ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: ঝিনাইদহে পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মিরাজুল ইসলাম হত্যা মামলায় চারজনের মৃত্যুদণ্ড ও চারজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ঝিনাইদহের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক মাহাবুব আলম এ রায় ঘোষণা করেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- রাজবাড়ী সদর উপজেলার নিমতলা এলাকার আমজাদ হোসেন, লিয়াকত হোসেন, দক্ষিণ দৌলতদিয়া গ্রামের আক্কাস আলী ও ফরিদপুরের ভাটি লক্ষ্মীপুর গ্রামের আলম শেখ।
যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা হলেন-ফরিদপুরের শোভারামপুর গ্রামের শাহীন, গোয়ালচামট গ্রামের মোহাম্মদ সাগর, টাপাখোলা গ্রামের নুরু খাঁ ও যশোরের শেখহাটি খাঁপাড়া এলাকার মনির হোসেন। তাদের মধ্যে আমজাদ হোসেন ছাড়া সব আসামি পলাতক রয়েছেন।
ঝিনাইদহ আদালত পরিদর্শক মোক্তার হোসেন বলেন, রায়ের পর মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আমজাদ হোসেনকে আদালত থেকে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, এসআই মিরাজুল ইসলাম ঝিনাইদহের ডাকবাংলো পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ছিলেন। ২০১১ সালের ২৩ আগস্ট রাতে জেলা শহরের বাস মালিক সমিতির কার্যালয়ের সামনে একটি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার শিকার হয়। পরে পুলিশ দেখে ঘটনাস্থল থেকে উপস্থিত লোকজন দ্রুত পালিয়ে যান। সে সময় দেখা যায়, দুর্ঘটনার শিকার মোটরসাইকেলটি ডাকবাংলো পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই মিরাজুল ইসলামের।
এদিকে মোটরসাইকেলটি পাওয়া গেলেও আরোহী মিরাজুলের মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। পরে পুলিশ খোঁজ নিয়ে জানতে পারে, ওই দিন সন্ধ্যায় মিরাজুল ইসলাম ইফতার করে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, নিজের নামে ইস্যু করা পিস্তল, গুলি, ম্যাগাজিনসহ মোটরসাইকেলে করে কর্মস্থলে যাচ্ছিলেন। থানা-পুলিশ বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি শুরু করে। একপর্যায়ে পরদিন ২৪ আগস্ট সকালে ভেটেরিনারি কলেজের পূর্ব পাশের ডোবায় পুলিশের ইউনিফর্ম পরা অবস্থায় মিরাজুলের হাত-পা বাঁধা লাশ উদ্ধার করা হয়।
ওই দিন পুলিশ বাদী হয়ে ঝিনাইদহ সদর থানায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে হত্যা মামলা করে। এজাহারে উল্লেখ করা হয়, মিরাজুলের কাছে থাকা পিস্তল, গুলি ও মোটরসাইকেল ছিনতাইয়ের জন্য দুর্বৃত্তরা তাকে হত্যা করে থাকতে পারে। মামলার তদন্ত শেষে পুলিশ ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে ২০১২ সালের ২৮ জানুয়ারি আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। আদালত রায়ে হত্যার দায়ে আটজনকে সাজা দেন। অপর সাত আসামিকে খালাস দেওয়া হয়।