অভয়নগর (যশোর) প্রতিনিধি: সাম্প্রতি দুই দফা টানা বৃষ্টিপাত ও নদ-নদীর পানি ঢুকে পড়ায় যশোরের অভয়নগরে ভবদহ এলাকায় ব্যাপক জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে ৩০ গ্রামের প্রায় ১৩ হাজার মানুষ। গৃহপালিত পশু ও বিষধর সাপের সঙ্গে মানবেতর জীবনযাপন করতে হচ্ছে। পানিবাহিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ছে মানুষ। ভয়াবহ এ পরিস্থিতিতে বাড়িঘর ছেড়ে অনেকে আশ্রয় নেয় আশ্রয়কেন্দ্রে।
মানুষের দুর্ভোগ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে আসছে যশোর জেলা থেকে প্রকাশিত পাঠকপ্রিয় পত্রিকা দৈনিক স্পন্দন। তারই ধারাবাহিকতায় গত শুক্রবার (২৮ সেপ্টেম্বর) পানি নিস্কাশনে উদাসীন কর্তৃপক্ষ, ৭ পাম্প বন্ধ, অভয়নগরে ২৫ গ্রাম পানিবন্দি, আরো ১৫ গ্রাম প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা শিরোনামের একটি সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
এতে সমালচনার ঝড় ওঠে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে। পানি নিষ্কাশনের দাবিতে উপজেলার নওয়াপাড়ায় অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে ক্ষোভ প্রকাশ করেন পানি নিষ্কাশন সংগ্রাম কমিটির নেতারা। এরপর নড়েচড়ে বসে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা। তড়িঘড়ি করে অচল পাম্প সচল করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। মটরে বৈদ্যুতিক সংযোগ দিয়ে গত সোমবার ৩টি, মঙ্গলবারে ২টি, বুধবারে ২টি ও বৃহস্পতিবারে ১টি সর্বমোট ৮টি পাম্প সচল করা হয়।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ভবদহ ২১ ভেন্ট স্লুইস গেটে পানি উন্নয়ন বোর্ডের উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ৪টি পাম্পসহ বিএডিসির ৮টি পাম্প একযোগে চলছে। আমডাঙ্গা খাল ও ভবদহ স্লুইস গেট দিয়ে রেকর্ড পরিমান পানি নিষ্কাশন হচ্ছে বলে জানান কর্মকর্তারা।
উপজেলার চলিশিয়া ইউনিয়নের জলাবদ্ধ এলাকার বাসিন্দা জাহানারা বেগম দৈনিক স্পন্দনকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, আপনাদের তৎপরতায় পানি উন্নয়ন বোর্ড যথাযথ ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হচ্ছে। আমাদের বাড়ির পানি এখন কিছুটা হলেও কমেছে।
উপজেলার সুন্দলী ইউনিয়নের আন্ধা গ্রামের বাসিন্দা রনজিত মল্লিক বলেন, গত কয়েকদিন ধরে পানি কমে যাচ্ছিল কিন্তু আবার বৃষ্টিপাত হওয়ায় বাড়তে শুরু করেছে।
এ ব্যপারে পানি উন্নয়ন বোর্ড যশোরের নির্বাহী প্রকৌশলী পলাশ ব্যানার্জী স্পন্দনকে বলেন, গত সপ্তাহের ৪ দিনে ভবদহে ২১ ভেন্ট স্লুইস গেটে ৮টি পাম্প সচল করা হয়েছে। দ্রুত পানি নিষ্কাশন হচ্ছে। তবে আবার নতুন করে বৃষ্টিপাত হওয়ায় কিছুটা আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব আমরা পানি নিষ্কাশনের চেষ্টা করে যাচ্ছি।