দিনব্যাপী ‘এনবিএফআই মেলা’

যশোরে বিনিয়োগের অনেক সুযোগ আছে : পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী

এখন সময়: শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল , ২০২৪, ১১:৪৭:৩৮ পিএম

নিজস্ব প্রতিবেদক: যশোরে বণিক বার্তা আয়োজিত ‘এনবিএফআই মেলা-যশোরর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম বলেছেন, যশোর দেশের গুরুত্ব¡পূর্ণ অর্থনৈতিক এলাকা। এখানে বিনিয়োগের অনেক সুযোগ আছে। এ জেলার শাক-সবজি, বিভিন্ন ধরনের ফল, ফুল, মিষ্টি ও খেজুরের রস বিখ্যাত। পদ্মাসেতু হওয়ায় অর্থনৈতিক সুযোগ আরও বেড়েছে। অব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো নিয়ে বণিক বার্তার এ আয়োজন মূলত সামাজিক দায়বদ্ধতারই বহিঃপ্রকাশ। ব্যবসা মূলত ঢাকা ও চট্টগ্রামকেন্দ্রিক হয়ে আছে। এতে বৈচিত্র্য আনা দরকার।

বুধবার বণিক বার্তার আয়োজনে যশোর শহরের হোটেল ওরিয়ন ইন্টারন্যাশনালে দিনব্যাপী ‘এনবিএফআই মেলা-যশোরর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। প্রধান অতিথি হিসেবে মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন তিনি।

প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, আর্থিক খাত হলো আমাদের শিরা-উপশিরা। আর এই আর্থিক খাতের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ হলো অব্যাংকিং আর্থিক খাত। জামানতের বাইরে ব্যবসার সম্ভাবতা ও ঐতিহ্য চিন্তা করে অব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো ঋণ দিয়ে থাকে। ব্যাংকিং খাতের সবচেয়ে বড় সমস্যা ঋণখেলাপি। বড় বড় কোম্পানিগুলো ঋণখেলাপি হয়। কিন্ত অব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠানে এ ঝুঁকি কম। এখানে কম সুদে লোন দেয়া হয়। যশোরে বিনিয়োগের অনেক সুযোগ রয়েছে। কৃষি খাতে বিনিয়োগের অপার সুযোগ আছে। এসব কারণে সব ব্যাংকের শাখা এই জেলায় আছে। এসএমই খাতে সবচেয়ে বেশি সেবা দেয় অব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠান। আশা করবো এ জেলায় ব্যাবসায়ীরা বিনিয়োগ বাড়াবে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি ছিলেন যশোর-২ (চৌগাছা-ঝিকরগাছা) আসনের সংসদ সদস্য মেজর জেনারেল (অব.) ডা. নাসির উদ্দিন ও যশোর-৬ (কেশবপুর) আসনের সংসদ সদস্য শাহিন চাকলাদার।

মেজর জেনারেল (অব.) ডা. নাসির উদ্দিন বলেন, যশোর ব্রিটিশ বাংলার প্রথম স্বাধীন জেলা। যশোরকে আমরা আগামীর বিজনেস হাব হিসেবে ধরে রেখেছি। যারা বিনিয়োগ করবেন যশোরকে মাথায় রাখবেন। খুলনা বিভাগের অর্থনীতি যশোরকে ঘিরেই। যশোরের সবজি ও ফল ঢাকার ৭০ ভাগ কাভার করে। ফুলের রাজধানী যশোরে। যশোরে বৈশাখ মাসে ৬-৮ কোটি টাকার ফুলের বিজনেস হয়। ব্যাংকের যে সমস্যা আছে নন ব্যাংকিং এ আসলে সেগুলো অনেকটা কমে যায়। জনগণের জন্য সুদ হার আরও কমিয়ে আনলে দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চল আরও এগিয়ে যাবে। বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। যশোর ছাড়াও অন্যান্য জেলাগুলোতে এ মেলার আয়োজন করলে পুরো দেশ এগিয়ে যাবে।

সংসদ সদস্য শাহিন চাকলাদার বলেন, আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো কি পর্যায়ে ঋণ দেবে, কাদের দেবে সেটা পরিষ্কার করতে হবে। যশোরের মানুষ ঋণ খেলাপি করে না। যশোরের মানুষ ভালো। আতিথেয়তা ও ‘কমিটমেন্ট (প্রতিশ্রুতি) পূরণে বদ্ধ পরিকর। ব্যাংকগুলোতে যখন লোন নিতে যাই তখন জামানত দিতে হয়। নতুবা লোন পাওয়া যায় না। লোনের বিষয়টা পরিস্কার করলে আরও সুবিধা হবে। রাজধানীর পর যশোরে প্রায় সব ব্যাংকের শাখা আছে। এখানের সবজি সারা দেশে যায়। পদ্মা সেতু বা রেলই নয়, রূপসা সেতু, কালনা সেতু এসব যশোরের অহংকার। আমরা তিনঘন্টায় ঢাকা পৌঁছে যাচ্ছি। আগে সবজি পৌঁছাতে অনেক খরচ হতো। এখন দ্রুত পৌঁছে যাই, কম খরচে। বঙ্গবন্ধু যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত করতে চেয়েছেন। সেটা তার কন্যা পূরণ করছেন। আজ বাংলাদেশ উন্নত। খুলনা বিভাগীয় শহর হলেও বিজনেসে লিড দিচ্ছে যশোর।

বণিক বার্তা সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ব্যাংক খুলনা কার্যালয়ের নির্বাহী পরিচালক এসএম হাসান রেজা, লংকাবাংলা ফাইন্যান্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও খাজা শাহরিয়ার, বাংলাদেশ ফাইন্যান্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও কায়সার হামিদ, ডিবিএইচ ফাইন্যান্স পিএলসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও নাসিমুল বাতেন, ইউনাইটেড ফাইন্যান্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ আবুল আহসান, আইডিএলসি ফাইন্যান্সর ডিএমডি সৈয়দ জাভেদ নূর, লংকা অ্যালায়েন্স ফাইন্যান্স লিমিটেডের সিইও কান্তি কুমার সাহা ও যশোরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রফিকুল হাসান।

এদিন সকাল ১০টা থেকে মেলার প্রদর্শনী শুরু হয়। চলে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত। মেলায় প্রধান সহযোগী ছিলো আইডিএলসি ফাইন্যান্স, আইপিডিসি ফাইন্যান্স, লংকাবাংলা ফাইন্যান্স, ইউনাইটেড ফাইন্যান্স ও বাংলাদেশ ফাইন্যান্স। সহযোগী প্রতিষ্ঠান ছিল মাইডাস ফাইন্যান্স লিমিটেড, লংকান অ্যালায়েন্স ফাইন্যান্স, মেরিডিয়ান ফাইন্যান্স ও আইআইডিএফসি।