নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রতারণার মাধ্যমে টাকা আত্মসাতের অভিযোগে যশোর-৬ কেশবপুর আসনের সাবেক এমপি ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদারসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। মঙ্গলবার কেশবপুর শহীদ লে. মাসুদ মেমোরিয়াল কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মশিয়ার রহমান বাদী হয়ে এ মামলা করেছেন। সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আঞ্জুমান আরা বেগম অভিযোগের তদন্ত করে পিবিআইকে প্রতিবেদন জমা দেয়ার আদেশ দিয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাদীর আইনজীবী তাহমিদ আকাশ।
অপর আসামিরা হলেন- শাহীন চাকলাদারের পিএস কেশবপুরের শাহপাড়া রোডের আলমগীর সিদ্দিকি টিটো, তার স্ত্রী শামীমা পারভীন রুমা ও মাগুরখালী গ্রামের মৃত সোবহান গাজীর ছেলে রবিউল ইসলাম।
মামলার অভিযোগে জানা গেছে, শাহীন চাকলাদার যশোর ৬ আসনের এমপি থাকাকালীন অন্য আসামিদের সহায়তায় নানা ধরনের অপকর্ম করতেন। নিয়োগ -বদলি বাণিজ্য, এমপিও ভুক্তকরণসহ বিভিন্ন সুবিধা টাকার বিনিময়ে করে দিতেন তারা। মশিয়ার রহমান ওই সময় মাসুদ মেমোরিয়াল কলেজের অধ্যক্ষ ও রেজাকাটি শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ছিলেন। সেই সুবাদে ওই দুই প্রতিষ্ঠানের সুবিধা অসুবিধা নিয়ে আসামিদের সাথে কথা হতো। আসামিরা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে কলেজের স্নাতক ও বিএমপি শাখার এমপিও আদেশ করিয়ে দেয়া এবং কলেজের কৃষি ডিপ্লোমা শিক্ষকদের এমপিও ছাড় করিয়ে দেওয়ার জন্য ৬৪ লাখ ৪৫ হাজার টাকা ও মাধ্যমিক শাখার এমপিও করিয়ে দেওয়ার জন্য আরও ২০ লাখ টাকা দাবি করেন।
অধ্যক্ষ মশিউর রহমান পরে শিক্ষকদের সাথে কথা বলে তাদের প্রস্তাবে রাজি হন শিক্ষকদের কাছ থেকে টাকা সংগ্রহ করেন। ২০২০ সালের ২ অক্টোবর থেকে ২০২১ সালের ৩০ আগস্টের মধ্যে আসামি আলমগীর সিদ্দিকি টিটোর বাড়িতে বসে শাহীন চাকলাদারসহ আসামিদের হাতে কয়েক দফায় ওই টাকা দেওয়া হয়। যা আসামিরা মেশিন দিয়ে গুণে দিয়ে শাহীন চাকলাদার তা গ্রহণ করেন। এরপর ২০২১ ও ২০২২ সালের মধ্যে কাজ করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন আসামিরা। পরবর্তীতে আসামিরা কাজ করে দিতে ব্যর্থ হন। একপর্যায়ে আসামিরা জানিয়ে দেন এ কাজ হবে না।
অধ্যক্ষ মশিউর রহমান মন্ত্রণালয়ে খোঁজখবর নিয়ে জানতে পারেন, ওই চারজন সব টাকা ভাগবাটোয়ারা করে নিয়েছেন। মামলা ও হামলার ভয়ে ঘটনার সময় আসামিদের বিরুদ্ধে কিছু বলা যায়নি।
গত ২০ জুন আসামি টিটো ও তার স্ত্রীর সাথে দেখা করে ওই টাকা ফেরত চাইলে টাকা দিতে অস্বীকার করেন। আওয়ামী লীগ আবার ক্ষমতায় আসছে এই বলে নানা ধরনের ভয়ভীতি দেখান টিটো। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে তিনি আদালতে এ মামলা করেছেন।