দুইদিনের পূর্বপশ্চিম আন্তর্জাতিক সাহিত্য উৎসব

যশোরে দেশি-বিদেশি কবি সাহিত্যিকদের মিলনমেলা

এখন সময়: শুক্রবার, ২৯ মার্চ , ২০২৪, ০৭:১১:০১ পিএম

নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশ-বিদেশের কবি সাহিত্যিকদের অংশগ্রহণে যশোরে শুরু হয়েছে দুই দিনের ‘পূর্বপশ্চিম আন্তর্জাতিক সাহিত্য উৎসব’। শুক্রবার সকালে শহরের রামনগরে অবস্থিত আরআরএফ ট্রেনিং সেন্টারে উৎসবের উদ্বোধন করেন দেশবরেণ্য কথাসাহিত্যিক আনোয়ারা সৈয়দ হক। এ সময় তিনি বলেন এই সভা নিখাদ একটি সাহিত্য সভা। এখানে কবি সাহিত্যিকদের  মিলন মেলা। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান অথচ কোনো মন্ত্রী বা রাজনৈতিক নেতা নেই। তারা এখানে থাকলে তাদের জন্যে আমরা টঠস্থ নই। তিনি বলেন এখানে সকলেই সমান।

দেশি-বিদেশি কবিদের এই উৎসবে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলা একাডেমির সাবেক সভাপতি ও মহাপরিচালক এবং কবি ও প্রাবন্ধিক মোহাম্মদ হারুন উর-রশিদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গীতিকবি মোহাম্মদ রফিকউজ্জামান, হোসেন উদ্দিন হোসেন, কবি আসাদ মান্নান ও কবি জাহিদুল হক। পূর্বপশ্চিমের সম্পাদক আশরাফ  জুয়েলের সভাপতিত্বে এই শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন নেপালের সাহিত্যিক ভীশ্মা উপ্রেত। সম্পাদকের বক্তব্য রাখেন ভারতের অমিত গোস্বামী ও ইকবাল রাশেদীন।

স্বাগত বক্তব্য দেন পূর্বপশ্চিমের নির্বাহী সম্পাদক খায়রুল কবীর চঞ্চল। তিনি তার বক্তব্যে জানান, প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই পূর্বপশ্চিম বাংলা ভাষার শিল্প-সাহিত্য বিকাশে বিশেষ ভূমিকা পালন করছে এবং বাংলাদেশ-ভারতে নিয়মিত পত্রিকা প্রকাশ ও সাহিত্য উৎসবের আয়োজন করে যাচ্ছে। এই ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি বাংলা একাডেমির সাবেক সভাপতি ও মহাপরিচালক কবি ও প্রাবন্ধিক মোহাম্মদ হারুন উর-রশিদ বলেন স্বাভাবিক মানুষ কবি হতে পারেনা অথবা কবিরা সাধারণ মানুষ নয়। কারো ভাষায় কবিরা হয় পাগল । আমি মহাপাগল আজ মিলেছি পাগলদের মেলায়। তিনি বলেন কবি হয় ঈশ^রের শিষ্য। চারপাশে থাকে অথচ তাদের দেখতে পায়না। সমাজে কবিদের বড় প্রয়োজন কবিরা মানুষকে সত্যের পথের নির্দেশ দেয়।

উপস্থিত ছিলেন কবি মতিন বৈরাগী, শিশুসাহিত্যিক শ ম শামসুল আলম, কবি ফিরোজ আহমেদ, পূর্বপশ্চিমের ব্যবস্থাপনা সম্পাদক কবি উজ্জ্বল চৌধুরী, কবি সৈয়দ আহসান কবীর, শিশুসাহিত্যিক মিলন রহমান, কবি আরশি গাইন, গল্পকার মামুন আজাদ প্রমুখ।

উদ্বোধনীপর্ব শেষে দ্বিতীয় সেশনে কবিতা পাঠ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মাজেদ নেওয়াজ। স্বরচিত কবিতা পাঠ করেন সানাউল হক, প্রভাত রঞ্জন ভট্টাচার্য, নয়ন বিশ্বাস, নাবিল মান্দার, রকি মাহমুদ, মাহবুবা ফারুক, সৌমিত্র দেব, ইকবাল হোসেন শিকদার, নিজাম মন্ডল, সালাম তাসির, তৃষা চামেলী, শিউলী দাস,  আবু জাহিদ ও অনুপ চন্ডাল।

তৃতীয় সেশন গল্প পাঠ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অধ্যাপক পাভেল চৌধুরী। গল্প পাঠ করেন- মাসুদ আহমদ, ময়নুল হাসান, মামুন আজাদ, মমতাজ উদ্দিন, শ্বাশত নিন ও মিলন রহমান।

অপরাহ্নে চতুর্থ সেশন-কবিতা পাঠ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন দারা মাহমুদ। কবিতা পাঠে অংশ নেন আমিনুল ইসলাম, আরিফুল হক কুমার, ইবাইস আমান, সৈয়দ আহসান কবীর, তাহমিনা শিল্পী, সঞ্জয় গুহ ঠাকুরতা, বাপ্পাদিত্য বন্দ্যোপাধ্যায়, আরশি গাইন, অর্ক দাশগুপ্ত, আশামনি, মনিরুজ্জামান, আলী আজগর রাজা, জাহিদ আক্কাস, টিপু সুলতান ওমাহবুব শাহরিয়ার।

পঞ্চম সেশনে ‘সাহিত্যরাজনীতি বন্ধে লিটল ম্যাগাজিনের ভূমিকা’ শীর্ষক আলোচনায় সভাপতিত্ব করেন অনিকেত শামীম।

আলোচক ছিলেন- পাবলো শাহী, রাজা সহিদুল আসলাম, সিরাজী কবির খোকন, গাজী মো. মাহবুব মুর্শিদ ও মন্দিরা এষ।

সন্ধ্যায় ষষ্ঠ সেশনে বাচিক শিল্পী  মাসুম আজিজুল বাশার, শ্রাবণী সুলতানা, দূর্বাদল বিশ্বাস, জাহিদুল হক যাদু, শাহেদ নওয়াজ, নাজমুন নাহার রিনু, কাজী মামুন, নাজনীন সুলতানা, কাজল ইসলাম আবৃত্তি পরিবেশন করেন।

সন্ধ্যার পর সপ্তম সেশনে ‘ছোটগল্পের ভবিষ্যৎ এবং বিশ্বপাঠকের অবস্থান’ শীর্ষক আলোচনাসভায় সভাপতিত্ব করেন আনোয়ারা সৈয়দ হক।

আলোচক ছিলেন কামরুজ্জামান আজাদ, মুজতবা আহমেদ মুর্শেদ, মঞ্জুর রাজু, রুমা মোদক, সোলায়মান সুমন ও আনিফ রুবেদ।

অষ্টম সেশনে কবিতা পাঠ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পাবলো শাহী। কবিতাপাঠে অংশ নেন প্রভাষ মল্লিক, মোকাম আলী খান, শাহজাহান কবীর, শাহারিয়ার সোহেল, তিয়াসা গুহ ঠাকুরতা, রাজপথিক, সুমন রেজা, সৌমেন্দ্র গোস্বামী, রেজা মন্ডল, কামরুজ্জামান সাদ কামাল শাহ আরিফ রহমান, মানবেন্দ্র সাহা, অনিক মাযহার ও  রাজপথিক।

শেষে সঙ্গীত পরিবেশিত হয়।

আয়োজকরা জানান, এই উৎসবের শেষদিন আজ শনিবার চারজনকে পূর্বপশ্চিম সাহিত্য সম্মাননা ২০২২ এবং তিনজনকে পূর্বপশ্চিম সাহিত্য পুরস্কার ২০২২ প্রদান করা হবে।