নিজস্ব প্রতিবেদক, মণিরামপুর: নাম আসাদ! মণিরামপুর ভূমি অফিসের নৈশ প্রহরী হলেও সাধারণ কৃষকের কাছে আসাদও স্যার। স্যার হিসেবে সম্বোধন না করলে মাইন্ড করেন তিনি। রীতিমত চেয়ার টেবিলে বসেই নাম জারির কাজ থেকে সব কিছু করতে দেখা যায় তাকে। গত বুধবার গালদা গ্রাম থেকে নামজারির কাজে এ অফিসে এসেছিলেন আব্দুর রহমান নামে এক কৃষক। খোঁজখবর করতে করতে জানতে পারেন, ভূমি অফিস ভবনের দ্বিতীয় তলার উত্তর দিকের এক কক্ষে চেয়ার টেবিলে বসা আসাদ স্যারের কাছে তার ফাইল। কাগজ-পত্র দেখা শেষ, এরপর দাবী দুই হাজার টাকা। অবশেষে তাকে টাকা না দেয়ায় সন্ধ্যা পর্যন্ত বসেই অফিস ত্যাগ করেন কৃষক আব্দুর রহমান। পরদিন সকালে যথারীতি রহমান আবারো আসাদ স্যারের দারস্থ হন তিনি। শেষে মেষ ফাইল ছাড়লেও এবার একই অফিসের আলমগীর নামে এক ভদ্রলোকের টেবিলে আটকে আছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেল, আসাদ একজন নৈশ প্রহরী হলেও তিনিও যেন এক কর্মকর্তা বনে গেছেন। ভূমি অফিসের সামনে নাজিম উদ্দীন নামে এক ব্যবসায়ী জানান, ভূমি অফিসে এখন আসাদ ছাড়াও সবাই যেন কর্মকর্তা। টাকা ছাড়া কোন ফাইল এক টেবিল থেকে অন্য টেবিলে যাওয়ার সুযোগ নেই। এমনই অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী অনেকেই। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একটি সরকারি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ক্ষোভ প্রকাশ করে জানালেন, মণিরামপুর ভূমি অফিস যেন দুর্নীতির স্বর্গ রাজ্যে পরিণত হয়েছে। প্রশ্ন দেখা দিয়েছে, একজন সহকারী ভূমি কমিশনারের কার্যালয়ে নৈশ প্রহরী যদি চেয়ার টেবিলে বসে তিনিও কর্মকর্তা বনে যান, সে ক্ষেত্রে সাধারণ জনগণ তাকে স্যার বলতে আপত্তি কিসের? এ ব্যাপারে আসাদের সাথে কথা বললে কোন উত্তর না দিয়েই ফোনটি কেটে দেন। সহকারী কমিশনার মোঃ মাসুদুর রহমানের সাথে এ ব্যাপারে কথা বলার জন্য তার মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও ফোনটি রিসিভিই করেননি তিনি।