শাকিলা ইসলাম জুঁই, সাতক্ষীরা : খেজুরের পাতা, কাশফুল ও খড় দিয়ে তৈরি পণ্যে বিশ্ব জয় করেছেন সাতক্ষীরার নারীরা। জেলার গোপীনাথপুর গ্রামের নারীদের হাতের বুননে সৃজিত খড় ও খেজুরের পাতার নান্দনিক বিভিন্ন পণ্য সামগ্রী রপ্তানি হচ্ছে জার্মানি, ইতালি, স্পেন, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, পেরু, স্পেনসহ আরো অনেক দেশে। এসব পণ্যের মধ্যে রয়েছে-শপিং বাস্কেট, রাউন্ড বাস্কেট, ঢাকনা বাস্কেট, স্কয়ার বাস্কেট, মিনি বাস্কেট, বালতি, সোর্ড, ওয়েস্ট বাস্কেট, ডালি, টেবিলম্যাট ও রাউন্ডম্যাট।
সাতক্ষীরা থেকে বছরে ২৮ থেকে ৩০ কন্টেইনার খড় ও খেজুর পাতার পণ্য বিশে^র বাজারে রপ্তানি হয়। যার আনুমানিক মূল্য ২৫ থেকে ২৬ কোটি টাকা। এতে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের পাশাপশি আর্থিকভাবে সাবলম্বী হয়েছেন গোপীনাথপুরসহ জেলার ৫০০ থেকে ৬০০ পরিবার।
গোপীনাথপুর গ্রামের গৃহবধূ মিনতি রানী সরকার, রিক্তা সরকার, সন্ধ্যা রানী সরকার জানান, তারা দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে গৃহস্থলীর কাজে ব্যবহৃত ও বাসবাড়ির শোভা বর্ধনের জন্য খড় এবং খেজুর পাতার দৃষ্টিনন্দন ১০ থেকে ১৫ রকমের পণ্য তৈরি করেন। এই হস্তশিল্প পণ্য থেকে তাদের প্রত্যেকের ৬ থেকে ৭ হাজার টাকা আয় হয়। রপ্তারিকারক প্রতিষ্ঠান সাতক্ষীরার ‘ঋশিল্পী’ ইন্টারন্যাশনাল কোম্পানির কাছে তারা এসব হস্তশিল্প পণ্য বিক্রি করেন।
সাতক্ষীরা জেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক একেএম শফিউল আযম জানান, গোপীনাথপুর গ্রামের ৫ থেকে ৬ শতাধিক নারী খড় ও খেজুরের পণ্য তৈরি করে সাবলম্বী হয়েছেন। তাদের তৈরি পণ্য এখন বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে।
‘ঋশিল্পী’ ইন্টারন্যাশনালের ম্যানেজিং ডিরেক্টর মুন্সি খায়রুল ইসলাম জানান, তাদের প্রতিষ্ঠান স্থানীয় নারীদের কাছ থেকে খড় ও খেজুর গাছের পাতার তৈরি বিভিন্ন পণ্য সামগ্রী সংগ্রহ করে দুই দশক ধরে বিশ্ব-বাজারে রপ্তানি করে আসছে। বছরে প্রায় ৩০ কন্টেইনার খড় ও খেজুর পাতার পণ্য রপ্তানি করেন তারা। যার আনুমানিক রপ্তানি মূল্য ২৫ থেকে ২৬ কোটি টাকা।
সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোহাম্মাদ হুমায়ুন কবির জানান, এখানকার নারীদের তৈরি খড় ও খেজুর পাতার হস্তশিল্প বিশ্ব বাজারে জায়গা করে নিয়েছে। এই শিল্পের সাথে জড়িত নারীরা জাতীয় অর্থনীতিতে অবদান রাখছেন।