# ১ হাজার ২৩২ বিঘা জমিতে আবাদ
# ১ হাজার খরচে আড়াই হাজার আয়
# ৩৫ কোটি টাকা বিক্রির আশা
বিল্লাল হোসেন : সাফল্য আসায় যশোর সদর উপজেলার চুড়ামনকাটি ইউনিয়নে কপির চারার উৎপাদন বাড়ছে। এতে সাফল্যও আসছে কৃষকদের। আব্দুলপুর ও বাগডাঙ্গায় গত মৌসুমে ১ হাজার ২৫ বিঘা জমিতে বাঁধাকপি ও ফুলকপির চারা উৎপাদন হয়েছিল। চলতি মৌসুমে এটি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ২৩২ বিঘায়। এবার মৌসুমে ৩৫ কোটিরও বেশি টাকার চারা বিক্রির আশা করছেন চাষিরা।
এলাকার সবজি চাষিরা জানান, এক যুগ আগে থেকে আব্দুলপুরে বাণিজ্যিক ভাবে বাঁধাকপি ও ফুলকপির চারার আবাদ চলছে। তাদের সফলতা পাশে বাগডাঙ্গা গ্রামের অনেক চাষিও চারা উৎপাদন শুরু করেন। বর্তমানে প্রতি মৌসুমে চারা উৎপাদন বাড়ছে।
আব্দুলপুর গ্রামের আজিম উদ্দিন জানান, তিনি ৭ বছর ধরে কপির চারা উৎপাদন করছেন। এবার ১ বিঘা জমিতে ৮০ বেডে বাঁধাকপির বীজ বপন করেছেন। প্রতি বেডে চারা উৎপাদনে তার খরচ হয়েছে ১ হাজার টাকা। বেড প্রতি আড়াই হাজারের বেশি টাকার বেশি চারা বিক্রি করতে পারবেন। তিনি আরও জানান, গত মৌসুমে প্রতি বেড থেকে আড়াই হাজার টাকার চারা বিক্রি করেছিলেন।
আরেক চাষি গোলাম রসুল জানান, গত মৌসুমে তিন বিঘা জমিতে চারা উৎপাদন করে ৪ লাখের বেশি টাকায় বিক্রি করেন। এবারের মৌসুমে তিন বিঘার একটু বেশি জমিতে চারার আবাদ করেছেন। ফলে বিক্রি ৫ লাখ টাকা ছাড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
বাগডাঙ্গা গ্রামের চাষি আলাউদ্দিন জানান, কপির চারা উৎপাদন করে অনেকে সাফল্য পেয়েছেন। যে কারণে প্রতি মৌসুমে আবাদের পরিমাণ বাড়ছে।
কপির চারা উৎপাদনকারী চাষিরা জানান, গত মৌসুমে ৩০ কোটির বেশি টাকার বেশি কপি চারা বিক্রি করেছিলেন। চলতি মৌসুমে ৩৫ কোটির টাকার চারা বিক্রি করতে পারবেন বলে আশা করছেন।
চুড়ামনকাটি ইউনিয়নের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা জানান, আব্দুলপুর ও বাগডাঙ্গার চাষিরা কপির চারা উৎপাদনে ঝুঁকে পড়েছেন। এবার আষাঢ় মাসের কয়েকদিন বাকি থাকতেই জমিতে বেড দিয়ে বীজতলা প্রস্তুত করে। তারপর বপন করা হয় বাঁধাকপি ও ফুলকপির বীজ। বীজ থেকে চারা গজিয়েছে। আর কয়েকদিন পর এই চারা চাষিদের কাছে বিক্রি করবে। গত বছর ১ হাজার ২৫ বিঘা জমিতে চারা উৎপাদন করা হয়েছিলো। এবার আনুমানিক ১ হাজার ২৩২ বিঘা জমিতে চারার আবাদ করেছেন চাষিরা। আব্দুলপুরে উৎপাদিত কপির চারা প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন এলাকায় পাঠানো হচ্ছে।
এই বিষয়ে যশোর সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রাজিয়া সুলতানা জানান, কয়েকদিন আগে যোগদান করেই ছুটিতে রয়েছি। যে কারণে আব্দুলপুরে কপির চারার আবাদ সম্পর্কে আপাতত কোন তথ্য তার জানা নেই।
গত ১৯ জুন বদলি হওয়া সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ হাসান আলী জানান, চুড়ামনকাটি ইউনিয়নের আব্দুলপুরে বাণিজ্যিকভাবে ফুল কপি ও বাঁধা কপির চারা উৎপাদন হয়। যশোর ছাড়াও খুলনা, সাতক্ষীরা, নড়াইল, মাগুরা, কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ, মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গার জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে চাষিরা এসে কপির চারা কিনে নিয়ে যান। কপির চারা উৎপাদন করে চাষিরা স্বাবলম্বী হচ্ছেন। উৎপাদন খরচের চেয়ে লাভ বেশি হওয়ায় নতুন নতুন চাষি আগ্রহী হচ্ছেন। ফলে ক্রমশ চারা উৎপাদনের পরিমাণ বেড়েছে।