Ad for sale 100 x 870 Position (1)
Position (1)

সিডরের ১৭ বছর : হুমকির মুখে শরণখোলার বেড়িবাঁধ

এখন সময়: বুধবার, ১১ ডিসেম্বর , ২০২৪, ১০:০৯:১১ পিএম

 

আঃ মালেক রেজা, শরণখোলা (বাগেরহাট) : নদী শাসন ব্যবস্থা না থাকায় প্রলয়ংকারী ঘূর্ণিঝড় সিডেরের ১৭ বছরেও শরণখোলাবাসির প্রাণের  কক্সিক্ষত বেড়িবাঁধ এখন হুমকির মুখে। ঘূর্ণিঝড়ে বিধ্বস্ত শরণখোলা উপজেলার সাউথখালীর মরণপুরী খ্যাত গাবতলা ও উত্তর সাউথখালীবাসির দাবি ছিল “মোরা ত্রাণ চাইনা বেড়িবাঁধ চাই”। কিন্তু বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা হলেও তাতে মাটির পরিবর্তে বালির পরিমাণ বেশি দেওয়ায় বেশ কিছু জায়গায় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। তাই ১৭ বছর পরেও মানুষের ধারনা বেড়িবাঁধ তাদের কাছে স্বপ্নই রয়ে যাবে।

২০০৭ সালে ১৫ নভেম্বর ভয়ংকর সিডরের করাল গ্রাসে ২০/২১ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছাসে উপকূলীয় অঞ্চল বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার বলেশ্বর নদের তীরবর্তী পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৩৫/১ পোল্ডারের বেড়িবাঁধ ৯৫ শতাংশ বিলীন হয়ে যায় এবং সহস্রাধিক মানুষের প্রাণহাণি ঘটে। এছাড়া কয়েক হাজার ঘরবাড়ি বিধ্বস্থসহ গবাদিপশু ও হাঁসমুরগী মারা যায়। মানুষের মধ্যে দেখা দেয় চরম দুর্ভোগ। সিডর পরবর্তী সময় সরকার, দাতা সংস্থা ও উন্নয়ন সংস্থা দূর্গত মানুষের পাশে এসে দাঁড়ায়। কিন্তু তাদের ত্রাণের প্রয়োজন থাকলেও এলাকাবাসির সবচেয়ে বড় দাবি ছিল টেকশই বেড়িবাঁধ। পরবর্তীতে ২০১৬ সালের ২৬ জানুয়ারী বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে প্রায় ৪’শ কোটি টাকা বায়ে ৬২ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে বেড়িবাঁধ নির্মাণ করে। আর তাতে চায়না কোম্পিানির সহযোগীতায় উপকূলীয় বাঁধ উন্নয়ণ প্রকল্পের (সিইআইপি-১) আওতায় বেরিবাঁধের নির্মাণ কাজ শুরু করে তা ২০২৪ সালে দায়সারা ভাবে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাছে হস্তান্তর করে।

সিডর দূর্গত সাউথখালী এলাকার বাসিন্দা আব্দুল খালেক হাওলাদার, মোশোরেফ হাওলাদার, বাদল খান ও ইউপি সদস্য জাকির হোসেন খান অভিযোগ করে বলেন, সিডরে আমরা কেউ মা, বাবা, সন্তান ও স্ত্রী হারিয়েছি। কিন্তু সে কষ্ট বুকে থাকলেও কাঙ্খিত বেড়িবাঁধে মাটির পরিবর্তে বালু বেশি ব্যবহার করায় তা এখন হুমকির মুখে পড়েছে। তারা আরও বলেন, ৫ আগস্ট পূর্ববর্তী শাসক গোষ্ঠির কিছু লোকেরা এখান থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়ে মাটির পরিবর্তে বালু ব্যবহার করেছে বেড়িবাঁধে। গত ৬ মাস আগে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় রিমেলের তান্ডবে উপজেলার বগি এলাকা থেকে রায়েন্দা রিভার ভিউ পার্ক পর্যন্ত প্রায় ১৭ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের স্লিপার অর্ধেকের বেশি নদীগর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। অন্য দিকে নদী শাসন ব্যবস্থা নাথাকায় এ বাঁধ শরণখোলাবাসির জন্য হয়তোবা একদিন স্বপ্নের মত হয়ে থাকবে। তাই বেড়িবাঁধ রক্ষার্থে এলাকাবাসির পক্ষ থেকে প্রধান উপদেষ্টাসহ পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার সহযোগিতা কামনা করেছেন।

সাউথখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইমরান হোসেন রাজিব বলেন, টেকশই বেড়িবাঁধ নির্মানের নামে একটি স্বার্থান্বেষী মহল নয়ছয় করে মাটির পরিবর্তে বালু ব্যবহার করায় এবং নদী শাসন ব্যবস্থা না রাখায় উপকূলবাসির কাঙ্খিত বেড়িবাঁধটি এখন হুমকির মুখে।  

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বাগেরহাট জেলার নির্বাহী প্রকৌশলী আবু রায়হান মোঃ আল বিরুনি বলেন, বেরিবাঁধ নির্মাণকালিন সময় নদী শাসন ব্যবস্থা না করায় বেড়িবাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে। তবে গত ৬ মাস আগে থেকে ভাঙন কবলিত গাবতলা এলাকায় জিওব্যাগে বালু ভরে ডাম্পিং করা হয়েছে। তবে তা পর্যাপ্ত নয়। তবে নদী শাসন ব্যবস্থার জন্য জাইকার কাছে একটি প্রকল্প পাঠানো হয়েছে। পাশ হলেই ভাঙ্গা অংশ নির্মাণসহ নদী শাসন ব্যবস্থা করা হবে।

এ ব্যাপারে শরণখোলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুদীপ্ত কুমার সিংহ বলেন, ঘূর্ণিঝড় রিমেল পরবর্তী বেড়িবাঁধের ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে এবং নদী শাসন ব্যবস্থা কার্যকর করার জন্য পানিসম্পদ ও অর্থ মন্ত্রনালয়কে বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে।

Ad for sale 100 x 870 Position (2)
Position (2)
Ad for sale 225 x 270 Position (3)
Position (3)
Ad for sale 225 x 270 Position (4)
Position (4)