহাব উদ্দিন, এসআই(নিঃ) মুহিদ হাসান, এএসআই(নিঃ) রজিবুল হক প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার করে, নিরলস প্রচেষ্টায় অভিযান পরিচালনা করে ষাটোর্ধ্ব দম্পত্তি (জোড়া খুন) হত্যা মামলার সাথে জড়িত প্রকৃত আসামিদের গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
আটককৃতরা হলো, চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার আসাননগর মাঝেরপাড়ার বজলুল রহমানের ছেলে শাহাবুল হক (২৪), একই এলাকার শেষ পাড়ার পিন্টু রহমানের ছেলে রাজীব হোসেন (২৫), মাঝের পাড়ার মাসুদ আলীর ছেলে বিদ্যুৎ আলী (২৩) ও স্কুল পাড়ার তাজ উদ্দিনের ছেলে শাকিল হোসেন (২১)।
তদন্তকালে জানা যায়, আসামি শাহাবুল আগে নজির উদ্দিনের ট্রলি চালক ছিল। পূর্ব পরিচিত হওয়ায় সে ঘটনার দিন ২৩ সেপ্টেম্বর নজির উদ্দিনের কাছে বালু কেনার প্রস্তাব দেয়। একই দিন রাত আনুমানিক ৮টার সময় আসামিরা পরস্পর পরামর্শ করে তার বাড়ির সামনে এসে তাকে ডাকতে থাকে। নজির উদ্দিন তার বাড়ির প্রধান ফটক খুলে দিলে তারা সেখানে প্রবেশ করে। এরপর তারা নগদ টাকা পাওয়ার আশায় তাদের অস্ত্রের ভয় দেখায়। তাতে কাজ না হলে তারা ধারালো অস্ত্র দিয়ে ওই দম্পতিকে হত্যা করে।
এদিকে, গতকাল দুপুরে আসামিদের চুয়াডাঙ্গা আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে বলে পুলিশ সুপার জানান।