মিরাজুল কবীর টিটো : এসএসসির বাংলা ১ম পত্রের পরীক্ষায় ২য় পত্রের এমসিকিউ প্রশ্ন সরবরাহ করায় নড়াইলের ৩ কেন্দ্র সচিবকে পরীক্ষার দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়ার নির্দেশ নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। দায়িত্বে অবহেলার কারণে তাদের বিরুদ্ধে যশোর শিক্ষা বোর্ড কর্তৃপক্ষকে এমন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এই নির্দেশ আগামী বছরের এসএসসি পরীক্ষার সময় কার্যকর হবে বলে জানিয়েছেন, যশোর বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. আহসান হাবীব।
গত ১৫ সেপ্টেম্বর এসএসসির বাংলা ১ম পত্রের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ওই পরীক্ষায় নড়াইলের তিনটি কেন্দ্রে বাংলা ২য় পত্রের এমসিকিউয়ের প্রশ্ন বিতরণ করা হয়। শিক্ষার্থীরা প্রশ্ন পাওয়ার পর এটি ধরা পড়ে। ওই তিনটি কেন্দ্র হলো, নড়াইলের কালিয়া প্যারী শংকর পাইলট মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়, বাঐসোনা কামশিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও দিঘলিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়। ভুল প্রশ্নপত্র সরবরাহের এই ঘটনায় সারা দেশে তোলপাড় সৃষ্টি হয়।
এরপর যশোর শিক্ষা বোর্ড বাংলা ২য় পত্র পরীক্ষা স্থগিত করে। পরবর্তীতে ৩০ সেপ্টেম্বর পরীক্ষা পুনরায় গ্রহণ করা হয়। এজন্য নতুন করে বিজিপ্রেস থেকে প্রশ্ন ছাপিয়ে আনা হয়। এ ঘটনা তদন্তের জন্য ১৮ সেপ্টেম্বর বোর্ডের বিদ্যালয় পরিদর্শক সহযোগী অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম ও যশোর সরকারি মাইকেল মধুসূদন কলেজের সহযোগী অধ্যাপক এমআর জাকারিয়াকে দায়িত্ব দিয়ে দুই সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন হয়। তাদেরকে সাত কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়। ওই সময়ের মধ্যে তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন জমা দেয়। তাতে ধরা পড়ে ভুল প্রশ্ন প্যাকেট করেছে বিজিপ্রেস। আর প্রশ্ন না দেখে বিতরণ করার জন্য তিন কেন্দ্র সচিবকে দায়ী করে তদন্ত কমিটি। তারা নিজেরা ঠিকভাবে প্রশ্ন না দেখে বিতরণ করায় দায়িত্ব অবহেলার জন্য দোষী প্রমাণীত হন। এ কারণে তাদেরকে কেন্দ্র সচিব থেকে অর্থাৎ পরীক্ষার দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়ার সুপারিশ করে তদন্ত কমিটি।
ওই তিন কেন্দ্র সচিবরা হলেন, নড়াইলের কালিয়া প্যারী শংকর পাইলট মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের কেন্দ্র সচিব তৃপ্তী রানী বৈরাগী, বাঐসোনা কামশিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের কেন্দ্র সচিব অমলেন্দু হিরা ও দিঘলিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের কেন্দ্র সচিব সুভাষ চন্দ্র কুন্ডু।
এ ব্যাপারে বোর্ডের চেয়ারম্যান চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. আহসান হাবীব জানান, এসএসসির বাংলা ১ম পত্র পরীক্ষায় ২য় পত্রের প্রশ্ন বিতরণ করা হয়। কেন্দ্র সচিবরা সঠিকভাবে প্রশ্ন না দেখে বিতরণ করেছেন। প্রশ্ন বিতরণের আগে কেন্দ্র সচিবদের দায়িত্ব হলো প্রশ্নপত্র সঠিকভাবে দেখা। তারা দায়িত্বে অবহেলা করেছেন। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে এটা প্রমাণীত হয়েছে। এছাড়া ভুল প্রশ্ন প্যাকেট করার জন্য বিজি প্রেস সংশ্লিষ্টরাও দায়ী। তদন্ত প্রতিবেদন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী নড়াইলের তিন কেন্দ্র সচিকে পরীক্ষা সংক্রান্ত দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়ার নির্দেশ এসেছে। এটা আগামী বছরের এসএসসি পরীক্ষার সময় কার্যকর করা হবে।