নিজস্ব প্রতিবেদক : যশোর শহরের বকচরে মণিরামপুরের যুবক জসিম উদ্দিন হত্যা মামলার চার্জশিট দিয়েছে পুলিশ। এই চার্জশিটে ৫ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কোতয়ালি থানা পুলিশের এসআই শরীফ আল মামুন আদালতের সংশ্লিষ্ট দফতরে এই চার্জশিট দাখিল করেন।
অভিযুক্তরা হলেন, যশোর শহরের বারান্দী মোল্লাপাড়ার হাবিবুর রহমানের স্ত্রী আনোয়ারা বেগম আনু, রফিকুল ইসলাম ওরফে মিঠু সরদারের ছেলে ইব্রাহিম খলিল, লাল মিয়ার ছেলে নাসির হোসেন, বেজপাড়া আনসার ক্যাম্প এলাকার আশরাফ আলীর ছেলে জাহিদ ওরফে ডুবার ও বেজপাড়া কবরস্থান রোডের আসাদুজ্জামানের ছেলে পোখরাজ আলম ওরফে রাহাত।
উল্লেখ্য, নিহত জসিম মণিরামপুর উপজেলার হাকোবা গ্রামের কুদ্দুস মোড়লের ছেলে ও গোল্ডেন ফিস নামে একটি মাছের আড়তে ম্যানেজার। জসিমের সাথে পরকীয়া সম্পর্ক গড়ে উঠেছিলো যশোর শহরের বারান্দী মোল্লাপাড়ার হাবিবুর রহমানের স্ত্রী ১ সন্তানের জননী আনোয়ারার। মাঝে মধ্যে যশোরে এসে প্রেমিকার বাড়িতে জসিম রাতযাপন করতেন বলেও প্রচার রয়েছে। তাছাড়া তিনি গোপনে প্রেমিকাকে অর্থ ছাড়াও বিভিন্নভাবে সাহায্য করতেন। কিন্তু এক পর্যায়ে এসে আনোয়ারা পরকীয়া সম্পর্ক ছিন্ন করতে মরিয়া হয়ে ওঠে। এ কারণে তিনি বোনের ছেলে ইব্রাহিমের সাথে ৪০ হাজার টাকা চুক্তিতে প্রেমিকা জসিমকে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেয়ার পরিকল্পনা করেন। ২০২৩ সালের ২৬ জুন এজন্য জসিমকে কৌশলে বারান্দী মোল্লাপাড়ার বাড়িতে ডেকে নেন আনোয়ারা। পরে রাতে বন্ধু রিপনের সাথে মোটরসাইকেলে করে বাড়ি ফেরার পথে শহরের বকচরে পৌঁছালে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ওৎ পেতে থাকা সন্ত্রাসীরা জসিমকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করে। এ ঘটনায় নিহতের পিতা কুদ্দুস মোড়ল অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে কোতয়ালি থানায় মামলা করেন।
তদন্ত কর্মকর্তা এসআই শরীফ আল মামুন জানান, বিভিন্ন তথ্যের ভিত্তিতে জসিম হত্যার সাথে জড়িতদের শনাক্ত করেন। এরপর বিভিন্ন সময় আলাদা স্থান থেকে হত্যার সাথে জড়িত ইব্রাহিম খলিল, ডুবার, পোখরাজ ও নাসিরকে তারা আটক এবং হত্যায় ব্যবহৃত ২টি চাকু ও ১টি মোটরসাইকেল উদ্ধার করেন। আটকদের জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার পরিকল্পনাকারী ও অর্থদাতা হিসেবে আনোয়ারার নাম পাওয়া যায়। এছাড়া তদন্তে পাওয়া যায়, পরকীয়া সম্পর্ক ছিন্ন করতে পরিকল্পিতভাবে ডেকে এনে ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসীদের দিয়ে জসিমকে খুন করিয়েছেন নিহতের কথিত প্রেমিকা আনোয়ারা।
কিন্তু তারা এখনো পর্যন্ত আনোয়ারাকে আটক করতে পারেননি। তবে তদন্ত কাজ শেষ হওয়ায় উল্লেখিত ৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতের সংশ্লিষ্ট দফতরে চার্জশিট দাখিল করেছেন ওই পুলিশ কর্মকর্তা।