১৫ বছর ধরে ১০ গ্রামের মানুষের বাঁশের সাঁকোতে যাতায়াত

এখন সময়: বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল , ২০২৪, ১১:০৭:১০ এম

শাহীন আলম তুহিন, মাগুরা  : জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ১৫ বছর ধরে মাগুরার ১০ গ্রামের ৫ হাজার মানুষ বাঁশের সাঁকোতে নিয়মিত যাতায়াত করছেন। এরমধ্যে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুলের প্রায় ২ হাজার শিক্ষার্থীও ঝুঁকি নিয়ে বাঁশের সাঁকো দিয়ে নিয়মিত নদী পারাপার হয়।

সরেজমিন মাগুরা সদরের ভাবনহাটি বাজারে গিয়ে দেখা যায়, বাজার সংলগ্ন এলাকায় রয়েছে একটি নদী; যার নাম ফটকি। নদীর এ পাড়ে সদরের ভাবনহাটি বাজার। অপর পাশে শালিখা উপজেলা। ভাবনহাটি বাজারটি মাগুরা সদরের একটি গুরুত্বপূর্ণ বাজার। এখানে রয়েছে ১টি প্রাইমারি স্কুল, ১টি মাধ্যমিক স্কুল, ১টি পোস্ট অফিস, ১টি ভূমি অফিস, ১টি কৃষি ব্যাংক, ১টি কমিউনিটি ক্লিনিক, নূরানী ও হাফেজি মাদ্রাসা। তাছাড়া জেলার এ বাজার ধান ও পাটের বড় মোকাম হিসেবে পরিচিত। নদীর অপর পাড়ে শালিখা উপজেলার টিকার খালি, ভাটাইল, উজগ্রাম, চুকি নগর, শেওজগাতি, দীর্ঘলগ্রাম, গোবিন্দপুর, তালখড়ি, সাতঘরিয়া ও ধনেশ্বরগাতি। এই ১০ গ্রাামের মানুষ প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে বাঁশের সাঁকো পার হয়ে বিভিন্ন কাজে আসে এ বাজারে।  এ বাজারটি গুরুত্বপূর্ণ হওয়ায় এলাকাবাসী দীর্ঘ দিন ধরে একটি ব্রিজ দাবি জানিয়ে আসছেন।  কিন্তু আজও তাদের দাবি পূরণ না হওয়ায় তারা ক্ষোভ প্রকাশ করছেন।

ভাবনহাটি গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দা রেজাউল শিকদার (৬০) জানান, মাগুরা সদরের ভাবনহাটি বাজারটি একটি গুরুত্ব বাজার। এ বাজারে স্কুল, মাদ্রাসা, ব্যাংক, ভূমি অফিসসহ বিভিন্ন দোকানপাট রয়েছে। তাছাড়া নদীর ওই পাড়ে শালিখা অংশের ১০ গ্রামের মানুষ প্রতিদিন বাঁশের সাঁকো পার হয়ে আসে এ বাজারে । এখানে নদীর ওপরে যদি একটি ব্রিজ থাকতো তাহলে মানুষের যাতায়াতের খুব সুবিধা হতো। দীর্ঘদিন ধরে চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেও  সমাধান হয়নি।

স্থানীয় বাসিন্দা ইসরাইল, আলমগীরসহ আরো অনেকে জানান, পাকিস্তান আমলে তাদের গুরুজনদের কাছে শুনেছেন এ নদীতে এক সময় ছোট ছোট জাহাজ চলতো। ভারত থেকে আসা অনেক জাহাজ এ বাজারে এলাকায় নোঙ্গর করতো। বর্তমানে আমাদের এ বাজারটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ । এখানে সব কিছুই আছে। বিশেষ করে নদীর ওই পাড়ের শালিখা অংশের প্রায় ১০টি গ্রামের প্রায় ২ হাজার শিক্ষার্থী এ বাজার সংলগ্ন প্রাইমারি ও মাধ্যমিক স্কুলে আসে । তারা অনেক কষ্ট করে ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হয়। 

মাগুরা সদরের মঘী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হাসনা হেনা জানান, সদরের ভাবনহাটি বাজারটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বাজার। এখানে সব ধরণের প্রতিষ্ঠান রয়েছে। বাজার সংলগ্ন ফটকি নদীতে রয়েছে বাঁশের একটি সাঁকো। এই সাকো দিয়ে শালিখা অংশের স্কুলের শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষ দীর্ঘদিন যাতায়াত করছে। এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে মাগুরা-১ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট সাইফুজ্জামান শিখরের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ইতোমধ্যে একনেকে সেখানে একটি ব্রিজ নির্মাণের অনুমোদন হয়েছে।

তিনি বলেন, ঢাকা ও খুলনা থেকে প্রকৌশলীরা অনেক আগে এসে এখানে পরিদর্শন করে গিয়েছেন। চলতি বছর নভেম্বর-ডিসেম্বর কাজের টেন্ডার হওয়ার কথা ছিল কিন্তু এখনো হয়নি। সামনে নির্বাচনকে সামনে রেখে সরকার নতুন কোনো প্রকল্প হাতে নেবে না বলে শুনেছি। তবে নির্বাচনের পর সরকার যদি ক্ষমতায় আসে তাহলে আমরা আবার চেষ্টা চালিয়ে যাব কাজটি যথাযথভাবে করতে ।