নিজস্ব প্রতিবেদক: যশোরে যুবককে তুলে নিয়ে মুক্তিপণ দাবি ও না দেয়ায় পায়ে গুলি করার অভিযোগে কোতয়ালি থানার তৎকালীন ওসি শহিদুল ইসলাম, টিএসআই রফিকসহ ১৬ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে। মামলাটি করেছেন ওই যুবকের বাবা শহরের আরএন রোডের বাসিন্দা বাবু শিকদার। অভিযোগ আমলে নিয়ে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট গোলাম কিবরিয়া কোতোয়ালি থানাকে মামলাটি এজাহার হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাদী পক্ষের আইনজীবী তানজিন নূর পূর্বাশা।
অন্য আসামিরা হলো, কোতয়ালি থানার সাবেক ইন্সপেক্টর (তদন্ত) রফিকুল ইসলাম, চাঁচড়া ফাঁড়ির তৎকালীন ইনচার্জ এসআই জামাল উদ্দিন, এসআই মাসুদুর রহমান, মিজানুর রহমান চৌধুরী, এটিএসআই আবু বক্কর সিদ্দিকি, পুলিশ কনস্টেবল খাইরুল ইসলাম, আবু জাফর, জাহিদ, সজীবুল, আব্দুল আলীম, জিন্নাত আলী, তারেক ও সোহাগ।
মামলায় বাদী উল্লেখ করেন, ছেলে সালমান সিকদার ভিকি ব্যবসায়ের কাজে তাকে সাহায্য করতেন। ২০১৪ সালের ১৫ জুন বিকেলে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ছিলেন। এমন সময় এসআই জামাল উদ্দিনের নেতৃত্বে পুলিশের একটি টিম ভিকিতে আটক করে একটি গাড়িতে করে নিয়ে যায়। তাকে চাঁচড়া ফাঁড়িতে যেতে বলে তারা। তিনি দ্রুত ফাঁড়িতে যান। তখন তার সামনেই ভিকিকে ব্যাপক মারপিট করে ক্রস ফায়ারের ভয় দেখান আসামিরা।
এ সময় তার কাছে ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। অন্যথায় ভিকিকে ক্রসফায়ারে হত্যা করা হবে বলে আসামিরা। তিনি হাতে পায়ে ধরে ১০ লাখ টাকা দিতে রাজি হন। একপর্যায়ে তিনি ১০ লাখ টাকা আসামিদের হাতে দেন। এরপর ফের বাকি ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করা হয়। অন্যথায় পুনরায় ভয়ভীতি দেখাতে থাকে।
টাকা না দেয়ায় তার ছেলেকে গাড়িতে উঠিয়ে নিয়ে চলে যায় আসামিরা। এরপর রাত ১০টার দিকে চাঁচড়া কবরস্থানের পাশ থেকে ভিকির গুলিবিদ্ধ দেহ উদ্ধার করেন। পরে ভিকিকে প্রথমে যশোরে ও পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নিয়ে চিকিৎসা করানো হয়। একপর্যায়ে ভিকির বাম পা কেটে বাদ দিতে হয়। এরপর থেকেই ভিকি পঙ্গুত্ব বরণ করেছে। এরপরও ভিকির নামে দুইটি মিথ্যা মামলা দেয়া হয় বলে তিনি এজাহারে উল্লেখ করেন।
এ বিষয়ে তিনি কোতয়ালি থানায় মামলা করতে গেলে তাকে ক্রসফায়ার ও হত্যার হুমকি দেয়া হয়। সরকার পতনের পর পরিস্থিতি অনুকূলে আসায় ঘটনার ১০ বছর পর তিনি আদালতে এ মামলা করেন।