বাগেরহাটে ঘের দখলের চেষ্টার অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন

এখন সময়: বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ , ২০২৪, ০৪:২৭:৩৫ পিএম

বাগেরহাট প্রতিনিধি: বাগেরহাটে বেড়াতে এসে বন্ধুর ঘের দখল করার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে ইমাম সোহাগ নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। ঘের দখলে নিতে ভাড়াটিয়া লোক দিয়ে ব্যবসায়ীকে মারধরসহ নানাভাবে হয়রানির করে চলছে। বুধবার  দুপুরে বাগেরহাট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে ঘের মালিক এনামুল কবির এসব অভিযোগ করেছেন। এসময় ইমাম সোহাগের মাধ্যমে প্রতারিত আজমিরা বেগম নামের এক ব্যবসায়ী এবং এনামুল কবিরের ভাই নজরুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন। অভিযুক্ত ইমাম সোহাগ বাগেরহাট শহরের দেওয়াল বাটি এলাকার বাসিন্দা। দীর্ঘদিন ধরে সে ঢাকায় বসবাস করেন।

ক্ষতিগ্রস্থ এনামুল কবির অভিযোগ করে বলেন, ২০০৯ সাল থেকে আমি বাগেরহাট সদর উপজেলার রাধাভল্বব এলাকায় ২৫ বিঘা আয়তনের ঘের করি। ২০২০ সালের প্রথম দিকে পূর্ব পরিচিত দেয়ালবাড়ি এলাকার ইমাম সোহাগ একদিন আমার ঘেরে আসেন। নিজেকে সুপ্রিম কোর্টের অতিরিক্ত এ্যাটার্নী জেনারেলের পিএ পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন সময় নানা কথা বলতেন। ঢাকায় থাকলেও, সে মাঝে মাঝে বাগেরহাটে আসত। বাগেরহাটে আসলে সোহাগ আমার ঘেরে যেত। ২০২১ সালের মাঝামাঝি সময় সোহাগ ঘেরের পার্টনার থাকার জন্য প্রস্তাব দেয়। রাজি না হলে, সে বিভিন্ন ধরণের চাপ প্রয়োগ করতে থাকে। এক পর্যায়ে আমার ২৫ বিঘা জমির মধ্য থেকে মাত্র ২ বিঘা জমির মালিকদের ভুল বুঝিয়ে হারির টাকা দেয়। ওই মালিকদের কাছ থেকে একটি লিখিতও নেয় সোহাগ।

এনামুল কবির সংবাদ সম্মেলনে আরও উল্লেখ করেন, চলতি বছরের জানুয়ারি মাস থেকে সে আমার পুরো ঘের দখলের চেষ্টা করে। দখলে যাওয়ার জন্য জোরপূর্বক ঘেরের মাছ ধরে নেয়াসহ লোকদিয়ে আমার উপর হামলাও করিয়েছে। সোহাগের ভাড়াটিয়া মাস্তান কাড়াপাড়া ইউনিয়নের মেজবাহ ও পঞ্চমালা এলাকার জসিমকে দিয়ে আমাকে মারধর করায়। এ ঘটনায় বাগেরহাট মডেল থানায় এবং বাগেরহাট আদালতে একাধিক মামলা দেয়া রয়েছে সোহাগের নামে। এসবের পরও তার হাত থেকে আমি রক্ষা পাইনি। ২০ সেপ্টেম্বর ভাড়াটিয়া মাস্তান দিয়ে সে আমার ঘেরের গই ঘর ভেঙ্গে ফেলে, ঘেরের মাছ ও গই ঘরের মূল্যবান মাছ লুট করে নিয়ে যায়। বর্তমানে তার ভাড়াটিয়া মাস্তানদের ভয়ে আমি ঘেরে যেতে পারছিনা। এই ঘের ছাড়া আমার আয়ের কোন পথ নেই, এই ঘের করতে না পারলে আমার বউ-বাচ্চা নিয়ে না খেয়ে মরতে হবে বলে কান্নায় ভেঙে পড়েন এই ব্যবসায়ী।

সোহাগের প্রতারণার শিকার সংবাদ সম্মেলনে ব্যবসায়ী আজমিরা বেগম বলেন, মায়ের অসুস্থতা, একটি মামলার জামিন ও ভাইয়ের বিয়ের কথা বলে সোহাগ আমার কাছ থেকে অন্তত ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা নিয়েছে। জনি নামের এক গাড়ি চালককে দিয়ে সোহাগ আমার প্রাইভেট কারও চুরি করিয়ে ছিল। পরে থানা পুলিশ চেষ্টা করে আমার গাড়ি উদ্ধার করে দেয়।

আজমিরা আরও বলেন, সুপ্রিম কোর্টে চাকুরির সুবাদে সোহাগ অনেকের সাথেই প্রতারণা করেছে। বাগেরহাটের অন্তত অর্ধশতাধিক মানুষের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। যুবলীগ নেতা আবু তাহেরের কাছ থেকে মামলা সংক্রান্ত বিষয়ে ৮০ হাজার টাকা নিয়েছে। যেকোন মূল্যে আমি সোহাগের কাছ থেকে টাকা ফেরত চাই।  অভিযুক্ত ইমাম সোহাগ সাংবাদিকদের বলেন, নামুল কবির যেসব অভিযোগ করেছে সব মিথ্যা ও বানোয়াট।   সে আমার ঘের দখলের চেষ্টা করছে ।  ঘেরের জমির  বিষয়ে আদালত নিষেধাজ্ঞা  দিয়েছে।